Faculty of Humanities and Social Science > Journalism & Mass Communication

Competitive countries may take opportunities!

(1/1)

Md. Khairul Bashar:
প্রথম আলো: সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা কী?
সবুর খান: রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা সব সময়ই খারাপ থাকে। আর এখন যে পরিস্থিতি চলছে, কয় দিন পরপরই হরতাল, বোমাবাজি। বাংলাদেশের মতো উদীয়মান অর্থনীতির একটা দেশের জন্য তা যে কতটা নেতিবাচক, তা আর ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে না। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ ভালো করছে। মনে রাখা দরকার যে বাংলাদেশকে প্রতিযোগী হিসেবে দেখে অনেক দেশ। তারা এখন সুযোগ নেবে। নেতিবাচক প্রচারণা চালাবে। ফলে বাংলাদেশি পণ্য না কেনার ব্যাপারে প্রভাবিত হবে বিদেশি ক্রেতারা। এ তো গেল বাইরের দিক। সবচেয়ে বড় ক্ষতি তো অভ্যন্তরীণ ক্ষতি। কারখানা বন্ধ, যাতায়াত ব্যবস্থা অচল। কাঁচামাল আনা-নেওয়া করা যাচ্ছে না। চিকিৎসার জন্য যাওয়া যাচ্ছে না এমনকি হাসপাতালেও। এত খারাপ অবস্থা আগে কখনো ছিল না।

প্রথম আলো: এ ধরনের পরিস্থিতিতে আগে শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের দিক থেকে উদ্যোগ দেখা যেত। এবার তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না কেন?
সবুর খান: ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন হচ্ছে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। এফবিসিসিআইয়ে সরাসরি রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কিছু ব্যক্তিও রয়েছেন। সেই কারণে তাঁদের পক্ষে কোনো উদ্যোগ নেওয়া কতটা সম্ভব, জানি না। তবে ঢাকা চেম্বারের পক্ষ থেকে আমরা এফবিসিসিআইকে অনুরোধ করেছি। বলেছি, তারা কোনো উদ্যোগ না নিলে ঢাকা চেম্বারই নেবে। মানুষ কষ্ট করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার জোগাড়। বিদেশে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এখন চুপচাপ বসে থাকার সুযোগ নেই। ব্যবসায়ীদের ক্ষতি মানে চূড়ান্ত অর্থে দেশেরই ক্ষতি। আমরা ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসারও আবেদন করেছি।

প্রথম আলো: নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সুযোগ অন্য দেশগুলো নেবে বলছিলেন, কীভাবে?
সবুর খান: বাংলাদেশ যে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভালো করল, এর পেছনে অন্য গল্পও আছে। তৈরি পোশাকে শ্রীলঙ্কার একটা বড় বাজার ছিল। তামিলরা যখন নানা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করল শ্রীলঙ্কায়, ক্রেতারা দিনে দিনে দেশটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল। আর এ সুযোগটি ভালোভাবেই কাজে লাগাল বাংলাদেশ। আমাদের প্রধান রপ্তানি আয়ের এই তৈরি পোশাক খাতকে ধ্বংস করার জন্যও অনেকে রয়েছে। তারা সুযোগ নিতে পারে। ভাবা যায়, কী পরিণতি হবে তখন? এখন যেমন অনেকেই চলে যাচ্ছে মিয়ানমারে। সম্প্রতি ১০০ জনের মতো বিদেশি বিনিয়োগকারী আসার কথা ছিল। এসেছেন মাত্র আটজন। যত দূর জেনেছি, তাঁরা হতাশ। হোটেল থেকেই বের হতে পারছেন না। অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী ছিলেন। ফিরে যাচ্ছেন তাঁরাও।

প্রথম আলো: যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলছিল। তার বিপরীতে দেশজুড়ে সহিংস কর্মকাণ্ড চালিয়ে কি জামায়াত-শিবির ঠিক কাজটি করল?
সবুর খান: অবশ্যই ঠিক কাজ করেনি। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি তো হলোই, অনেক জানমালেরও ক্ষতি হলো। দুর্ভাগ্যজনক যে একদিকে মানুষের মৃত্যু ও অর্থনীতির ক্ষতি, অন্যদিকে অঙ্ক মেলাতে বসে গেছেন অনেকেই। সুযোগসন্ধানীরা অবশ্য তা করবেই। কথা হচ্ছে, আমরা কী করছি। নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিকে পুঁজি করে কার কী উদ্দেশ্য (এজেন্ডা) জানি না। তবে আমরা চাই ঐক্য ও সংহতি। এভাবে চলতে পারে না। সরকারকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে। সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসে সুষ্ঠু সমাধান বের করা সম্ভব। বিদেশিদের কাছে ভুল বার্তা এরই মধ্যে চলে গেছে। তবে ইতিবাচক বার্তাও তৈরি করা সম্ভব। এ জন্য সরকার যেমন সমাধানের উদ্যোগ নেবে, বিরোধী দলকেও তেমনি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। কারণ, দেশটি সরকারি দল ও বিরোধী দল, উভয়েরই।

প্রথম আলো: তার আগে কি দেশপ্রেম থাকতে হবে না?
সবুর খান: অবশ্যই। সবার আগে থাকতে হবে দেশপ্রেম এবং সবারই। ব্যবসায়ীদের তো বটেই। সবচেয়ে বেশি রাজনীতিবিদদের। কারণ, দেশটি পরিচালনা করেন তাঁরা। অনেক সম্ভাবনাময় এ দেশ। গত দুই দশকে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়েছি। তবে যতটা এগিয়েছি, সহিংসতা বন্ধ করতে না পারলে তারচেয়ে বেশি পিছিয়ে যেতেও সময় লাগবে না।


Source: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-03-09/news/334983

Navigation

[0] Message Index

Go to full version