জ্বালানি সাশ্রয়ী সোলার ওয়াটার হিটিং প্রযুক্তি
কয়লা ও খনিজ তেলের অবাধ ব্যবহারের ফলে ২০৫০ সালের পর সারা বিশ্ব মারাত্মক জ্বালানি সঙ্কটে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জ্বালানি আমদানি নির্ভর বাংলাদেশও পড়বে চরম সংকটে। তাই প্রতিনিয়ত পরিবেশ বান্ধব সবুজ জ্বালানির দিকে ঝুকছে বিশ্ব। এ প্রচেষ্টার ফলে উদ্ভাবিত হচ্ছে নতুন নতুন পদ্ধতি ও প্রযুক্তি। এরকমই একটি পদ্ধতি হচ্ছে সোলার ওয়াটার হিটিং বা সৌর তাপে পানি উষ্ণায়ন। এতে সূর্যের তাপ ব্যবহার করে পানি গরম করা হয়। ফলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেল ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না।
পরিবেশবান্ধব এ প্রযুক্তি ব্যবহারে অল্প খরচে বিপুল পরিমাণ পানি গরম করা সম্ভব। বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় এক হাজার লিটার পানি গরম করার জন্য মাত্র এক লাখ ৭৫ হাজার টাকায় এ প্রযুক্তি স্থাপন করা সম্ভব। আর মাত্র তিন থেকে চার বছরের মধ্যেই বিনিয়োগকৃত অর্থের উপযোগিতা পাওয়া সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশের ট্যানারি শিল্পে সোলার ওয়াটার হিটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে বছরে ২.৬ মিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস সাশ্রয় করা সম্ভব যা বর্তমান চাহিদার তিন ভাগের দুই ভাগ। বর্তমানে সারা বিশ্বে শিল্পখাতে ব্যবহৃত গরম পানি উৎপাদনের জন্য ১৭৪ গিগাওয়াট শক্তি খরচ করা হচ্ছে, যার বেশির ভাগ সোলার থার্মাল ব্যবহার করে যোগান দেয়া হয়। বাংলাদেশে ট্যানারি শিল্প ছাড়াও টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যাল, হাসপাতাল, রেস্টুরেন্ট, হোটেল, আবাসনসহ অন্যান্য শিল্পে সোলার ওয়াটার হিটিং প্রযুক্তি প্রয়োগ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এশিয়ায় চিন ইতিমধ্যে নিজেদের শিল্পখাতে ব্যবহৃত গরম পানির ৬৮% এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন করছে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, তুরস্ক, জাপান, সাইপ্রাস, গ্রীস ভারত প্রভৃতি দেশেও এ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।