ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড সায়েন্স ফোরাম’এ বিজ্ঞানীরা জানান, আগামী বছরের মাঝেই এরকম একটি স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা হবে, যেটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস জানাতে পারবে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা গত সপ্তাহে তাঁদের একটি নতুন প্রকল্প একটি কনফারেন্সে প্রদর্শন করেছেন যেটি ভূমিকম্পের ঝুঁকির ব্যপারে মানুষকে আগে থেকেই সতর্ক করতে সক্ষম হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সেসিমোলজিক্যাল ল্যাবরেটরির পরিচালক অধ্যাপক রিচার্ড এলেনের অধীনে একটি দল ভূমিকম্পের পূর্বাভাস সংক্রান্ত সতর্ক সংকেত দিতে সক্ষম এরকম প্রযুক্তি নির্ভর অ্যাপ্লিকেশনটি তৈরি করেছে। ইতোমধ্যেই ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর এটি তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিয়েছেন।
এই স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহারকারীর অবস্থান ভূমিকম্পের কেন্দ্র বা এপিসেন্টার থেকে কতটুকু দূরে অবস্থান করছেন, সেটির উপর ভিত্তি করে কম্পন সৃষ্টি হওয়ার কয়েক সেকেন্ড থেকে এক মিনিট সময়ের মাঝেই সতর্ক সংকেত দিতে সক্ষম। আর এটি করার জন্য অ্যাপ্লিকেশনটি ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট কম্পন থেকে তৈরি হওয়া প্রাথমিক তরঙ্গকে (P wave or primary wave) রেকর্ড করে রাখে। বিশেষ এলগরিদম ব্যবহার করে এই এপ্লিকেশনটি কখন একটি ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়েছে , এটির শক্তিমাত্রা কত ও উৎপত্তি স্থান কোথায়, আনুমানিক কখন এটি সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে আঘাত হানতে পারে সেটি নির্ণয় করবে। এরপর ঐ এলাকার মানুষদেরকে সতর্ক সংকেত দিবে। এই প্রযুক্তি ভূমিকম্পের এপিসেন্টার বা উৎপত্তি স্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম।
আর এই আগাম সতর্ক সংকেত মানুষকে সাহায্য করবে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে কিংবা শিল্প-কারখানা বা যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিতে, যাতে ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে আনা যায়। এই অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহার করা হবে এক্সিলারেটোমিটার, গাইরোস্কোপ, জিপিএস, ওয়াই-ফাই লোকেটর ও ম্যাগনেটোমিটার।
সারা বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ১ বিলিয়ন মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, ক্যালিফোর্নিয়াতে এই সংখ্যাটি প্রায় ১৬ মিলিয়ন।