বিল গেটসের কাছে প্রযুক্তির চেয়ে মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে এবং পৃথিবীকে পরিবর্তন করতে পারে এমন গবেষণার গুরুত্ব বেশি। ম্যালেরিয়া নিয়ে গবেষণার গুরুত্বের কাছে সারা বিশ্বে সবার কাছে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার চিন্তাকে মশকরা বলেই মন্তব্য করেন তিনি।
সম্প্রতি ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস প্রযুক্তির চেয়ে মানুষের জীবন বাঁচানোর উপযোগী অত্যাবশ্যকীয় গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেন।
পৃথিবীকে কোন জিনিসটি সুন্দর করে তুলতে পারে-এ বিষয়টি নিয়ে সাক্ষাত্কারে বিল গেটস বলেন, ‘প্রযুক্তি দারুণ একটি জিনিস। কিন্তু পৃথিবীকে রক্ষা করার মতো নয়। প্রযুক্তির উন্নয়ন করলে কিছু সুবিধা মেলে কিন্তু পৃথিবীতে সবচেয়ে জরুরি যে সমস্যাগুলো সমাধান করা দরকার তা সম্ভব হয় না।’
বিল গেটস জানিয়েছেন, ‘আমি তথ্য-প্রযুক্তির বিষয়গুলো পছন্দ করি। কিন্তু আমরা যখন মানুষের জীবন উন্নত করতে চাই তখন আমাদের শিশু মৃত্যুর হার কমানো, শিশুর পুষ্টি প্রভৃতি বিষয়গুলোতে নজর দেওয়াটা জরুরি। কম্পিউটারের চেয়ে মানুষের জীবনের পাঁচটি মৌলিক চাহিদাকে গুরুত্ব দিতে হয় বেশি করে।’
মার্ক জাকারবার্গ সহ কয়েকজন প্রযুক্তি মোগল যখন ইন্টারনেটকে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন ঠিক তখনই ভিন্ন মত প্রকাশ করলেন মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। স্যামসাং, কোয়ালকম, এরিকসন, মিডিয়াটেক, নকিয়া ও অপেরার সঙ্গে চুক্তি করে বিশ্বজুড়ে সাশ্রয়ী ইন্টারনেট ব্যবস্থা তৈরির এ উদ্যোগটি নিয়েছেন ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। মার্ক জাকারবার্গের প্রকল্পটির নাম ‘ইন্টারনেট ডট ওআরজি’। চলতি বছরের ২১ আগস্ট কোনো এ প্রকল্পটির ঘোষণা দেন তিনি। জাকারবার্গ জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট সুবিধাবঞ্চিত ৫০০ কোটি মানুষের কাছে কম খরচে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প ইন্টারনেট অর্গানাইজেশন।
ইন্টারনেট সংযোগের চেয়ে ম্যালেরিয়ার টিকা আবিষ্কারকে গুরুত্ব দেন কিনা-এ প্রশ্নের উত্তরে বিল গেটস জানান, বাস্তবিক বিচারে অগ্রাধিকারের গুরুত্বের হিসাব করলে ম্যালেরিয়ার টিকা উদ্ভাবনের কাছে ইন্টারনেট সংযোগের তুলনা করা কৌতুকের বিষয়ের মতো। সকলে ইন্টারনেট সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ মনে করলেও আমি তা মনে করি না।
প্রসঙ্গত, বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিল গেটস ম্যালেরিয়া, এইডস, পোলিওর টিকা নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতে প্রচুর অর্থ খরচ করছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দারিদ্র্য ও স্বাস্থ্যসেবায় বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে।