Faculties and Departments > Allied Health Science
কালাজ্বর
(1/1)
snlatif:
কালাজ্বর একটি দীর্ঘস্থায়ী এবং প্রাণনাশক জীবাণূঘটিত রোগ যা লিশম্যানিয়াসিস রোগের কয়েকটি প্রকারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর। হিন্দি দুটি শব্দ কালা এবং আজর থেকে কালাজ্বর শব্দটি এসেছে। কালা অর্থ কাল এবং আজর শব্দের অর্থ ব্যাধি। তাই যে অসুখে ভুগলে শরীর কালো হয়ে যায় তাকে কালাজ্বর বলে। এটি প্লীহা, অস্থিমজ্জা, যকৃত এবং লসিকানালীর মত আভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রতঙ্গে আক্রমণ করে।
লিশম্যানিয়া গণভুক্ত এক প্রকার প্রোটোজোয়া পরজীবী এই রোগটি ঘটায় এবং বেলেমাছির কামড়ের দ্বারা এটি বিস্তার লাভ করে। পরজীবী-ঘটিত রোগগুলোর মধ্যে এটি দ্বিতীয় প্রাণঘাতী রোগ; ম্যালেরিয়ার পরেই এর স্থান। লিশম্যানিয়াসিসে প্রতি বছর পৃথিবীতে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।
পরজীবীটি মানুষের কলিজা, প্লীহা ও অস্থিমজ্জাতে সংক্রমন ঘটায় এবং চিকিৎসা না দিলে মৃত্যু প্রায় অবধারিত। এই রোগের লক্ষণ হলো, জ্বর, ওজন হ্রাস, ক্ষত, অবসাদ, রক্তাল্পতা, চামড়া কালচে হওয়া এবং কলিজা ও প্লীহার আকার বৃদ্ধি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, কালা জ্বর এইচআইভি সংক্রমণের সহযোগীরূপে আবির্ভূত হয়ে নতুন সংকটের জন্ম দিচ্ছে।
বিস্তারঃ
পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই রোগটি আছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ, চীন, ভারত, দক্ষিণ আমেরিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোতে এটি ব্যাপকভাবে দেখা যায়। সমগ্র পৃথিবীর প্রতি দশটি কালাজ্বর রোগির মধ্যে নয়টিই বাংলাদেশ, ভারত, ব্রাজিল ও সুদান এই চারটি দেশে বিদ্যমান। বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারতের 'মানুষ' এই রোগের উৎস রূপে চিহ্নিত হলেও চীন ও ব্রাজিলে 'কুকুর' এই রোগের উৎস। বাংলাদেশের ৪৬ টি জেলায় কালাজ্বর দেখা যায়, এর মধ্যে ময়মনসিংহ, পাবনা, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও জামালপুর অঞ্চলে এই রোগটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। দরিদ্র জনগোষ্ঠী যারা মাটির ঘরে বাস করে বা গোয়ালঘরের আশে পাশে থাকে তারাই বেশি এই রোগে আক্রান্ত হয়, কারণ বেলেমাছি বাস করে মাটির ফাটলে বা আবর্জনার নিচে।
যেভাবে ছড়ায়ঃ
১. স্ত্রী ফ্লেবোটোমাস স্যান্ড ফ্লাই (Phlebotomus Sand Fly) মাছির কামড়ানোর মাধ্যমে মানুষের শরীরে কালা জ্বরের জীবাণু ছড়ায়।
২. কালাজ্বরের জীবাণুবাহী মাছিগুলো সন্ধ্যায় এবং রাতেই বেশি কামড়ায়। যদিও দিনে প্রখর সূর্যের আলোতে খুব একটা কামড়ায় না তবে অনেক সময় ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কারের সময় দিনের বেলাতেও এরা কামড়ায়।
৩. কামড়ানোর দুই থেকে ছয় মাসের মধ্যে রোগের সংক্রমণ ঘটে।
লক্ষণ ও উপসর্গঃ
১. দূর্বলতা
২. ক্ষুদামন্দা
৩. বার বার জ্বর আসা
৪. রক্তশূন্যতা
৫. লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া
৬. যকৃত এবং প্লীহা ফুলে যাওয়া
চিকিৎসালয়ঃ
১. উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
২. জেলা সদর হাসপাতাল
৩. মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
৪. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
৫. বেসরকারী হাসপাতাল
পরীক্ষাঃ অস্থি মজ্জা থেকে স্মেয়ার নিয়ে জীবানু সনাক্ত করা হয়, লিম্ফ নোড, লিভার বা প্লিহা থেকেও স্মেয়ার নেয়া যায়, এসব কালচার করেও জীবানু নিশ্চিত করা যায়। রক্ত (সেরোলোজিকাল) পরীক্ষার মাধ্যমে ও এই রোগ নির্ণয় (৯৫%) করা যায়।
চিকিৎসাঃ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সোডিয়াম স্টিলবোগ্লুকোনেট নামক ঔষধ শিরায় প্রয়োগ করতে হয়।
সূত্রঃ:দেহ:: জীবনের ঠিকানা।
Navigation
[0] Message Index
Go to full version