বাংলাদেশের অর্থনীতি নিম্ন আয় পর্যায়ভুক্তি অতিক্রম করে মধ্যম আয়ের দেশগুলোর পর্যায়ভুক্তির দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান।
শনিবার অষ্টম সিটি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, ২০০৮ সালে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ছিল ৬৩০ ডলার। বর্তমানে তা বেড়ে ৯২৩ ডলারে উন্নীত হয়েছে। গ্রামে কর্মসংস্থান ও মজুরি বেড়েছে। দেশের ভেতরে চাহিদা বেড়েছে। স্থানীয় বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন বেড়েছে। তারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে।
“আমাদের অর্থনীতি এখন নিম্ন আয় পর্যায়ভুক্তি অতিক্রম করে মধ্যম আয়ের দেশগুলোর পর্যায়ভুক্তির দোরগোড়ার কাছাকাছি এসে গেছে। এ সত্যটি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের চোখ এড়ায়নি।”
আতিউর রহমান বলেন, স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর এবং মুডি’স রেটিংয়ে পরপর চার বছর ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ইতিবাচক ও স্থিতিশীল মূল্যায়িত হয়েছে।
দেশে ধনী-দরিদ্র্যের বৈষম্য কমেছে এবং উত্তরাঞ্চল থেকে ‘মঙ্গা’ নির্বাসিত হয়েছে বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধান।
গভর্নর বলেন, “বিশ্ব আর্থিক খাত বিপর্যয় ও তারপর থেকে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরাজমান প্রবৃদ্ধি মন্দায় উন্নত বিশ্বের অনেক অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমাদের দেশজ উৎপাদনে প্রকৃত প্রবৃদ্ধির গড় বার্ষিক হার ছয় শতাংশের বেশি মাত্রায় গতিশীল রয়েছে। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির গুণগত মানও যথেষ্ট উন্নত।”
দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে যেসব ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিশেষ অবদান রাখছে তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে তিন ব্যক্তি ও দুই টি প্রতিষ্ঠানকে এবার পুরস্কৃত করা হয়েছে।
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান সিটিগ্রুপের মানবকল্যাণমুখী সংগঠন সিটি ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় সিটি ব্যাংক এনএ এ পুরস্কারের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এই পুরস্কারের জন্য গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্ঠা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
অন্যদর মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিটি এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিফেন বার্ড, সিডিএফের নির্বাহী পরিচালক আবদুল আউয়াল ও সিটি ব্যাংকের কান্ট্রি অফিসার রাশেদ মাকসুদ।
এবার শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন কিশোরগঞ্জের রাবেয়া বেগম। শ্রেষ্ঠ কৃষি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিভাগে টাঙ্গাইলের নাজমা বেগম এবং শ্রেষ্ঠ মহিলা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিভাগে ঝিনাইদহের সাহিদা বেগমকে পুরস্কৃত করা হয়।
এছাড়া শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রংপুরের আরডিএসএস বাংলাদেশ এবং শ্রেষ্ঠ সৃজনশীল ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিভাগে টাঙ্গাইলের সোসাইটি ফর সোস্যাল সার্ভিসকে পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ক্ষুদ্রঋণ খাত এখন দেশের অর্থনীতিতে বড় একটি খাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক উন্নয়নে এ খাত বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। এখানকার ১০ হাজার টাকার একজন ঋণ গ্রহীতা ব্যাংকের বড় গ্রহীতায় পরিণত হচ্ছে।