বাঙ্গালির অতিপ্রিয় ফল আমের পচন রোধে ফরমালিন মেশানো হচ্ছে! গাছে মুকুল আসার পর থেকে পাকা পর্যন্ত বাগানে, আড়তে দফায় দফায় আমে দেয়া হচ্ছে সায়ানাইড, ফরমালিনসহ নানা ধরনের কেমিক্যাল। আমের রাজধানী বলে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাড়াও মেহেরপুর, রাজশাহী, নাটোর ও অন্যান্য জেলায় এই অসাধু কার্যক্রম চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বাগান মালিক, চাষী থেকে শুরু করে স্থানীয় ফল ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে কোথায়, কখন, কিভাবে আমে বিষ মেশানো হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, মধ্যস্বত্বভোগী, অতি মুনাফালোভী, ফড়িয়া, ব্যবসায়ী ও বাগান মালিক এবং আড়তদাররা আমে বিষাক্ত কেমিক্যাল ও ফরমালিন মিশিয়ে বছরের পর বছর বাজারজাত করছে। মূলত তাদের হাতেই দেশের ফল ব্যবসা নিয়ন্ত্রিত হয়। বাজারে ৯৫ ভাগ আমের মধ্যেই বিষাক্ত কেমিক্যাল রয়েছে। তার বাস্তব প্রমাণও মিলছে। প্রায় প্রতিদিনই মোবাইল কোর্ট অভিযানে নেমে টনে টনে কেমিক্যাল যুক্ত আম ধ্বংস করে সংশ্লিষ্টদের জরিমানা করছেন। কিন্তু অজানা কারণে আমে বিষ মেশানো বন্ধ হচ্ছে না।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার কাওরান বাজারে ১০টি আমের আড়তে র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেটের আনোয়ার পাশার নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এসব আড়তে সরাসরি আম আনা হয় বলে দাবি করা হয়। বিশেষজ্ঞরা ৬টি আড়তে মালিকদের উপস্থিতিতে আম পরীক্ষা করে তাতে মাত্রাতিরিক্ত কেমিক্যাল থাকার প্রমাণ পান। এ কারণে প্রত্যেক আড়ত মালিককে দুই লাখ টাকা করে জরিমানা এবং ৪ হাজার টন আম জব্দ করে মোবাইল কোর্ট। পরে সেই আম ধ্বংস করা হয়।
মহাখালীর ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফাও জানান, ‘সায়ানাইড’ দিয়ে আম পাকানো হয়। দীর্ঘদিন রেখে বিক্রির জন্য সে আমে মেশানো হয় ফরমালিন। এই দুটি কেমিক্যালেই মানবদেহে মরণব্যাধি ক্যান্সার হওয়ার আশংকা শতভাগ। দেশে ক্যান্সার রোগ আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে বিষাক্ত আমসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী দায়ী। ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিপুল সংখ্যক রোগী চিকিত্সার জন্য আসেন। তা সামাল দেয়া চিকিত্সকদের পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে বলে তিনি জানান।
- See more at:
http://dhakanews24.com/?p=176421#sthash.OeBNzgME.dpuf