Faculty of Humanities and Social Science > Journalism & Mass Communication
Google as Destination
(1/1)
Md. Khairul Bashar:
যাঁরা কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়াশোনা করেন, তাঁদের স্বপ্নের কর্মজীবনের গন্তব্যস্থল থাকে গুগল, ফেসবুক বা মাইক্রোসফট। এসব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে মানুষ শুধু চাকরি বা কাজের জন্যই যায় না, এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান দিয়ে পৃথিবীজুড়ে অসংখ্য উদ্যোগের অনুপ্রেরণা তৈরি করেন। কে না স্বপ্ন দেখেন এমন সব জায়গায় চাকরি করতে? যেখানে কাজের অভিজ্ঞতা পৃথিবী বদলে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে। ২০১২ সালে গুগল ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশের তিন শিক্ষার্থীকে নির্বাচিত করে। এরা হলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০০৭-০৮ ব্যাচের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের (সিএসই) শিক্ষার্থী ইনজাম হোসেন, এ বি এম ফয়সাল ও নাজমুল হাসান।
গুগলে বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা চাকরি করছেন। বুয়েটের সিএসই বিভাগের ০৩ ব্যাচের মানজুরুর রহমান খান, ০৪ ব্যাচের তানাঈম মুসা, ০৫ ব্যাচের শাহরিয়ার রউফ, মুনতাসির মাশুক কাজ করছেন গুগলের বিভিন্ন অফিসে। তাদের দেখেই অনুপ্রাণিত নবীন কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা। আগে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সিভি পাঠিয়ে নিজের খরচায় পরীক্ষা, ভাইভা দিয়ে গুগলের নিয়োগ পেতেন। গত বছরই প্রথমবারের মতো গুগল বাংলাদেশের তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থীকে নিয়ে গুগল ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্ট প্রোগ্রাম আয়োজন করে। এখান থেকে নির্বাচিত ১৫ জনকে পাঠানো হয় ভারতে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য। সেখান থেকেই সবশেষে তিনজনকে বাছাই করে গুগল।
ফয়সাল জানালেন তাদের শুরুর কথা, ‘গত বছরের অক্টোবরে গুগলের ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্টের প্রাথমিক পরীক্ষায় অংশ নিই। ওই মাসেই আমরা ভাইভা দিতে যাই ভারতের বেঙ্গালুরুর গুগল অফিসে।’
গুগলের এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকার বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছিল তাঁদের মৌখিক পরীক্ষা। পরীক্ষা মানেই তো টেনশন, তাই না। কিন্তু গুগলের অফিসে ঢুকে চারপাশের পরিবেশ আর চকোলেট দেখে সবারই মাথা বিগড়ে যায়। টেনশন করার সময়ই ছিল না কারও। সবাই বেশ উপভোগ করে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষা দিয়েই চলে আসেন দেশে। ব্যস্ত হয়ে পড়েন সম্মান শেষ বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে। নভেম্বরের এক বিকেলে সবাই জেনে যান বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মত ক্যাম্পাস রিক্রটমেন্টে তারা তিন জন নির্বাচিত হয়েছেন। ‘গুগলে কাজ করার স্বপ্ন বা উৎসাহ কীভাবে পেলেন?’ এই প্রশ্নের উত্তরে ইনজাম বলেন, ‘বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের অনেক জেষ্ঠ্য শিক্ষার্থীকে দেখেছি গুগলসহ পৃথিবীর বিখ্যাত সব আইটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে। তাদের দেখেই সেসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করার স্বপ্ন জেগেছিল মনে। সেই স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবে পরিণত হলো।’
এখন তিনজনের গন্তব্য একটাই, ক্যালিফোর্নিয়ার গুগল অফিস। আগামী অক্টোবরে সবাই ছুটে যাবেন যুক্তরাষ্ট্রে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে ফয়সাল বলেন, ‘প্রাথমিক লক্ষ্য থাকবে গুগল থেকে কাজ শেখা।’ ইনজাম যোগ করে বলেন, ‘আগে পাঁচ-দশ বছরের অভিজ্ঞতা লাভ করে নিই, তারপরে দেশে ফিরে আইসিটি-নির্ভর উদ্যোগ প্রতিষ্ঠা করতে লেগে যাব।’ অন্যদিকে নাজমুল বলেন, ‘বেশ কয়েক বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরতে চাই।’
সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা বেশ সুনামের সঙ্গে অংশগ্রহণ করছে।আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড, পদার্থবিজ্ঞান অলিম্পিয়াড, ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড, এসিএম আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা তাদের দক্ষতা ও সফলতা দেখিয়ে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হচ্ছে। গুগলসহ পৃথিবীখ্যাত সব আইটি প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সম্ভাবনা সম্পর্কে বুয়েট সিএসই বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক মানের দক্ষতা লাভ করছে। গুগল এ জন্যই তাদের নির্বাচিত করেছে। বাংলাদেশের গ্র্যাজুয়েটরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নানা প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। সে কারণে বিদেশি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে তাদের জন্য দক্ষ কর্মী খুঁজতে আসা শুরু করেছে। ভবিষ্যতে গুগল নিয়মিতভাবেই বাংলাদেশ থেকে তাদের জন্য কর্মী খুঁজতে আসবে বলে আশা করা যায়।
Source: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-03-03/news/333390
Navigation
[0] Message Index
Go to full version