বাজারে প্রচলিত বৈদ্যুতিক পণ্যের ব্র্যান্ডগুলো নকল করে বাজারজাত করছে কয়েকটি চক্র।
চীন থেকে কম দামে বৈদ্যুতিক পণ্যের খুচরা সরঞ্জাম আমদানি করে চট্টগ্রামে এসব পণ্য সংযোজন করে এ চক্রগুলো। এরপর নানা ব্র্যান্ডের নামে তা বাজারজাত করা হচ্ছে। বেশি লাভের কারণে খুচরা ব্যবসায়ীরাও ঝুঁকছেন এসব পণ্যের বিপণনে। মানহীন এসব বৈদ্যুতিক পণ্য ব্যবহার করে নানা দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব পণ্য দেখে আসল-নকল সহজে বোঝার উপায় নেই। তাই ক্রেতারা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।
এসব চক্রের কারণে বিএসটিআই থেকে অনুমোদন নেওয়া কোম্পানিগুলোও ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান।
জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রায় ৭০ শতাংশ হয় বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে। বাজারে মানহীন কেব্ল, সুইচ, হোল্ডারসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহারের কারণে এসব দুর্ঘটনা বেশি ঘটে বলে তিনি জানান।
বিএসটিআই চট্টগ্রাম কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নগরে নিয়মিত অভিযানে এমন বৈদ্যুতিক পণ্যের নকল সংযোজন কারখানার সন্ধান পাচ্ছেন বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তারা।
গত রোববার নগরের পূর্ব মাদারবাড়ি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনের চতুর্থ তলায় অভিযান চালিয়ে একটি নকল কারখানার সন্ধান পান কর্মকর্তারা। মেসার্স ইমা এন্টারপ্রাইজের মালিক আবুল কাশেম এ চক্রের হোতা। তাঁর কারখানা থেকে সুইচ, সকেট ও ফ্যান রেগুলেটরের মতো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
অভিযানে দেখা যায়, বাজারে প্রচলিত এজিএস, ডেংকুইন এবং এম এ ব্র্যান্ডের নাম লিখে ক্রেতাসাধারণের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। এসব পণ্যের মোড়কে লেখা আছে ‘মেইড ইন চায়না’। অনুমোদন নেওয়া ব্র্যান্ডগুলোর চেয়ে নকল পণ্যের দাম কম থাকায় বাজারে এসব পণ্যের চাহিদাও বেশি বলে জানা গেছে।
বিএসটিআই চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক শওকত ওসমান বলেন, ‘বাজারে বৈদ্যুতিক পণ্য সংযোজন বা উৎপাদন করে বাজারজাত করতে হলে বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক। যেসব প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স ছাড়াই নানা ব্র্যান্ডের পণ্য বাজারজাত করছে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।’
তবে বিএসটিআইয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, নকল পণ্য তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো ধরা পড়ার পর জায়গা বদল করে নতুন করে পণ্য বাজারজাত করে। এ কারণে ধারাবাহিক অভিযান ছাড়া এসব নকল পণ্যের বাজারজাত বন্ধ করা সম্ভব নয়।
source: prothom alo