Men After 40 of Age

Author Topic: Men After 40 of Age  (Read 1388 times)

Offline Md. Khairul Bashar

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 203
  • Test
    • View Profile
Men After 40 of Age
« on: February 13, 2013, 01:19:48 PM »
বয়স কি বাড়ে, নাকি কমে? শরীর নামক খাঁচার ভেতর মনও আছে, আবার মস্তিষ্কও আছে। ৪০ থেকে চালশে। মধ্যবয়সের শুরু, যদিও গড় আয়ু দেশ-জাতিভেদে বিভিন্ন হতে পারে। পুরুষ হরমোন আছে, এর নাম টেস্টোস্টেরন। এই হরমোনের কারণেই বালক একদিন পুরুষ হয়। বয়স যখন যাপিত জীবনের মাঝামাঝি আসে, সাধারণত ৪০ থেকে শুরু, তখনই খাঁচার ভেতর অচিন পাখি কেমন কেমন করতে শুরু করে। ইংরেজিতে বলে ‘মিডলাইফ ক্রাইসিস’। এটা পুরুষের যেমন হয়, নারীতেও হয়। তবে নারীর হয় মেনোপজ—পঁয়তাল্লিশের পর। সব হরমোনের খেলা।

দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইল না
এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে বিস্তর। আমরা বলি ‘বুড়ো বয়সে ভীমরতি’ ধরেছে। আসলে যৌবন যখন পরিণত হয়, তখন থেকেই বার্ধক্যের যাত্রা শুরু। বিজ্ঞান বলছে, শারীরবৃত্ত ও মনোবিজ্ঞান—সব পুরুষের জীবনেই এই ধাপ আছে, মধ্যবয়সে। একে সমস্যা (ক্রাইসিস) না বলে রূপান্তর (ট্রানজিশন) বলাই শ্রেয়। কোনো কিছুতে মনঃসংযোগে সমস্যা, বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে যাওয়া, অল্পেই রেগে যাওয়া, দুর্বল লাগা, ভেতরে ভেতরে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়া, সাময়িক স্মৃতি হ্রাস, বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের প্রতি অনাগ্রহ, ক্লান্তি অনুভব করা, সবকিছুতেই পরোক্ষ অংশগ্রহণ, পারিপার্শ্বিকতার প্রতি অনুরাগ কমে যাওয়া—এসব লক্ষণ পুরুষের যে বয়সে দেখা দেবে, সেটাই মধ্যবয়স। হতে পারে ৪০, ৪৫ কিংবা ৬০ বছরেও। অনেকেই বিষণ্নতাকে কারণ মনে করতে পারেন। বিষয়টা যেমন মানসিক, ঠিক তেমনি শারীরিকও বটে। মনে হয় যৌবনের রঙে মরচে ধরছে। আমি কি তবে বুড়িয়ে যাচ্ছি? এই অনুভূতি থেকেই বিষণ্নতার জন্ম নিতে পারে। দাম্পত্য জীবনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। কমে যেতে পারে ‘লিবিডো’ বা ‘যৌনস্পৃহা’। ভালোবাসার মানুষটাকেই অসহ্য লাগতে পারে। কিন্তু খেই হারালে তো চলবে না। সোনার খাঁচার দিনগুলিকে হারালে তো চলবে না, নিতে হবে হীরার খাঁচায়।

শরীরের নাম মহাশয়
মানুষ যত পরিণত হয়, তত বেশি ‘মানসিক’ হয়—‘শারীরিক’-এর চেয়ে। তাই আমরা মধ্যবয়সী সমস্যাগুলোকে স্বাভাবিক শারীরবৃত্তির রূপান্তর হিসেবে দেখার ফুরসত পাই না বা হয়ে ওঠে না। ৪০ পেরোলেই কিন্তু ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। রক্তচাপ, কোলেস্টরেল, ডায়াবেটিসের জন্য সুগার—এসব নিয়ে যতটা ভাবি, শরীর নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন নিয়ে কি ভাবি ততটা? ভাবা উচিত, যদি দেখা দেয় ওপরের লক্ষণগুলো, তাহলে শারীরিক রূপান্তরের পর্যায়গুলো মোকাবিলা করতে হয় মানসিকভাবে। তাই শারীরবৃত্ত জানা থাকলে তখন মনের জোর বাড়ে, আর মনের জোর বাড়লে শরীরটাও তখন ঠিকঠাক চলে। প্রোস্টেট শুরু পুরুষেই হয়, আল্ট্রাসনোগ্রাম, চল্লিশের পরে, স্ক্রিনিং চেকআপ।

ভাসিয়ে দিলাম মনপবনের নাও
মধ্যবয়সে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে পারিবারিক বা সংসারজীবনেও পরিবর্তন আসতে পারে। নিজের স্ত্রীর চেয়ে কম বয়সী তরুণীদের প্রতি আকর্ষণটা একটু বেড়ে যেতেই পারে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রীকেও সহযোগিতা করতে হবে। ‘গোপন প্রেম’-এর অপবাদ হিতে বিপরীত ঘটায়; বরং ‘শেয়ারিং আর কেয়ারিং’ ফর্মুলা দিয়ে পরিস্থিতিকে পাল্টানোর ব্যাপারে পারস্পরিক সমঝোতা জরুরি। ছেলেমেয়ে বড় হয়ে গেলে, বৈবাহিক জীবন অনেক বছরের হয়ে গেলে, মধ্যবয়সে নিজেকে অপারঙ্গম মনে হতেই পারে। তরুণ ভার্যা আরাধ্য হতেই পারে। এ জন্য স্খলন চলে; চলবে না। মনঃসংযোগ ঠিক রেখে কিছু কাজ বাড়তি করতে হবে।

অবচেতনের যুদ্ধে জয়ী হতেই হবে
অনেক সময় অবচেতনে যুদ্ধ চলতে থাকে। রাতের বিছানা অসহ্য লাগে। মনে হয়, হেথা নয়, অন্য কোনো খানে। মস্তিষ্কের কর্টেক্স আর লিমবিক সিস্টেমে চলে এই যুদ্ধ। নতুন ও পুরোনোর যুদ্ধ। হূদয় ও মস্তিষ্কের যুদ্ধ। ট্রেন চলছে, নামা দরকার, শিকল টানার উপায় জানা থাকতে হবে। নয়তো ভুগতে হবে বিষণ্নতায়, ব্যক্তিত্ব দৃঢ় না হলে মনোবৈকল্য দেখা দেবে। রূপান্তর মেনে নিন। পরিশ্রম করুন। কায়িক শ্রম বাড়ান, ব্যায়াম করুন। গান শুনুন, পছন্দের কাজ করুন। শারীরিক সমস্যাগুলো জেনে নিয়ে চিকিৎসা নিন। পুরোনোকে নতুন আঙ্গিকে দেখুন। সাইকোথেরাপি কিংবা হরমোন থেরাপি নিন, যদি প্রয়োজন মনে করেন। বন্ধুত্ব বাড়ান। পাল্টে ফেলুন লাইফ স্টাইল, খাবারদাবার ও স্বাস্থ্যঝুঁকিগুলো কমিয়ে ফেলুন। ধূমপান, মদ্যপান ও যৌনতাবর্ধক ওষুধ থেকে বিরত থাকুন—বিশ্বাস করুন—আপনি হবেন শ্রেষ্ঠ সুপুরুষ। মধ্যবয়সের এই রূপান্তরকে সৃষ্টিশীলতায় পরিণত আচরণের মাধ্যমে মোকাবিলা করুন। আপনি তারুণ্যের স্বাদ পাবেন, আবার, বারবার।

চুল পাকলেই হয় না বুড়ো
চুল পেকে যাচ্ছে, ক্ষতি নেই। আগের মতো দৌড়াতে পারেন না, ক্ষতি নেই। সিঁড়ি বেয়ে উঠলে হাঁপিয়ে যান, ক্ষতি নেই। জীবনটাকে ‘রিল্যাক্সলি’ খুব স্বাভাবিকভাবে উপভোগ করুন। আপনি হবেন চিরতরুণ, পারঙ্গম—সব সময়। শুধু পা যেন না পিছলায়। মনের লাগাম ধরে, শরীরটাকে চাবুক মারুন, গাড়ি চলবেই।


Source: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-02-13/news/328779