ড্র ম্যাচেও বহু প্রাপ্তি বাংলাদেশের

Author Topic: ড্র ম্যাচেও বহু প্রাপ্তি বাংলাদেশের  (Read 1070 times)

Offline maruppharm

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1227
  • Test
    • View Profile
৪৫ ওভারে তুলতে হতো ২৫৬। বাংলাদেশ কি একটু চেষ্টা করে দেখতে পারত না! টেস্ট ক্রিকেটের পঞ্চম দিনে ওভারে ছয়ের কাছাকাছি রান তোলার কঠিন পরীক্ষায় বাংলাদেশকে দেখতে চেয়েছিলেন অনেকে। এই সামান্য আক্ষেপটুকু বাদ দিলে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ দল সমর্থকদের মন ভরিয়ে দিয়েছে। অনেক অনেক প্রাপ্তির তালিকায় সবার শেষে যুক্ত হয়েছে সাকিব আল হাসানের ফিফটি। সাকিবের ফিফটির পরেই দুদল ম্যাচের ড্র মেনে নেয়। দিনের খেলাও অবশ্য বাকি ছিল মাত্র চারটি বল।
ফিফটি পেতে পারতেন সাকিবের সবচেয়ে কাছের বন্ধুটিও। কিন্তু ফিফটি থেকে মাত্র চার রান দূরে থাকতে ফিরে গেছেন তামিম ইকবাল। ফিফটি না পেলেও ঘরের মাঠে প্রথম ইনিংসে গোল্ডেন ডাক মারার দুঃখ অন্তত ভুলতে পেরেছেন। তামিমের ব্যাটিং দেখতে অবশ্য বড় ভাই নাফিসসহ পরিবারের অনেকেই ছিলেন আজ স্টেডিয়ামে। তামিমের বিদায়ের পরের ওভারেই ফিরে আসেন মার্শাল আইয়ুব (৩১)। এর আগে দলীয় ৩৯ রানে আউট হয়েছিলেন অন্য ওপেনার এনামুল (১৮)। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ১৭৩ রান তুলেছে বাংলাদেশ।
জিততে চাইলে বাংলাদেশকে ওভারে ৫.৬৯ গড়ে রান তুলতে হতো। টেস্ট ক্রিকেটের ১৩৬ বছরের ইতিহাসে ২৫০ এর বেশি স্কোরের ক্ষেত্রে ওভারে এত বেশি রান তোলার হার একটিও নেই। ১৯৮৪ সালে লর্ডসে ৬৬.১ ওভারে ৩৪৪ রান তুলে ম্যাচ জিতেছিল পরাক্রমশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গ্রিনিজ, হেইন্স, ভিভ রিচার্ডস, ক্লাইভ লয়েডদের নিয়ে গড়া দলটি সেবার ওভার প্রতি তুলেছিল ৫.১৯ রান। বাংলাদেশকে আজ করতে হতো তার চেয়েও বেশি। ২৫০-এর বেশি স্কোরের ক্ষেত্রে ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ওভারে পাঁচ করে রান তোলার নজির এই একটিই।
ফলে অসম্ভব এক পথে হাঁটার চেয়ে নিরাপদ ড্রটাই বেছে নিতে চেয়েছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এর আগে একটা টেস্ট ড্র করাতে পারলেও সেটিতে মূল ভূমিকা ছিল বৃষ্টির। এটাই কিউইদের বিপক্ষে বাংলাদেশের নিজেদের কৃতিত্বে প্রথম ড্র করা। সেটাও বা কম কীসে!

তা ছাড়া এই ম্যাচে বাংলাদেশের অর্জনের তালিকায় অনেক কিছুই যুক্ত হয়েছে। প্রথম ইনিংসে ভীষণ চাপের মুখে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে মমিনুল যেমন করেছেন ১৮১। তবে সব ছাপিয়ে এটি হয়ে উঠেছে সোহাগ গাজীর ম্যাচ। এই ম্যাচটি সোহাগ নিজে তো বটেই, মনে রাখবে টেস্ট ইতিহাসও। ১৩৬ বছরের টেস্ট ইতিহাসে একই খেলোয়াড়ের সেঞ্চুরি ও হ্যাটট্রিকের কৃতিত্ব যে এই প্রথম। এই বিশ্বরেকর্ড গড়ার পথে হ্যাটট্রিকসহ ছয়টি উইকেটও নিয়েছেন সোহাগ।

দুদল মিলিয়ে এই ম্যাচে ২৭টি ছক্কা মেরেছে। এক টেস্টে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ডও এটি।

সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টটি ২১ অক্টোবর শুরু হবে, ঢাকার মিরপুরে। চট্টগ্রামের দর্শকেরা মাঠে বসে বিশ্বরেকর্ড দেখার বিরল সৌভাগ্য পেয়েছিলেন। তবে গ্যালারি ততটা ভরেনি। ফলে অল্প কজনই গল্প করতে পারবেন, ‘আমিও সেদিন মাঠে ছিলাম!’

ঢাকাতেও যে এমন কোনো কীর্তি হবে না, কে বলতে পারে? ঢাকার দর্শকেরা নিশ্চয়ই ঈদের ছুটির আমেজেই ভরিয়ে দেবেন গ্যালারি।

http://www.prothom-alo.com/sports
Md Al Faruk
Assistant Professor, Pharmacy