Faculty of Science and Information Technology > Science and Information
মাটি খাওয়ার ফজিলত!
(1/1)
snlatif:
অনেকের জীবন অনেকভাবেই মাটি হয়ে যায়। তবে মাটি খেয়ে জীবন মাটি করার মতো অপরাধ বোধ হয় আর কোনোটার সঙ্গেই তুল্য নয়। অপরাধটা করে থাকে মূলত ছোট ছেলেমেয়েরা। মা-বাবার কড়া নজরদারির ফাঁক গলে তীব্র কৌতূহল নিয়ে মাটির স্বাদ পরীক্ষার ব্যাপারটা প্রায় শিশুর ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে। আর ঘটনাটা ঘটে গেলে শুরু হয় অভিভাবকদের বকাঝকা। চরম নিষেধ সত্ত্বেও কোনো কোনো শিশু বিষয়টায় খুব মজা পায় এবং সুযোগ পেলেই অভিভাবকদের নজর এড়িয়ে কাজটা করে। আবার অনেক শিশু আছে, যারা ফলমূল ইত্যাদিতে মাটি বা ময়লা মাখিয়ে তারিয়ে তারিয়ে খায়। পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলেন, ময়লা বা আবর্জনা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এমনকি তা জীবনের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ। মাটি বা মাটিজাতীয় জিনিস যেমন_কাদা, চক ইত্যাদি খাওয়ার চল বিশ্বের প্রায় সব দেশেই ঘটে। ইংরেজিতে এর নাম ‘জিওফ্যাজি’। ইতিহাসে দুই হাজার বছরেরও আগে হিপোক্রেটিস রচিত গ্রন্থে জিওফ্যাজির রসালো বর্ণনা আছে। এর অর্থ আদি গোষ্ঠীমানবের মধ্যেও বিষয়টি প্রচলিত ছিল এবং এ নিয়ে সে আমলেও উদ্বেগ কম ছিল না।
কিন্তু ব্যাপারটা কি সত্যি অতটা ঝুঁকিপূর্ণ? বিষয়টা কৌতূহলী করেছে বিজ্ঞানীদেরও। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অবস্থিত কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বছরখানেকের ওপর বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁরা বিশ্বের ৪৮০টি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে এ রকম ময়লা বা আবর্জনাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ার রীতি বা জিওফ্যাজি বিশ্লেষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। বিষয়টি কোথাও ‘সুখাদ্য’ হিসেবে বিবেচিত নয়। গবেষকরা এরপর শুরু করেন মাটির গুণাগুণ ও হজম পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা। গবেষণার ফলাফলে আশ্চর্য হওয়ার পালা। জীববিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ‘দ্য কোয়ার্টারলি রিভিউ অব বায়োলজি’তে প্রকাশিত এ গবেষণায় বলা হয়, মাটি বা কাদা খাওয়া সত্যি সত্যি পাকস্থলীর জন্য ভালো। মাটিতে জিংক, খনিজ লোহা ও ক্যালসিয়ামজাতীয় উপাদান মিশে থাকে। মাটি গ্রহণকারী এটা সরাসরি পেয়ে যায়। গলাধঃকরণের সময় এর সঙ্গে যেসব জীবাণু প্রবেশ করে, তাদের ধ্বংস করার জন্য মাটি নিজেই পাকস্থলীতে শক্ত ঢাল তৈরি করে। তবে একই সঙ্গে টঙ্নি উৎপাদন করে।
গবেষকদলের প্রধান ড. সেরা ইয়াং বলেন, জিওফ্যাজির প্রথম লিখিত যে তথ্য পাওয়া যায়, তা দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় আগের। গবেষকরা বলছেন, ‘আমাদের এ গবেষণা আরো গবেষকদের প্রেরণা জোগাবে। এর চেয়ে বড় ব্যাপার, আমরা আশা করব মানুষ আর জিওফ্যাজিকে উদ্ভট বলে মনে করবে না।’
না, আমরা বলছি না এই গবেষণার ফল দেখে আপনার সন্তানকে মাটি খাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেবেন। তবে কারো যদি মাটি বা এ রকম কিছু খাওয়ার বদ অভ্যাস তৈরি হয় এবং কিছুতেই সেটা দূর করা না যায়, তো ধরে নিন সে এটা হজম করতে শিখে ফেলেছে। দুশ্চিন্তা করবেন না, মাটি তার পাকস্থলীতে একটা হজমি ঢাল তৈরি করেছে, যা তাকে পেটের ব্যামো থেকে সুরক্ষা দেবে।
সূত্রঃ:দেহ:: জীবনের ঠিকানা।
Navigation
[0] Message Index
Go to full version