আমরা বাঙালিরা অনেকেই না জেনে অনেক ভুলভাবে খাওয়াদাওয়া করছি। কিন্তু একটু জেনে-বুঝে খেলে অনেক সুন্দর স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায়। তাই আপনাদের জন্য কিছু ভালো ডায়েট টিপস দেওয়া হলো—এগুলো প্রতিদিন সঠিকভাবে খাবার খাওয়ার জন্য খুবই দরকারি।
ডায়েটিং কী?
ডায়েটিং মানে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যগুলোকে পরিমিত ও সুষমভাবে খাওয়া। সাধারণত ওজন কমানো ও ওজনকে স্থিরভাবে ধরে রাখার জন্য ডায়েটিং করা হয়। সুস্থ ও স্লিম থাকার জন্য ডায়েটিং করা দরকার। সে ক্ষেত্রে কম শর্করা, কম ক্যালোরি, কম ফ্যাটযুক্ত খাবার খেতে হবে। প্রতিদিনের ডায়েট চার্টে সব ধরনের খাদ্য উপাদান অর্থাত্ ভিটামিন, শর্করা, আমিষ, ফ্যাট, মিনারেল, ফাইবার, পানি ইত্যাদি থাকলেই সেটা হবে আদর্শ ডায়েট।
প্রতিদিনের এনার্জি ডায়েট টিপস
* প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা জরুরি। মহিলাদের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ গ্লাস (২ লিটার), পুরুষদের জন্য ১২ গ্লাস (৩ লিটার) পানি খেতে হবে। এটি সারাদিনের সব রকমের পানীয়ের হিসাব। তবে যারা ব্যায়াম করেন, তারা আরও বেশি পানি পান করবেন।
* রাতের খাবার ঘুমানোর তিন ঘণ্টা আগে খেতে হবে। কারণ, রাতে ঘুমানোর সময় ক্ষুধা লাগলে কিছু না খাওয়াই ভালো, তবে ননী বা ফ্যাট ছাড়া দুধ খেতে পারেন।
* খাবারে শর্করার পরিবর্তে সবজি ও ফল রাখা দরকার, কারণ এগুলোতে আছে প্রচুর ভিটামিন, ফাইবার।
* সালাদ বেশি বেশি খাওয়া, দুপুর ও রাতের খাবারের সাথে অবশ্যই সালাদ থাকবে ।
* মাছ অবশ্যই খেতে হবে, মাংস কম খেয়ে মাছ বেশি খেলে ভালো। লাল মাংস, যেমন গরুর মাংস না খাওয়া ভালো ।
* সাদা আটার রুটি না খেয়ে লাল আটার রুটি খাওয়া ভালো। কারণ লাল আটা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তেমনি সাদা শর্করা, যেমন সাদা চালের ভাত বাদ দিয়ে লাল চাল খাওয়া ভালো।
* কাঁচা ছোলা প্রতিদিন খাওয়া অভ্যাস করতে হবে। কারণ এগুলোতে আছে কম ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল কমানোর উপাদান রয়েছে। তা ছাড়া ভিটামিন বি আছে এগুলোতে। যা হজম শক্তি বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।
* ঘুমানোর আগে দুধ খাওয়া উচিত, অবশ্যই ননীবিহীন দুধ।
* প্রতিদিন টক দই খাওয়া, চিনি ছাড়া।
* মহিলাদের জন্য ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার :দুধ, টক দই প্রতিদিন খেতেই হবে।
* ভাত কম খেয়ে সবজি, ফল, সালাদ বেশি খাওয়া।
* প্রতিদিনে ৫-৬ বার খাওয়া।
* দুই, তিন ঘণ্টা পর পর ২০০-৩০০ ক্যালোরি খাওয়া সবচাইতে ভালো অভ্যাস।
* ভাজা পোড়া, বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা।
* প্রাণিজ আমিষ সব সময় না খেয়ে উদ্ভিজ আমিষ বেশি খাওয়া। কারণ উদ্ভিজ আমিষে ফ্যাট কম থাকে।
* প্রতিদিন একমুঠো কাঠবাদাম খাওয়া, এতে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে, কোলেস্টেরল কমে।
* প্রতিবার খাবারে আমিষ খেতে হবে পরিমাণমতো। আমিষ হতে পারে—মাছ, সাদা মাংস (মুরগির মাংস ইত্যাদি), বিনস, বাদাম, ডাল, পনির, দই ইত্যাদি। কারণ আমিষে শর্করার তুলনায় কম ক্যালোরি থাকে, এটা পেট ভরা রাখে ও ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটা পেশি গঠনেও সহায়তা করে।
* বেশি তেল ও মসলাযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। তবে মসলা ভালো, বিভিন্ন রকম মসলার বিভিন্ন গুণাগুণ আছে। তবে পরিমাণমতো দিয়ে রান্না করতে হবে।
* ভাজা-ভুনা নয়, সিদ্ধ, কম আঁচে রান্না করতে হবে।
* খাবারের মেন্যুতে প্রচুর ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, যেমন—লাল আটা, শাক, বিনস, সালাদ, সবজি, ফল রাখুন। কারণ ফাইবার ওজন কমায়, হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোলেস্টেরল কমায়। মহিলাদের জন্য ২১-২৫ গ্রাম এবং পুরুষদের জন্য ৩০-৩৮ গ্রাম ফাইবার খেতে হবে প্রতিদিন।
* খাবারের সাথে অতিরিক্ত লবণ না খাওয়া। কারণ অতিরিক্ত লবণ শরীরে পানি আনে, ব্লাড প্রেসার ও ওজন বাড়ায়। রান্নাতেই অনেক লবণ থাকে, বাড়তি লবণ খাওয়ার দরকার নেই।