ইসলামের দৃষ্টিতে ধূমপান

Author Topic: ইসলামের দৃষ্টিতে ধূমপান  (Read 5027 times)

Offline BRE SALAM SONY

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 827
  • Alhamdulliha Allah Can makes Me A Muslim
    • View Profile
    • Special Discount For hajj and Umrah Guest


ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে গুরুতর ক্ষতিকর একটি বদভ্যাস । শুধু বদভ্যাস বললে ভুল হবে বরং বলতে হবে একটা নির্মম বদভ্যাস। কেননা ধূমপানের কারণে সারা বিশ্বে প্রতিবছর মারা যাচ্ছে ৩৫ লক্ষ মানুষ। ১৯৫০ ইং থেকে ২০০০ ইং ধূমপানজনিত মৃতের মিছিলে যোগ হয়েছে শুধু উন্নয়নশীল দেশেই ছয় কোটি মানুষ। বয়সে এদের অর্ধেকই ছিল যুবক। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপাত্ত অনুযায়ী, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ, উভয় প্রকারের ধূমপানের ক্ষতিকর দিক অনেক। ধূমপান কেবল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তা নয়, তা বরং স্বাস্থ্য, স্বভাব-চরিত্র, মন-মানসিকতা, অর্থ-সম্পদ, দেশ ও জাতি সবার জন্যই ক্ষতিকর। তাই দীনে ফেতরত, ইসলাম, এবিষয়টি কখনো মেনে নিতে পারে না। বক্ষ্যমাণ প্রবন্ধে এ বিষয়টিকে বিভিন্ন আঙ্গিকে আলোচনার প্রয়াস পাব বলে আশা রাখি।
ধূমপান কাকে বলে?
Smoking refers to the inhalation and exhalation of fumes from burning tobacco in cigars, cigarettes and pipes.
(চুরুট, সিগারেট এবং পাইপের মাধ্যমে জ্বলন্ত ধোঁয়া নিঃশ্বাসের সাথে টেনে নেওয়া এবং তা বের করে দেয়ার প্রক্রিয়াকে ধূমপান বলে)
ধূমপান দুভাগে ভাগ করা হয়, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ।
প্রত্যক্ষ বা সক্রিয় ধূমপানের ক্ষতি
ধুমপানের সময় শ্বাসের সঙ্গে টেনে নেয়া নিকোটিন অতিদ্রুত (সাত সেকেন্ডের মধ্যেই) মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। যার প্রভাবে মস্তিষ্কের সূক্ষ্ণ রক্তনালী সংকোচনের ফলে অক্সিজেন সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। সেইসাথে বিষাক্ত কার্বন-মনোক্সাইড গ্যাস রক্তে অনুপ্রবেশের ফলে মারাত্মক পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে। বুকে ব্যথাসহ হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীর রোগ (clogged arteries) ও ফুসফুসের ক্ষতি হয়। সিগারেটের মধ্যে নিহিত রাসায়নিক উপাদান ও বিষাক্ত গ্যাসের কারণে ব্রঙ্কিয়াল এজমা, এম্ফাইসেমা, ব্রোঙ্কাইটিস, হৃদরোগ , উচ্চ-রক্তচাপ, হার্ট-এটাক, স্ট্রোক এবং ক্যানসার হয়।
ধুমপানের ফলে ডিস্লিপিডে-মিয়া হতে পারে অর্থাৎ রক্তে চর্বির মাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটতে পারে ও ক্ষতিকারক লিপিডের পরিমাণ বৃদ্ধিতে নিকোটিনের ভূমিকা থাকতে পারে। প্রকৃতপক্ষে অধূমপায়ীর তুলনায় ধুমপায়ীরা দুই থেকে তিনগুণ বেশী স্ট্রোক ও হার্ট-এটাকে ভোগে। গবেষণার আলোকে জানা গেছে যে, এল.ডি.এল-কোলেস্টেরল (low-density lipoprotein cholesterol -LDLc ) এথেরোস্ক্লেরোটিক প্লাকের সূত্রপাত ঘটায়, আর ধূমপান উক্ত প্লাকের অগ্রসরমানতার সাথে সংশ্লিষ্ট। ক্যারোটিড ধমনীতে ইকোলুসেন্ট-প্লাক তৈরিতে এল.ডি.এল-সি এর সংশ্লিষ্টতা বেশী এবং ধুমপানের সংশ্লিষ্টতা ইকোজেনিক-প্লাক তৈরিতে, প্লাকের সূত্রপাত ঘটাতে ও তা ছিন্ন হওয়ার ব্যাপারে এল.ডি.এল-সি মুখ্য ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে ধূমপানের কারণে এই প্লাক আরও শক্ত ও আঁশযুক্ত হয়।
ধূমপায়ী মাতাদের ক্ষেত্রে মৃত-সন্তান প্রসব, অপূর্ণ ও কম ওজন বিশিষ্ট সন্তানপ্রশব বা গর্ভপাতের হার অনেক বেশী হয়।
ধূমপান-জনিত ক্যানসারে যারা মৃত্যুবরণ করে তাদের শতকরা ২২ জনই ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। সাধারণভাবে যারা ক্যানসারে আক্রান্ত হয় তাদের চারজনের একজন ফুসফুসের ক্যানসারে ভোগে। একনাগাড়ে ৪০ বছর ধূমপান করলে স্তন-ক্যানসারের সম্ভাবনা শতকরা ৬০ ভাগ বেড়ে যায় এবং এই ধুমপানের পরিমাণ প্রতিদিন এক প্যাকেট বা তার বেশী হলে এই ঝুঁকি শতকরা ৮৩ ভাগ বৃদ্ধি পায়। মুখ ও গলার ক্যানসারে আক্রান্তদের শতকরা ৯০ ভাগই তামাক গ্রহণে অভ্যস্ত। এছাড়াও লিভার, প্যাংক্রিয়াস, পাকস্থলী, মূত্রনালী, কিডনী ও সারভাইকাল ক্যানসারও ধূমপানের কারণে হতে পারে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপানের কারণে ডিএনএ অনুক্রমের পরিবর্তন ঘটতে পারে। এর ফলে একজন ধূমপায়ী পিতার সন্তানরা (inherit genetic damage) জিনেটিক বা বংশগত বিধ্বস্ততার উত্তরাধিকারী হতে পারে। বিজ্ঞানী ও গবেষক (Carole Yauk) এর মতে একজন ধূমপায়ী মাতার কারণে ভ্রূণের ক্ষতি হতে পারে, কিন্তু একজন ধূমপায়ী পিতা তার স্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের অনেক আগেই সম্ভাব্যরূপে আগত সন্তান-সন্ততির ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই যারা ভাবেন সন্তান জন্মাবার পরে ধূমপান ছেড়ে দেবেন, তাদের ভাবনা অশুদ্ধ। বরং সন্তান গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় থেকে এবং প্রচেষ্টা চালানোর বেশ আগে থেকেই ধূমপান বর্জন করা বাঞ্ছনীয়। মূল প্রবাহে তামাকু ধোঁয়ায় (Mainstream tobacco smoke - MTS) প্রায় ৪০০০ রাসায়নিক উপাদান থাকে, যেগুলোর বেশীর ভাগই (genotoxic) বংশানুগতির অন্যতম নিয়ন্ত্রক উপাদান 'জিন' -এর জন্য বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। সুতরাং বলা যায় যে, যারা সরাসরি তামাকের ধোঁয়ার সংস্পর্শে এসেছে তাদের কারণে তাদেরই ভবিষ্যৎ বংশধর, (যারা কখনই তামাকের ধোঁয়ার সংস্পর্শে আসেনি) বংশগতি সম্বন্ধীয় রোগের বাহক হিসেবে জন্ম নিতে পারে।
ধুমপানের কারণে স্বাদ ও গন্ধ নেয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। সম্প্রতি এক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে যুবক বয়সেই ধূমপায়ীকে বৃদ্ধের মত দেখায় এবং যে যত দীর্ঘ সময় ধরে ধূমপান করে যায় তার মুখের চামড়া তত তাড়াতাড়ি ও তত বেশী কুঁচকে যায়। ধূমপানে আঙ্গুল, দাঁত ও ঠোঁট বিবর্ণ হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস, চুল ও কাপড় দুর্গন্ধযুক্ত হয়।


সংক্ষেপে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিগুলো নিম্নরূপ
- ফুসফুসে ক্যানসার এবং ফুসফুসের অন্যান্য রোগের ৯০% ভাগই হয় ধূমপানের ফলে৷
- কণ্ঠনালীর ক্যানসার, ধূমপায়ী মধ্যে শতকরা ১০ জনের এ ক্যানসার হতে পারে।
- ভারতে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় মুখের ভেতরের ক্যানসার দেখা যায় যার কারণ তামাক সেবন ৷
-ভারতে তামাক সেবনের কারণে যথাক্রমে ৫৬.৪% এবং ৪৪.৯% পুরুষ এবং মহিলাদের ক্যানসার হয়৷
- ভারতবর্ষে ৮২% ফুসফুসের ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ রোগের মূল কারণ হল তামাক।
- তামাকের ফলে পরোক্ষভাবে ফুসফুসের যক্ষ্মা হয়৷ যারা ধূমপান করেন তাদের তিনগুণ বেশি টিবি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ সিগারেট বা বি, বিড়ি যত বেশি খাওয়া হয় ধূমপায়ী মধ্যে তত বেশি টিবির প্রকোপ দেখা যায়৷
- ধূমপান বা তামাক সেবন অতর্কিতভাবে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় এবং হার্টে রক্তের প্রবাহ কমিয়ে দেয় ৷
- পায়ে রক্ত চলাচল কমিয়ে দেয় যার ফলে গ্যাংগ্রিন হতে পারে ৷
- সারা শরীরের ধমনীর ভিতরের আস্তরণের ক্ষতি করে তামাক ৷
- ধূমপান করলে বা তামাক খেলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বাড়ে ৷
- রক্তের কার্যকরী কোলেস্ট্রল কমিয়ে দেয় তামাক ৷
- যারা তামাক বা সিগেরেট খান তাদের ২ থেকে ৩ গুণ বেশি সম্ভাবনা থাকে হার্টের অসুখ বা পক্ষাঘাত হয়ার ৷
- ভারতে প্রত্যেক বছর তামাক খাওয়ার ফলে প্রায় ৮০০,০০০ থেকে ৯০০,০০০ মানুষের মৃত্যু ঘটে ৷
- কিশোর বয়স থেকে তামাক সেবনকারীদের প্রায় অর্ধেক শেষ পর্যন্ত এর দরুন মারা যাবে, প্রায় সিকি ভাগ মাঝ বয়সে এবং সিকি ভাগ বৃদ্ধ বয়সে ৷


বাস্তবতার সাক্ষী
বাস্তবতার নিরিখে দেখা যায় যে একজন অধূমপায়ী ব্যক্তির চেয়ে একজন ধূমপায়ী অধিকতর উগ্র মেজাজের হয়ে থাকে ৷ শুধু তাই নয়, বরং সমাজে যারা বিভিন্ন অপরাধ করে বেড়ায় তাদের ৯৮% ভাগ ধূমপান করে থাকে ৷ যারা মাদকদ্রব্য সেবন করে তাদের ৯৫% ভাগ প্রথমে ধূমপানে অভ্যস্ত হয়েছে তারপর মাদক সেবন শুরু করেছে ৷ এমনকি ধূমপায়ী মায়ের সন্তান উগ্র স্বভাবের হয়ে থাকে বলে নিরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে।
সম্প্রতি উইনকনসিন বিশ্ব বিদ্যালয়ে ৩৭৫০ জন লোকের উপর এক সমীক্ষায় দেখা যায় যে অধূমপায়ীর চেয়ে ধূমপায়ীর শ্রবন শক্তি কমার সম্ভাবনা শতকরা ৭০ ভাগ বেশী ৷ গবেষকরা আরো দেখিয়েছেন যে, একজন ধূমপায়ীর ধূমপানকালীন সময়ে কোন অধূমপায়ী উপস্থিত থাকলে তারও একই সমস্যা দেখা দেবে ৷
পরোক্ষ বা অক্রিয় ধূমপানের ক্ষতি
নিজে নয় বরং অন্য কোনো ব্যক্তির ধূমপানকালীন নির্গত ধোঁয়া ফুসফুসে টেনে নেয়াকে পরোক্ষ ধূমপান (Passive smoking) বলে। এধরনের ধূমপান সাধারণত দুর্ঘটনাজনিত, অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘটে থাকে। তামাক অর্থাৎ সিগারেট বা চুরুটের ধোঁয়া এতই মারাত্মক যে এতে প্রায় তিনশ'র মত এমন সব রাসায়নিক উপাদান থাকে যেগুলো Carcinogenic অর্থাৎ ক্যানসার উৎপন্নের জন্য দায়ী। পরোক্ষ ধূমপান প্রত্যক্ষ ধুমপানের মতোই মারাত্মক ও প্রাণঘাতী। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, তামাকের ধোঁয়ার সংস্পর্শে এলে হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যানসার থেকে শুরু করে আরও অনেক গুরুতর স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে। ক্যালুফোর্নিয়া এনভায়র্নমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সি (California Environmental Protection Agency) এর মতে অক্রিয় ধুমপানের কারণে মহিলাদের স্তন-ক্যানসার ও অপূর্ণসন্তান প্রসবের হার বেড়ে যায়। তাছাড়া এর ফলে হাঁপানি, ফুসফুসে ইনফেকশন ও রক্তসঞ্চালনে সমস্যা হতে পারে। পরিবারে পিতা-মাতা ও অন্যান্য সদস্যদের ধুমপানের কারণে নিষ্পাপ কোলের-বাচ্চা ও ছোট ছোট শিশুরা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হতে পারে। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে ধূমপায়ীদের শিশু-সন্তানরা খুব সহজেই কাশি, সর্দি, ফুসফুসের সমস্যা তথা ব্রঙ্কিয়াল এজমা, কানের ইনফেকশন, হৃদরোগ, এমনকি পরবর্তী জীবনে ফুসফুসের ক্যানসারেও আক্রান্ত হতে পারে এবং মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

নিরীহ গৃহপালিত পশুর পর্যন্ত পরোক্ষ ধূমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে
আশ্চর্যের বিষয় হলো ‘Colorado State University' ও ‘University of Massachusetts'-এর পর্যবেক্ষণ অনুসারে ধূমপায়ী গৃহস্বামী ও অন্যান্য সদস্যদের ধুমপানের কারণে নিরীহ গৃহপালিত পশুরাও রেহাই পাচ্ছে না এবং এর ফলে গৃহপালিত কুকুর- 'Canine lung cancer' ও বিড়াল- 'Feline lymphoma' নামক অজ্ঞাত ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে।
(দেখুন: মাহফুজশান্ত, http://www.somewhereinblog.net/group/islam/28884561)
পরোক্ষ ধূমপানে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নিষ্পাপ শিশুরা
পরোক্ষ ধূমপানে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয় শিশুদের। কারণ শিশুদের শরীর, বিশেষ করে শ্বাসতন্ত্র পরিণত পর্যায়ে পৌঁছতে সময় লাগে। তাই পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাব শিশুদের জন্য ভয়ঙ্কর। স্কটল্যান্ডে ৮ থেকে ১৫ বছরের শিশুদের নিয়ে এক গবেষণায় দেখা গেছে, মা-বাবার ধূমপানের কারণে প্রতি ১০টি শিশুর ৪টি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। ইংল্যান্ডে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাবে প্রতি বছর ৫ বছরের নিচের ১৭ হাজার শিশু নানা রকম সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাবে শিশুদের নিউমোনিয়া, হাঁপানি, ব্রংকিউলাইসিস, ক্র, হুইজিং, মধ্যকর্ণের প্রদাহসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের ধূমপানের ফলে গর্ভস্থ শিশুর অপরিসীম ক্ষতি হয়। এতে শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এছাড়া প্রি-ম্যাচিউর ডেলিভারি, কট-ডেথ, এমনকি গর্ভপাতও হতে পারে। দুগ্ধদানকারী মায়েরা ধূমপান করলেও শিশুর ক্ষতি হয়। ধূমপান বুকের দুধের পরিমাণও কমিয়ে দেয়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মহিলাদের মধ্যে যারা নিয়মিত ধূমপায়ীদের সংস্পর্শে থেকেছে অথচ নিজেরা কখনো ধূমপান করে নি তাদের নবজাতক সন্তানের দেহে কোটিনিন (Cotinine) নামের রাসায়নিক উপাদানের পরিমাণ, তুলনামূলকভাবে, যেসব মায়েরা ধূমপায়ীর সংস্পর্শে আসে নি, তাদের সন্তানের চেয়ে দ্বিগুণ বেশী।
‘কোটিনিন’ হচ্ছে সিগারেটের ধোঁয়ায় প্রাপ্ত নিকোটিনের একটি বিপাকীয় পরিবর্তিত রূপ। একজন গর্ভবতী মা অধূমপায়ী হওয়া সত্ত্বেও তার প্রতিবেশী ধূমপায়ীর ধোঁয়া থেকে নিকোটিন গর্ভস্থ সন্তানের দেহে প্রবেশ করতে পারে এবং কোটিনিন হিসাবে তা জমাও হতে পারে।
তথ্যানুযায়ী পরোক্ষ ধূমপানের শিকার কোনো নবজাতকের চুলে এই কোটিনিনের মাত্রা একজন ধূমপায়ী মায়ের নবজাতক শিশুর চুলে প্রাপ্ত পরিমাণের প্রায় এক-চতুর্থাংশ।
বিজ্ঞানীদের মতে পরোক্ষ ধূমপানে আক্রান্ত নবজাতক শিশুদের মধ্যে পরবর্তীকালে বিভিন্ন মানসিক উপসর্গ যেমন মনঃ সংযোগ ক্ষমতার অভাব, মানসিক দক্ষতার স্বল্পতা ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা দেখার ঝুঁকি রয়েছে।
পরোক্ষ ধূমপানের কারণে শিশুদের সঙ্গে সঙ্গে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নানাভাবে। পরোক্ষ ধূমপানে মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কর্মস্থল ও জনসমক্ষে ধূমপানের কারণে। বিশ্বের ২৫ ভাগ ধূমপায়ী ধূমপানের মাধ্যমে বাকি ৭৫ ভাগ মানুষের ক্ষতি করবে, তা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। এ কারণেই আয়ারল্যান্ড সর্বপ্রথম ২০০৪ সালের মার্চে কর্মস্থলে ও জনসমক্ষে ধূমপান নিষিদ্ধ করেছে। বর্তমানে কানাডা, ব্রাজিল, সুইডেন এবং বাংলাদেশেও জনসমক্ষে আইনত ধূমপান নিষিদ্ধ। ভারতে জনসমক্ষে ধূমপানের জরিমানা ২০০ রূপী ধার্য করা হয়েছে।


ধূমপান যে শুধু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় তা নয়।
ধূমপান যে কেবল মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তা নয়, ধূমপান বরং মানুষের মন-মেজাজ, স্বভাব-চরিত্র, পরিবেশ, রাষ্ট্র ও জাতির অকল্পনীয় ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। ধূমপানের কারণে ব্যক্তির যে অর্থ অপচয় হয় তা বলাই বাহুল্য। জাতীয় পর্যায়ে ধূমপানজনিত রোগব্যাধির চিকিৎসায় যে শ্রম ও অর্থ ব্যয় হয় তা দিয়ে বহু উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হত। শুধু চীনেই ২০০০ সালে ধূমপান-জনিত রোগ চিকিৎসার ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪৯ বিলিয়ন রেনমিনপি'রও উপরে।
ধূমপান শরিয়তের দৃষ্টিতে হারাম
উল্লিখিত ক্ষতিসমূহের কারণে ইসলামি শরিয়ত কখনোই ধূমপানের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে না। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর এমন প্রতিটি বিষয়ই ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম বলে বিবেচিত।
হাদিসে এসেছে :
لا ضرر ولا ضرار
নিজে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া বা অন্যকে ক্ষতিগ্রস্থ করার কোনো স্থান ইসলামে নেই। [ ইবনে মাজাহ, মুয়াত্তায়ে ইমাম মালিক, দারা কুতনি ]
কেউ কেউ ধারণা করেন যে ইসলামি শরিয়তে কোনো কিছু হারাম হতে হলে সরাসরি নিষেধাজ্ঞাসূচক টেক্সট থাকতে হবে। আল কুরআন অথবা সহিহ হাদিসে থাকতে হবে যে অমুক জিনিসটা হারাম, অমুক জিনিসটা নিষিদ্ধ। অথবা অমুক জিনিসটা করলে দোযখে যেতে হবে, ইত্যাদি।
হ্যাঁ। এভাবে সরাসরি টেক্সট থাকলেও (সংশ্লিষ্ট শর্তপূরণ সাপেক্ষে) তা হারাম বলে বিবেচিত হবে, তবে সর্বক্ষেত্রে এরূপ থাকা জরুরি নয়। বরং ইসলামি ফেকাহ শাস্ত্রের কিছু উসুল ও কাওয়াইদ ( মূলনীতি ও ব্যাকরণ) রয়েছে যেগুলোর আওতায় পড়লে সরাসরি টেক্সট না থাকলেও কোনো বিষয় হারাম বলে বিবেচিত হবে। উল্লিখিত হাদিসটি সে ধরনের একটি মূলনীতি বা ব্যাকরণের কায়দা যার আওতায় ধূমপানসহ অন্যান্য ক্ষতিকর বিষয় হারাম বলে বিবেচিত হবে।
ইসলাম
আল্লাহর রহমতে প্রতি বছর হজে যাওয়ার সুযোগ হচ্ছে।এভাবেই হাজীদের খেদমত করে যেতে চাই।
01711165606

আমার প্রতিষ্ঠান www.zilhajjgroup.com
www.corporatetourbd.com

Offline BRE SALAM SONY

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 827
  • Alhamdulliha Allah Can makes Me A Muslim
    • View Profile
    • Special Discount For hajj and Umrah Guest
Re: ইসলামের দৃষ্টিতে ধূমপান
« Reply #1 on: July 05, 2010, 06:49:27 AM »

ইসলামি শরিয়তের আরো একটি মূলনীতি হল এমন কোনো কাজ না করা যার দ্বারা নিজের ধ্বংস ডেকে আনা হয়। আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে:
وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ. البقرة : 195
"তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসে নিপতিত করো না” [সূরা আল-বাকারা : ১৯৫]
ধূমপান যেহেতু সর্বসম্মতিক্রমে ধ্বংসাত্মক, সে কারণে ধূমপান উল্লিখিত মূলনীতির আওতায়, নিষিদ্ধ বিষয় বলে বিবেচিত হবে।
ইসলামি শরিয়তের আরেকটি মূলনীতি হল, যা কিছু তাইয়েব বা পবিত্র, তা হালাল আর যা কিছু খাবিস বা অপবিত্র-ক্ষতিকর , তা হারাম। আল কুরআনে এসেছে:
وَيُحِلُّ لَهُمُ الطَّيِّبَاتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْخَبَائِثَ. (الأعراف : 157 (
"তিনি তোমাদের জন্য হালাল করেন যা পবিত্র, এবং হারাম করেন যা অপবিত্র-খারাপ" [সুরা আল-আরাফ : ১৫৭ ]
এ আয়াত থেকে অপবিত্র ও খারাপ বিষয় হারাম হওয়ার যে মূলনীতি পাওয়া যায় তার ভিত্তিতেও ধূমপান হারাম বলে বিবেচিত। কেননা ধূমপান যে খারাপ ও ক্ষতিকর এ ব্যাপারে কোন স্বাস্থ্য বিজ্ঞানী দ্বি-মত পোষণ করেছেন বলে কেউ বলতে পারবে না। তারপরও যদি কেউ বলে ধূমপান শরিয়তের নিষিদ্ধ বস্তুর মধ্যে পড়ে না, তা হলে তাকে ঐ ডায়াবেটিস রোগীর সাথে তুলনা করতে হবে, যিনি ডাক্তারের নির্দেশ মত চিনি ত্যাগ করলেন ঠিকই কিন্তু রসগোল্লা, চমচম, সন্দেশ সবই খেলেন আর বললেন, কই ডাক্তার তো এগুলো নিষেধ করেন নি!

(দেখুন: আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান, www.islamhouse.com/p/144554)
বলে রাখা ভাল যে কোনটি পবিত্র আর কোনটি অপবিত্র বা খাবিস তা ব্যক্তিগত রুচি অনুযায়ী নির্ণীত হবে না। তা নির্ণয়ে বরং কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা, কিয়াস ইত্যাদির আশ্রয়ে যেতে হবে। প্রাজ্ঞ ওলামাদের স্মরণাপন্ন হতে হবে। ধূমপানের ক্ষতিকারক দিকগুলোর বিবেচনায় কুরআন সুন্নাহর মূলনীতি অনুযায়ী এবং বর্তমান বিশ্বের ফেকাহবিদদের ইজমা অনুযায়ী বিষয়টি যে খাবিস অপবিত্র-ক্ষতিকর তাতে কোনো দ্বিমত নেই। অন্যান্য হারাম খাদ্য-খাবারের উপর কেয়াস করেও ধূমপান যে হারাম তা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
ধূমপান হারাম হওয়ার আরো কিছু প্রমাণ

আল্লাহ তাআলা মদ ও জুয়া বিষয়ে বলেন :
يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِنْ نَفْعِهِمَا. (البقرة : 219(
"তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে ৷ বল, এ দুয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ ৷ আর তার মধ্যে মানুষের জন্য উপকারিতাও আছে৷ তবে এগুলোর পাপ উপকারের চেয়ে বড়। [সূরা আল-বাকারা:২১৯]
আল কুরআনের এ আয়াত থেকে বুঝা যাচ্ছে যে মদ জুয়ার মধ্যে উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও তা হারাম করা হয়েছে; কেননা মদ ও জুয়ায় উপকারিতার চেয়ে ক্ষতির দিকটাই প্রবল। আর ধূমপানে তো আদৌ কোনো উপকারের দিক নেই, বরং একশ ভাগই ক্ষতি ৷ তাই কেয়াস বা ডিডাকশন মূলনীতির দাবি অনুযায়ী ধূমপান হারাম না হওয়ার কোনো কারণ নেই।
ধূমপানে অর্থ অপচয় হয়, আর অপচয়কারি শয়তানের ভাই


ইরশাদ হয়েছে:
إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ
"নিশ্চয় অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই” ৷ [সুরা আল-ইসরা :২৭]
ধূমপান একটি অপচয় ৷ অবশ্য এমন অনেক অপচয় আছে যাতে মানুষের লাভ-ক্ষতি কিছু নেই ৷ তবু সেগুলো সকলের কাছে অন্যায় ও অপচয় বলে গণ্য ৷ কিন্তু ধূমপান এমন একটি অপচয় যাতে ক্ষতি ভিন্ন অন্য কিছু নেই ৷
অযথা ব্যয় আল্লাহর কাছে একটি ঘৃণিত বস্তু বলে বিবেচিত, হাদিসে এসেছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :
إن الله كره لكم ثلاثا : قيل وقال وكثرة السؤال وإضاعة المال
"আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তোমাদের জন্য তিনটি বিষয়কে ঘৃণা করেন ৷" (এক) ভিত্তিহীন কথা-বার্তা৷ (দুই) অধিকহারে প্রশ্ন করা ৷ (তিন) সম্পদ নষ্ট করা ৷ [ বুখারি ও মুসলিম ]

আর ধূমপানকারী ধূমপান করে যে অযথা সম্পদ নষ্ট করে এ ব্যাপারে কারো দ্বি-মত নেই ৷
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া ইমানের দাবি বহির্ভূত
ধূমপানের দ্বারা প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া হয়, আর প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া ইমানের দাবি বহির্ভূত।
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন :
من كان يؤمن بالله واليوم الآخر فلا يؤذي جاره
"যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়৷" [বুখারি]

ধূমপানকারী ধূমপানের দ্বারা স্ত্রী-পরিজন সহযাত্রী, বন্ধু - বান্ধব ও আশে-পাশের লোকজনকে কষ্ট দেয়। তাই ধূমপান নিঃসন্দেহে আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসের দাবি বহির্ভূত একটি গর্হিত বিষয়।


খ্যাতনামা মুফতিদের ফতোয়া
সৌদি আরবের প্রয়াত গ্রান্ড মুফতি শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায রা. ধূমপান হারাম বিষয়ে ফতোয়া দিয়ে বলেন:
( أن التبغ بكل أنواعه محرم كالخمر لكونه خبيثا ويشتمل على أضرار كثيرة ولا يجوز بيعه ولا تدخينه ولا التجارة فيه(
(সকল প্রকার তামাক হারাম। ঠিক মদের মতোই। কেননা তা খাবিস বা মন্দ, এবং এর রয়েছে বহু অনিষ্টকারিতা। তামাক বিক্রি করা, সেবন করা, তামাকের ব্যবসা-বানিজ্য সবই অবৈধ।) তিনি আরো বলেন : ‘যারা তামাক সেবন করে অথবা তামাকের ব্যবসা করে তাদের তাওবা করে ফিরে আসা উচিত, যা ঘটে গেছে তার জন্য লজ্জিত হওয়া উচিৎ। কোনো দিন আর এ কাজে ফিরে যাবে না বলে দৃঢ়চিত্ত হওয়া জরুরি। [ দৈনিক আল কাবাস, কুয়েত:২.৬.১৯৯৪ ইং]
ফেকাহবিদ ড. ইউসুফ আল কারদাবি বলেন: ‘
)إنه حرام، لأنه مضر بالصحة، مسبب للسرطان، وهو قتل بطيء للنفس، والله تعالى يقول: (ولا تقتلوا أنفسكم إن الله كان بكم رحيما) وهو حرام، لأنه يضر بمن يجالس المدخن، ويشركه في التدخين رغما عنه، والحديث النبوي يقول: «لا ضرر ولا ضرار.
وهو حرام، لأنه خبيث في رائحته وفي أثره، والإسلام جاء ليحل الطيبات ويحرم الخبائث.. وهو حرام، لأنه من باب الإسراف أو التبذير وإضاعة المال فيما لا ينفع في الدنيا والآخرة.. وهو حرام لأنه يضر الضرورات الخمس: يضر بالدين، ويضر بالنفس، ويضر بالنسل، ويضر بالعقل، ويضر بالمال، لهذا كان تعاطيه محرما، واستيراده محرما، وبيعه محرما، والترويج له والإعلان عنه محرما(
ধূমপান হারাম; কারণ তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, ক্যানসারের কারণ, এটা হল মন্থর গতিতে মানব হত্যা। ইরশাদ হয়েছে : { তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর দয়াশীল।} [ ১৯৫ ] ধূমপান হারাম; কেননা ধূমপানরত ব্যক্তির কাছে গিয়ে যে বসে তাকে তা ক্ষতি পৌঁছায়, অনিচ্ছা সত্ত্বেও পরোক্ষভাবে তাকে ধূমপান করায়। হাদিসে এসেছে, (নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং অপরকে ক্ষতিগ্রস্ত করার স্থান ইসলামে নেই)
ধূমপান হারাম ; কেননা তা গন্ধে ও প্রভাবে খারাপ। আর ইসলাম এসেছে যা কিছু পবিত্র-উত্তম তা হালাল করতে। ধূমপান হারাম, কারণ ধূমপানে এমন একটি খাতে সম্পদ অপচয় ও নষ্ট করা হয় যার দুনিয়া আখেরাতে আদৌ কোনো ফায়দা নেই। ধূমপান হারাম, কারণ তা পাঁচটি প্রয়োজনীয় বিষয়ের ক্ষতিসাধন করে, দীন-ধর্মের ক্ষতি করে, নাফসের ক্ষতি করে, নসল তথা বংশানুগতির ক্ষতি করে, বুদ্ধিমত্তার ক্ষতি করে এবং অর্থের ক্ষতি করে। এ কারণেই তামাক সেবন হারাম, তা ইম্পোর্ট করা, বিক্রি করা, ধূমপানের পক্ষে প্রচারণা ও এ্যাডভারটাইসম্যান্টও হারাম।

ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ব্যক্তিগত লাভ
১- একটি হারাম ও গর্হিত কাজ বর্জন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব হবে।
২- নবী রাসূল ও সৎ লোকদের কেউই ধূমপান করেন নি, তাই ধূমপান বর্জন করে তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ সম্ভব হবে।
৩-ফুসফুসের রোগ-ব্যাধি থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে।
৪- হার্টের অসুখ বা ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে ৷
৫- হার্টে চাপ কম পড়বে ৷
৬- আপনার ধোঁয়া থেকে আপনার প্রিয়জন ও প্রতিবেশীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে বেঁচে যাবে ৷
৭- সর্দি, কাশি, শ্লেষ্মা ইত্যাদি থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যাবে ধূমপান বর্জনের সাথে সাথে ৷
৮- মুখের যাবতীয় ক্যানসার থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
৯- দাঁত আরও সাদা আরও পরিষ্কার হবে।
ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার সামাজিক লাভ
১- আপনি নিজেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করবেন, সিগারেট আপনাকে আর নিয়ন্ত্রণ করবে না ৷
২- আপনার নিজের সম্বন্ধে ধারণা ও আত্মবিশ্বাসের উন্নতি হবে ৷
৩ - আপনি আজ ও আগামী দিনে আপনার সন্তানের একজন সুস্থ অভিভাবক হতে সক্ষম হবেন ৷
৪- অন্যান্য উপকারী খরচার জন্য আপনার হাতে আরো বেশি টাকা থাকবে ৷
৫ - ধূমপান না করার কারণে আপনি আলাদা সামাজিক মর্যাদায় ভূষিত হবেন।
ধূমপান বর্জনে সহায়ক কিছু টিপস
১- ধূমপান হারাম এ বিষয়টি হৃদয়ে জাগ্রত রাখুন।
২- আল্লাহর কাছে বেশি-বেশি দুআ-প্রার্থনা করুন যাতে তিনি ধূমপানের বদভ্যাস ছাড়তে তাউফিক দেন, সাহায্য করেন।
৩ - চুরুট, সিগারেট, অ্যাশট্রে হাতের কাছে না রেখে লুকিয়ে রাখুন। দেখতে না পেলে মনেও পড়বে না ৷ এটা একটা সহজ কিন্ত কার্যকর উপায় ৷
৪ - সিগারেট এমনভাবে রাখুন, যাতে সহজেই পাওয়া না যায় ৷ সিগারেট ইত্যাদি এমন জায়গায় রাখুন যেখান পৌঁছুতে হলে আপনাকে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হবে ৷ যেমন অন্য ঘরে, যেসব জায়গায় আপনি বিশেষ যান না এমন কোথাও, বা আলমারির ভিতর তালা বন্ধ করে ৷
৫ - কী থেকে আপনার ধূমপান করতে ইচ্ছা জাগে তা ভেবে বের করুন ও তা কাটানোর উপায় চিন্তা করুন ৷ যাঁরা ধূমপান করেন তাঁদের সান্নিধ্যে এলে কি এমনটা হয়? তাহলে প্রথম প্রথম যারা সিগারেট খান বা খাচ্ছেন তাদের থেকে দূরে থাকুন, তাহলে তাদের দেখে খেতে ইচ্ছা করবে না ৷
৬ - মুখে কিছু রাখার চেষ্টা করুন যেমন লজেন্স, মিষ্টি বা চুইংগাম বা পেপারমিন্ট ইত্যাদি রাখুন ৷
এবং জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিন ৷
৭ - যখনই ধূমপান করতে ইচ্ছা করবে তখনই বসা বা দাঁড়ানো অবস্থাতে গভীরভাবে নিশ্বাস নিন ৷ এক গ্লাস পানি খেলে ও ব্যায়াম করলেও ইচ্ছেটা কমে যাবে।
৮ - তামাক বা সিগারেট খাবার ইচ্ছে হলে আপনার সন্তানের সম্বন্ধে ভাবুন এবং আপনার কোনো তামাক ঘটিত ভয়ঙ্কর অসুখ হলে তাদের ভবিষ্যতের উপর কী প্রভাব পড়বে তা চিন্তা করুন ৷
৯ - একটি দিন ঠিক করুন যেদিন থেকে তামাক সেবন বন্ধ করবেন ৷
১০ - কারোর সাহায্য নিন ৷
১১ - সিগারেট ছাড়ার পর প্রথম দিনটি কি করে কাটাবেন তার পরিকল্পনা করুন ৷
১২ - যখনই ধূমপান বা তামাক সেবনের ইচ্ছা হবে তখনই এই চারটি জিনিস করুন:
*১*অন্য কিছু করুন *২ *পরবর্তী সিগারেট বা তামাক সেবনটি পিছিয়ে দিন
*৩* গভীরভাবে শ্বাস নিন *৪* পানি পান করুন
o ইতিবাচক কথায় নিজেকে বোঝান ৷
o নিজেকে পুরস্কার দিন ৷
o মন শান্ত রাখার জন্য প্রতিদিন ব্যায়াম করুন বা হাঁটুন, দুআ-যিকির, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি করুন ৷
o এ ছাড়াও, সব সময়ে সক্রিয় থাকুন, স্বাস্থ্যকর খাবার খান ৷
---------------------------------------------------------------------------------------------------------
তথ্যসূত্র:
--------------
দৈনিক ইনকিলাব তারিখ ১৫-১২-২০০০ ইং
সাপ্তাহিক আরাফাত বর্ষ ৪৫ সংখ্যা ১, ১৮ই আগস্ট ২০০৩
কারিমা বিন্তে খামিস আল বু সাইদিয়াহ, আল ইনহিরাফ আল খুলুকি
http://www.islamhouse.com/p/144554
www.qaradawi.net





« Last Edit: July 05, 2010, 06:52:37 AM by BRE SALAM SONY »
আল্লাহর রহমতে প্রতি বছর হজে যাওয়ার সুযোগ হচ্ছে।এভাবেই হাজীদের খেদমত করে যেতে চাই।
01711165606

আমার প্রতিষ্ঠান www.zilhajjgroup.com
www.corporatetourbd.com

Offline BRE SALAM SONY

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 827
  • Alhamdulliha Allah Can makes Me A Muslim
    • View Profile
    • Special Discount For hajj and Umrah Guest
Re: ইসলামের দৃষ্টিতে ধূমপান
« Reply #2 on: July 05, 2010, 06:57:04 AM »
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধুমপান- দু'ই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর



'ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর'- শুধু ক্ষতিকর বললে কম বলা হবে। বরং বলা উচিত- 'ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর'। তা প্রত্যক্ষ হোক, কিংবা হোক পরোক্ষ ধুমপান। ধুমপানের কারণে এ পৃথিবীতে অনেক মানুষ সবার অজান্তে অকালেই ঝরে যাচ্ছে। ধুমপানের ফলে সৃষ্ট তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাগুলো জীবনকে বিপন্ন করে তোলে। তামাকে যে নিকোটিন থাকে তা ভয়ানক আসক্তির সৃষ্টি করে। গবেষণায় দেখা গেছে সিগারেটের ধোঁয়ায় যে নিকোটিন থাকে তা হিরোইন অপেক্ষা শক্তিশালী।

*ধুমপানের সময় শ্বাসের সঙ্গে টেনে নেয়া নিকোটিন আতিদ্রুত (সাত সেকেন্ডের মধ্যেই) মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। যার প্রভাবে মস্তিষ্কের সূহ্ম রক্তনালী সংকোচনের ফলে অক্সিজেন সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। সেইসাথে বিষাক্ত কার্বন-মনোক্সাইড গ্যাস রক্তে অনুপ্রবেশের ফলে মারাত্মক পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে। বুকে ব্যথা সহ হৃদপিন্ডের রক্তনালীর রোগ (clogged arteries) ও ফুসফুসের ক্ষতি হয়। সিগরেটের মধ্যে নিহিত রাসায়নিক উপাদান ও বিষাক্ত গ্যাসের কারণে ব্রঙ্কিয়াল এজমা, এম্ফাইসেমা, ব্রোঙ্কাইটিস, হৃদরোগ, উচ্চ-রক্তচাপ, হার্ট-এটাক, স্ট্রোক এবং ক্যান্সার হয়।

*ধুমপানের ফলে ডিস্‌লিপিডে- মিয়া হতে পারে অর্থাৎ রক্তে চর্বির মাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটতে পারে ও ক্ষতিকারক লিপিডের পরিমাণ বৃদ্ধিতে নিকোটিনের ভূমিকা থাকতে পারে। প্রকৃতপক্ষে অধুমপায়ীদের তুলনায় ধুমপায়ীরা দুই থেকে তিন গুণ বেশী স্ট্রোক ও হার্ট-এটাকে ভোগে। গবেষণার আলোকে জানা গেছে যে, এল.ডি.এল-কোলেস্টেরল (low-density lipoprotein cholesterol -LDLc ) এথেরোস্ক্লেরোটিক প্লাকের সূত্রপাত ঘটায়, আর ধুমপান উক্ত প্লাকের
অগ্রসরণের সাথে সংশ্লিষ্ট। ক্যারোটিড ধমনীতে ইকোলুসেন্ট-প্লাক তৈরিতে এল.ডি.এল-সি এর সংশ্লিষ্টতা বেশী এবং ধুমপানের সংশ্লিষ্টতা ইকোজেনিক-প্লাক তৈরিতে। প্লাকের সূত্রপাত ঘটাতে ও তা ছিন্ন হওয়ার ব্যাপারে এল.ডি.এল-সি মুখ্য ভুমিকা পালন করে। অন্যদিকে ধুমপানের কারণে এই প্লাক আরও শক্ত ও আঁশযুক্ত হয়।

*ধুমপায়ী মাতাদের ক্ষেত্রে মৃত-সন্তান প্রসব, অপূর্ণকালিক ও কম ওজন বিশিষ্ট সন্তান প্রশব বা গর্ভপাতের হার অনেক বেশী হয়।

*ধুমপান জনিত ক্যান্সারে যারা মৃত্যুবরণ করে তাদের মধ্যে ২২% -ই ফুসফুসের ক্যান্সার রোগী এবং যারা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তাদের চারজনের মধ্যে একজন লোক ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগে থাকে। একনাগারে ৪০ বছর ধুমপান করলে স্তন-ক্যান্সারের সম্ভাবনা ৬০% বেড়ে যায় এবং এই ধুমপানের পরিমাণ প্রতিদিন এক প্যাকেট বা তার বেশী হলে এই ঝুঁকি ৮৩% বৃদ্ধি পায়। মুখ ও গলার ক্যান্সারে আক্রান্তদের ৯০% লোকই তামাক গ্রহণে অভ্যস্ত হয়ে থাকে। এছাড়াও লিভার, প্যাংক্রিয়াস, পাকস্থলি, মূত্রথলি, কিডনী ও সারভাইকাল ক্যান্সারও হতে পারে।

*সমপ্রতি গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, ধুমপানের কারণে ডিএনএ অনুক্রমের পরিবর্তন ঘটতে পারে। এর ফলে একজন পিতা যিনি ধুমপান করেন তার সন্তানেরা (inherit genetic damage) 'জিন' বা বংশগতি সম্বন্ধীয় ক্ষতির উত্তরাধিকারী হতে পারে। বিজ্ঞানী ও গবেষক ('Carole Yauk, Ph.D' - lead author of the study and research scientist in the Mutagenesis Section of Health Canada's Environmental and Occupational Toxicology Division.) এর মতে একজন ধুমপায়ী মাতার কারণে ভ্রূণের ক্ষতি হতে পারে, কিন্তু একজন ধুমপায়ী পিতা তার স্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের অনেক আগেই সম্ভাব্যরূপে আগত সন্তান-সন্ততির ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই যারা ভাবেন সন্তান জন্মাবার পরে ধুমপান ছেড়ে দেবেন, তারা ঠিক ভাবেন না। বরং সন্তান গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় থেকে এবং প্রচেষ্টা চালানোর বেশ আগে থেকেই ধুমপান বর্জন করা বাঞ্ছনীয়। মূল প্রবাহের তামাকের ধোঁয়ায় (Mainstream tobacco smoke - MTS) প্রায় ৪০০০ রাসায়নিক উপাদান থাকে, যেগুলোর বেশীর ভাগই (genotoxic) বংশানুগতির অন্যতম নিয়ন্ত্রক উপাদান 'জীন্‌' -এর জন্য বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। সুতরাং বলা যায় যে, যারা সরাসরি তামাকের ধোঁয়ার সংস্পর্শে এসেছে তাদের কারণে তাদেরই ভবিষ্যৎ বংশধরেরা (যারা কখনই তামাকের ধোঁয়ার সংস্পর্শে আসেনি) বংশগতি সম্বন্ধীয় রোগের বাহক হিসেবে জন্ম নিতে পারে। সুতরাং এখনই সাবধান না হলে (genetic disease) বংশগতি সম্বন্ধীয় রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা যে দিন দিন বৃদ্ধি পাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

*ধুমপানের কারণে স্বাদ ও গন্ধ নেয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়। সমপ্রতি এক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে যুবক বয়সেই ধুমপায়ীদেরকে বৃদ্ধের মত দেখায় এবং যে যত দীর্ঘ সময় ধরে যত বেশী বেশী ধুমপান করে তার মুখের চামড়া তত তাড়াতাড়ি ও তত বেশী কুঁচকে যায়। ধুমপান করলে আঙ্গুল, দাঁত ও ঠোঁট বিবর্ণ হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস, চুল ও কাপড়ে দূর্গন্ধ হয়।

*নিজে নয় দ্বিতীয় অর্থাৎ অন্য কোন ব্যক্তির কারণে ধোঁয়া শ্বাসের সঙ্গে টেনে নেয়া বা ফুসফুসে টেনে নেয়াকে পরোক্ষ ধুমপান (Passive smoking) বলা হয় এবং যা সাধারনত দুর্ঘটনাজনিত বা অনবহিতভাবে ঘটে থাকে। তামাক অর্থাৎ সিগারেট, বিরি বা চুরুটের ধোঁয়া এতই মারাত্মক যে এতে প্রায় তিনশ'র মত এমন সব রাসায়নিক উপাদান থাকে যেগুলো Carcinogenic অর্থাৎ ক্যান্সার উৎপন্ন করে। পরোক্ষ ধুমপান প্রত্যক্ষ ধুমপানের মতই মারাত্মক ও প্রাণঘাতি। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, তামাকের ধোঁয়ার সংস্পর্শে এলে হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার থেকে শুরু করে আরও অনেক গুরুতর স্বাস্থ্যহানী ঘটতে পারে। ক্যালিফোনিয়া এনভায়র্নমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সি -(California Environmental Protection Agency) এর মতে অক্রিয় ধুমপানের কারণে মহিলাদের স্তন-ক্যান্সার ও অপূর্ণকালিক সন্তান প্রশবের হার বেড়ে যায়। তাছাড়া এর ফলে হাঁপানি, ফুসফুসে ইনফেক্সন ও রক্তসঞ্চালনে সমস্যা হতে পারে। পরিবারে পিতা-মাতা ও অন্যান্য সদস্যদের ধুমপানের কারণে নিষ্পাপ কোলের-বাচ্চা ও ছোট ছোট শিশুরা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হতে পারে। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে ধুমপায়ীদের শিশু-সন্তানেরা খুব সহজেই কাশি, সর্দি, ফুসফুসের সমস্যা তথা ব্রঙ্কিয়াল এজমা, কানের ইনফেক্সন, হৃদরোগ, এমনকি পরবর্তী জীবনে ফুসফুসের ক্যান্সারেও আক্রান্ত হতে পারে এবং মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আশ্চর্যের বিষয় হলো; 'Colorado State University' ও 'University of Massachusetts'-এর পর্যবেক্ষণ অনুসারে ধুমপায়ী গৃহস্বামী ও অন্যান্য সদস্যদের ধুমপানের কারণে নিরীহ গৃহপালিত পশুরাও রেহাই পাচ্ছে না এবং এর ফলে গৃহপালিত কুকুর- 'Canine lung cancer' ও বিড়াল- 'Feline lymphoma' নামক অজ্ঞাত ক্যন্সারে আক্রান্ত হচ্ছে।

*তামাকের ধোঁয়া তেল-চালিত যানবাহন অপেক্ষা অনেক বেশী পরিমাণে পরিবেশকে দূষিত করে। সমপ্রতি ন্যা্লাল ক্যান্সার ইন্‌স্টিটিউট - ('particular matter' - PM emission test) 'পদার্থ কণিকা নির্গতকরণ পরীক্ষা'-এর মাধ্যমে গবেষণা চালিয়ে প্রমাণ করেছে যে, ডিজেল চালিত মন্দগতিতে চলা যন্ত্রের চেয়েও তামাকের ধোঁয়া অধিক হারে দূষণ সৃষ্টি করে।

*আর্থিক ক্ষতির কথা বিচার বিশ্লেষণ করলে একজন ধুমপায়ীকে “সচল টাকা পোড়ানর যন্ত্র”-এর সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। সে নিজে যেমন তার আয়ের একটা বড় অংশ বিষপানে ব্যয় করে, তেমনি অন্যদেরকে অনিচ্ছা সত্বেও বিষপানে বাধ্য করে। একজন ধুমপায়ীকে অমিতব্যয়ী বললে অত্যুক্তি হবে না এবং এতে তার রাগ করারও কিছু নেই। হিসেবের খাতা খুললে সে নিজেই তার বাস্তব প্রমাণ পেয়ে যাবে।

*মানুষ মহান স্রষ্টা আল্লাহতায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। স্রষ্টার প্রতিনিধি হিসেবে সকল সৃষ্টিকুলের হিত সাধনের দায় মানুষের উপরেই বর্তায়। একজন ধুমপায়ী কখনই একজন খাঁটি মানবতাবাদী নয়। যারা সিগারেট জ্বালিয়ে আঙ্গুলের ডগায় নাচিয়ে নাচিয়ে মানবতার কথা বলে, তারা নিজের সাথে নিজেরাই প্রতারনা করে। অক্রিয় ধুমপায়ীরা যদিও এ অপরাধের সাথে সরাসরি জড়িত নয়। তবে যারা ধুমপায়ীদেরকে ধুমপান থেকে বিরত রাখার জন্য চেষ্টা করেনা বা অন্ততপক্ষে এর বিরুদ্ধে কিছুই বলেনা, তারাও কিন্তু এ অপরাধের দায় থেকে পুরপুরি মুক্ত নয়। সুতরাং আসুন একজন দায়িত্ববান মানুষ হিসেবে ধুমপানের মত মানবতা বিরোধী, মারাত্মক ও মন্দ নেশাকে চিরতরে বর্জন করে সুস্থ ও কর্মময় জীবনের জন্য শপথ নেই। তরতাজা হৃদপিন্ড ও ফসফুসের অধিকারী হয়ে নিজেরা বুক ভোরে বিশুদ্ধ নিঃশ্বাস নেই এবং অপরকেও সে সুযোগ করে দেই। আমাদের চারপাশে যারা আছে সবার কথা ভেবে, বিশেষ করে নিষ্পাপ শিশুগুলোর মায়াভরা মুখের দিকে তাঁকিয়ে তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য তামাক-মুক্ত ও দূষণমুক্ত পরিবেশ গঠনে উদ্যোগী হই।





এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান    বন্ধ করুন





এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান    বন্ধ করুন

আপনার নিজস্ব ই-মেইল ক্লায়েন্ট ব্যবহার করতে চাইলে এখানেক্লিক করুন

আপনার নাম :

আপনার ই-মেইল

আপনার বন্ধুদের ইমেইল


or e-mail me
diu-salamsony@diu.edu.bd
mobile :01611820639









« Last Edit: July 05, 2010, 07:00:02 AM by BRE SALAM SONY »
আল্লাহর রহমতে প্রতি বছর হজে যাওয়ার সুযোগ হচ্ছে।এভাবেই হাজীদের খেদমত করে যেতে চাই।
01711165606

আমার প্রতিষ্ঠান www.zilhajjgroup.com
www.corporatetourbd.com