Entertainment & Discussions > Cricket

অবশেষে গুরু শচীনকে বললেন, ‘ভালো খেলেছ’!

(1/1)

maruppharm:
তিনি নাকি কখনোই শচীন টেন্ডুলকারের খেলার প্রশংসা করেননি। কখনোই বলেননি ‘ওয়েলডান’ বা ‘ওয়েলপ্লেইড’। ‘ভালো খেলেছ’—এ কথাটা শোনার জন্য ব্যাকুল হয়ে ছিলেন টেন্ডুলকার। নিজের বিদায়ী ভাষণেও সেই কথা বলেছেন তিনি। অবশেষে রমাকান্ত আচরেকার শিষ্যকে ভাসালেন প্রশংসার সাগরে। অবসরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গুরুর ফোন পেয়ে গেলেন টেন্ডুলকার। শুনলেন স্যার বলছেন, ‘কনগ্র্যাচুলেশনস ফর ভারতরত্ন’। একটু থেমেই বললেন, ‘ওয়েলডান ফর ইওর লং জার্নি, ‘ওয়েল প্লেইড মাই বয়।’
খেলোয়াড়ি জীবনে সারা পৃথিবীর প্রশংসার সাগরে ভাসলেও গুরুর কাছ থেকে কখনোই প্রশংসা পাননি টেন্ডুলকার। স্যার আচরেকার ভেবেচিন্তেই শিষ্যকে প্রশংসা থেকে দূরে রেখেছিলেন। পাছে, অহংবোধ জন্ম নেয় তাঁর মধ্যে! পাছে টেন্ডুলকার আত্মতৃপ্তিতে ভোগে, পরিশ্রম করা কমিয়ে দেয়। বিদায়ী ভাষণে সে কথাই উল্লেখ করে টেন্ডুলকার বলেছিলেন, ‘আর যেহেতু মাঠেই নামব না, স্যার নিশ্চয়ই এখন আমাকে বলতে পারেন, ‘ওয়েল প্লেইড।’ একলব্যের সেই চাওয়াই পূরণ করে দিলেন দ্রোণাচার্য।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টেন্ডুলকারের বিদায়ী বক্তৃতার সময় টেলিভিশনের সামনেই ছিলেন স্যার আচরেকার। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এই প্রবীণ ক্রিকেট প্রশিক্ষক বাড়ির ড্রয়িংরুমে বসেই শিষ্যের আবেগময় ভাষণে আবেগে ভেসেছেন। নিজের সম্পর্কে ওই কথাটা শোনার পর থেকেই নাকি ছাত্রকে একটা ফোন করার জন্য ছটফট করছিলেন তিনি। মেয়ে কল্পনা মুরকর সন্ধ্যার সময়ই টেন্ডুলকারের সঙ্গে তাঁর কথা বলার ব্যবস্থা করে দেন।
গুরুর প্রশংসা পেয়ে টেন্ডুলকার বলেছেন, ‘আমার জীবন এত দিনে পূর্ণতা পেল। স্যারের কাছ থেকে প্রশংসা শুনেছি। আমার আর কী লাগে!’

আপ্লুত টেন্ডুলকার তক্ষুনি গাড়ি নিয়ে আচরেকারের বাড়িতে আসতে চেয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল গুরুর পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নেবেন। ফোনে বলেছিলেন, ‘স্যার, আমি এক্ষুনি আসছি। আমাকে আশীর্বাদ করবেন।’ বিব্রত আচরেকর বুঝিয়ে-শুনিয়ে সামলান ছাত্রকে, ‘না, এখনই এসো না। তুমি খুব ক্লান্ত। অনেক ধকল গেছে তোমার ওপর দিয়ে। সময় করে কাল-পরশু যেকোনো সময় চলে এসো।’

টেন্ডুলকারের অবসর সিদ্ধান্তটি অবশ্য পছন্দ হয়নি আচরেকারের। মেয়ে কল্পনা জানিয়েছেন, ‘বাবা মনে করেন টেন্ডুলকার আরও দুই-এক বছর খুব ভালোভাবেই খেলে যেতে পারতেন।’

বিপুল ব্যবধানেই তাঁর ‘সেরা ছাত্র’ হয়ে গেছেন অনেক বছর আগেই। কিন্তু আচরেকারের মতে, টেন্ডুলকার ক্রিকেটেরই এক বিরল প্রতিভা। নয়তো কোনো ক্রিকেটারের পক্ষে ২৪ বছর ফিটনেস ধরে রেখে খেলে যাওয়া সম্ভব নয়।

আচরেকার চান না তাঁর ছাত্র খেলা ছেড়ে রাজনীতি করুক। সাবেক ভারতীয় অলিম্পিয়ান মিলখা সিং ইতিমধ্যেই টেন্ডুলকারকে ভারতের ‘ক্রীড়ামন্ত্রী’ বানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু আচরেকার চান না টেন্ডুলকারকে এমন কোনো দায়িত্ব দেওয়া হোক। তিনি চান তাঁর ছাত্র ভবিষ্যতের ক্রিকেটারদের তৈরি করুক। ক্রিকেট প্রশাসনে নিজের ভূমিকা রাখুক। রাজনীতির কলুষ তাঁকে কখনো যেন ছুঁতে না পারে, বৃদ্ধ আচরেকার বাড়িতে বসে এখন সেই প্রার্থনাই করে যাচ্ছেন। ওয়েবসাইট।

Navigation

[0] Message Index

Go to full version