‘মৃদু ধূমপায়ী নারীদের আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি দ্বিগুণ’
নারীদের মধ্যে যারা মৃদু ধূমপান করেন তাদের আকস্মিক মৃত্যুর আশঙ্কা দ্বিগুণ হয়ে যায় বলে এক গবেষণায় বলা হয়েছে।
প্রতিদিন অন্তত একটি সিগারেট সেবন করে থাকেন এমন নারীরাও এ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন বলে বুধবার জানিয়েছে বিবিসি।
এ গবেষণার অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের ১ লাখ ১ হাজার নার্সকে তিনদশক ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এসময়ের মধ্যে ৩১৫ জন হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
গবেষণায় দেখা যায়, যেসব নারী কখনো ধূমপান করেননি তাদের তুলনায় যারা মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রায় ধূমপান করেন তাদের আকস্মিক হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি দ্বিগুণ।
তবে পর্যবেক্ষণ চলাকালে যারা ধূমপান করা ছেড়ে দিয়েছেন তাদের আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি প্রতিবছর ক্রমান্বয়ে কমতে দেখা যায় বলে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে জানানো হয়।
তবে ৩৫ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সীদের মধ্যে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পারিবারিকভাবে হৃদরোগের ইতিহাস থাকা। অবশ্য গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত এর চেয়ে বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার মূল কারণ হৃদপিণ্ডের ধমনীতে মেদ জমে যাওয়া।
গবেষণা চলাকালে মারা যাওয়া ৩১৫ জন নার্সের মধ্যে ৭৫ জন মৃত্যুর আগেও ধূমপান করতেন। ১৪৮ জন মৃত্যুর আগে কোনো এক সময় ধূমপান ছেড়ে দিয়েছিলেন এবং ১২৮ জন কখনোই ধূমপান করেননি।
প্রতিদিন কমপক্ষে একটি থেকে সর্বোচ্চ ১৪টি সিগারেট সেবনকারী নারী নার্স ছিলেন এ গবেষণার অধীনে।
গবেষণায় দেখা যায় প্রতি পাঁচ বছর ধরে ধূমপানের ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি ৮ শতাংশ হারে বেড়ে যায়। আবার যারা ধূমপান ছেড়ে দেন তাদের আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি পরবর্তী ২০ বছরের মধ্যে কমে অধূমপায়ী নারীদের পর্যায়ে নেমে আসে প্রায়।
প্রধান গবেষক কানাডার অ্যালবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের রুপিন্দর সান্ধু বলেন, নারীদের ধূমপান ত্যাগ করার ফলে আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি শুধু হৃদরোগীদের জন্য কমে না, বরং যে কোনো নারীই ধূমপান ত্যাগ করলে এ উপকারিতা পাবেন।
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ নার্স এলেন ম্যাসন বলেন, এ গবেষণায় ফলাফলে বোঝা গেছে যে সামান্য ধূমপানও ভবিষ্যতে স্বাস্থের জন্য কতো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল ল্যানচেটের পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, ৩০ বছর বয়সের মধ্যে ধূমপান ত্যাগ করা নারীরা তামাকজনিত কোনো রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকেন। ল্যানচেটের গবেষণায় ১২ লাখ নারীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
Source: Internet