সাত বছর ধরে সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে খেলছেন। তাঁকেই আইডল মানেন গলফার জামাল হোসেন মোল্লা। সিদ্দিকুরের হিরো ইন্ডিয়া ওপেন জয়ের আনন্দটা অন্যদের মতো ছুঁয়ে গেছে এই উদীয়মান পেশাদার গলফারকেও।
জামাল হোসেন মোল্লাl নিশ্চয়ই দিল্লির হিরো ইন্ডিয়া ওপেন গলফ দেখেছেন?
জামাল হোসেন মোল্লা: দেখেছি। আমরা কয়েকজন গলফার একসঙ্গে ক্লাবে খেলা দেখেছি। আমরা সবাই খুব টেনশনে ছিলাম সিদ্দিক ভাইকে নিয়ে। ভাবছিলাম, ট্রফিটা না হাতছাড়া হয়ে যায়! এত সুন্দর শুরু। কিন্তু শেষ রাউন্ডে এসে কেমন যেন গুলিয়ে ফেলছিলেন। যখন ১৫ নম্বর হোলে খুব বাজে খেললেন, আমাদের খারাপ লাগছিল। আবার ১৭ নম্বরে যখন বার্ডি করলেন অসাধারণভাবে, একটু হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।
l সিদ্দিকুরের এই জয়টা আপনাদের জন্য কতটুকু অনুপ্রেরণার।
জামাল: আসলে এই জয়টা সিদ্দিক ভাইয়ের অনেক দরকার ছিল। সামনেই বিশ্বকাপ। সিদ্দিক ভাই জিতেছেন, এটা অবশ্য আমাদের জন্য গর্বের এক ব্যাপার। সিদ্দিক ভাইয়ের পরে আমরাই আছি। আমাদের যারা সমর্থন দেয়, স্পনসর করে তারাও খুব আশাবাদী হবে। ভবিষ্যতে আমরাও তার দেখাদেখি অনেক ভালো করব। সিদ্দিকের মতো গলফার বের করার চেষ্টা করবেন সবাই। আমাদের দেশে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছেন। সত্যি বলতে কী, আমরা যারা বাইরে গিয়ে খেলি, আমাদের অনেক সাহস বেড়ে গেল।
l শুরুটা ভালো করেও শেষ রাউন্ডে খেই হারিয়ে ফেলছিলেন সিদ্দিকুর। কী বলবেন এটাকে?
জামাল: দিল্লিতে খেলেছেন চৌরাসিয়া, অনির্বাণ লাহিড়ির মতো গলফার। আমি এই দুজনের সঙ্গেই খেলেছি। ওরা খুবই ভালো গলফার। এখানে যিনি মাথা ঠান্ডা করে খেলতে পারবেন, তিনিই ভালো করবেন। আমার মনে হচ্ছিল, এই টুর্নামেন্টে অনেক নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন সিদ্দিক ভাই। ৪ শট লিড নিয়েও এভাবে কেন নার্ভাস হচ্ছিলেন, ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। গলফ খেলা কখনো ভালো হয়, কখনো খারাপ হয়। চাপটা অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ করতে জানতে হয়। আমি দেখেছি উনি অনেক বড় টুর্নামেন্টে তিন রাউন্ড পর্যন্ত লিডে থেকে শেষ রাউন্ডে খারাপ করেন। চাপটা নিয়ন্ত্রণ করতে কষ্ট হয়। এবার কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।
l গত মাসে ম্যাকাও ওপেনে প্রিয় গলফার আর্নি এলসের সঙ্গে খেলেছিলেন সিদ্দিকুর। এই টুর্নামেন্ট জয়ে কি সেটার কোনো প্রভাব আছে?
জামাল: অবশ্যই। বড় গলফারের সঙ্গে খেললে অনেক কিছু শেখা যায়। উনি এবার আর্নি এলসের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন। এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন সেটাই প্রমাণ করেছে। আমরাও সিদ্দিক ভাইয়ের সঙ্গে যখন খেলি তখন তার খেলা খুব মন দিয়ে দেখি। উনি দেশে থাকলে আমরা উনার পিছু ছাড়তে চাই না। সারাক্ষণ উনার সঙ্গে চলি। আড্ডা দিই। অনেক কিছু শিখি।
l বিশ্বকাপের আগে এমন একটা জয়। বিশ্বকাপে তাঁকে ঘিরে আপনাদের কী প্রত্যাশা?
জামাল: আমার কাছে মনে হচ্ছে বিশ্বকাপে উনি অনেক ভালো করবেন। সেরা পাঁচে ঢুকে পড়তে পারেন। তবে ওখানে যদি আবহাওয়া ভালো থাকে, তাহলে অনেক ভালো খেলতে পারেন। আসলে বেশি ঠান্ডায় গলফ খেলতে সমস্যা হয়।
l আপনিও নাকি এশিয়ান ট্যুরে খেলবেন?
জামাল: আমি অনেক দিন থেকেই ভাবছি, এশিয়ান ট্যুরে খেলব। আমি খেললে সিদ্দিক ভাই অন্তত সঙ্গী পাবেন একজন। দুজনে কথা বলতে পারব। গল্প করতে পারব। অনেক বড় মানসিক সমর্থন পাবেন। সিদ্দিক ভাই প্রায়ই বলেন, আমি একা একা খেলি। ভালো লাগে না। কিন্তু এখানে খেলতে হলে শুরুতে ৩ হাজার ডলার লাগে। এত টাকা জোগাড় করা আমাদের জন্য একটু কঠিন হয়ে যায়।