যুদ্ধক্ষেত্রে রোবট-যুগ আনতে এবং রোবট এর ব্যবহারকে আরও কার্যকরী করতে বর্তমানে বিজ্ঞানীরা নানান পদক্ষেপ নিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যাপক হেনরিক ক্রিস্টেনসেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ব্যাক্তিত্ত্ব।
ইনস্টিটিউটের গবেষণাগারে ক্রিস্টেনসেনের রোবটগুলো এখন হন্যে হয়ে জঙ্গি খুঁজে ফিরছে। অদূর ভবিষ্যতেই হয়তো এই রোবটগুলোর উত্তরসূরিরা অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আফগানিস্তানের মতো বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নেমে পড়বে।
অধ্যাপক ক্রিস্টেনসেন ও তাঁর গবেষক দলটি যে প্রকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, সেটিতে অর্থায়ন করছে প্রতিরক্ষাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান বিএই সিস্টেমস। তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, এমন সব মনুষ্যবিহীন যান তৈরি করা যেগুলো শত্রুর অবস্থানের মানচিত্র তৈরি করে দেবে। এর ফলে মানবযোদ্ধারা নিরাপদ দূরত্বে থেকে কোনো ভবনে শত্রুর অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য পেয়ে যাবেন।
এই প্রকল্পে শত্রুর অবস্থান ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ওপরে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে সেখানে বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রবন্ধে সশস্ত্র রোবট-যোদ্ধার সম্ভাব্যতার কথাও বলা হয়েছে। সম্ভাব্য সেই রোবটগুলো পঙ্গপাল বা অন্যান্য পোকামাকড়ের মতো আচরণ করবে। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর উপস্থিতি দেখলেই এগুলো ঝাঁক বেঁধে চলবে। রোবোটিক এই পোকাগুলোর প্রতিটি একটি করে ছোট ওয়্যারহেড বহন করবে এবং শত্রুর ওপর আঘাত হানতে তার গতিশক্তি ব্যবহার করবে।
ওয়াশিংটন ডিসির ব্রুকিংস ইনস্টিটিউটের ভবিষ্যৎ যুদ্ধ বিগ্রহ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ পিটার ডব্লিউ সিঙ্গার বলছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে রোবট-যোদ্ধাদের আগমন বেশ কিছু প্রগাঢ় প্রশ্নকে সামনে এনেছে। যখনই কোনো নতুন প্রযুক্তি হাতে আসে, সেটা ‘খেলা পরিবর্তনকারী’ হিসেবে আবির্ভূত হয়। অতীতে বন্দুক, পরমাণু বোমা, কম্পিউটার ইত্যাদির ক্ষেত্রে সেটা ঘটেছে।
তিনি বলেন, যখন বলা হয় এটা খেলা পরিবর্তনকারী, তার মানে মানুষ ময়দানে যেসব কৌশল ব্যবহার করে তার সবকিছুকেই প্রভাবিত করে। সেটা বাহিনী সংগঠিত করার মতো তত্ত্বগত বিষয় থেকে শুরু করে রাজনীতি, আইন, নৈতিকতার মতো বড় বড় প্রশ্নের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
১৯৯৭ সালে শান্তিতে নোবেল জয়ী আমেরিকান জোডি উইলিয়াম মনে করছেন, এসব স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি একদিন প্রাণঘাতী বাহিনীর দিন শেষ করে দেবে। তাঁর মতে, ‘স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র পদ্ধতি’র মতো মূল্যবোধহীন প্রযুক্তি ব্যবহার অবশ্যই পরিত্যাগ করা উচিত হবে।
[Source-Internet]