ক্যান্সারের লক্ষণ আছে এমন রোগীর ক্যান্সার শনাক্ত করার জন্য একগাদা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। খুব ব্যতিক্রম হলেও একসঙ্গে একাধিক পরীক্ষার ধকল সইতে গিয়ে নতুন করে অসুস্থ হওয়া কিংবা মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। তাই একটি মাত্র পরীক্ষায় ক্যান্সার শনাক্ত করার পদ্ধতি আবিষ্কার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বিষয় চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের কাছে। তাঁদের মতে, জটিল কোনো যান্ত্রিক পদ্ধতি নয়, দ্রুত এবং একটি সাদামাটা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই সেটা সম্ভব।
সাধারণত, ক্যান্সার শনাক্ত করার জন্য এক্স-রে, কম্পিউটেড টমোগ্রাফি (সিটি) স্ক্যান বা কম্পিউটার অ্যাসিস্টেড টমোগ্রাফি (সিএটি) স্ক্যান, পজিট্রন ইমিশন টমোগ্রাফি (পিইটি) স্ক্যান, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই), এন্ডোসকপি, রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা এবং বায়োপসিসহ একসঙ্গে অনেক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় রোগীকে। এখানেই শেষ নয়, ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পর তা কোন পর্যায়ে আছে (স্টেজিং), চিকিৎসা শুরু করার জন্য সেটা জানতে শরীরের লাসিকা গ্রন্থির পরীক্ষাও করাতে হয়। এসব জটিলতর অবস্থার অবসান ঘটাতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা জানিয়েছেন, তাঁরা এমন একটি পদ্ধতির উন্নতি ঘটিয়েছেন, যার মাধ্যমে খুবই তাড়াতাড়ি চিকিৎসক জানতে পারবেন, তাঁর রোগীর ক্যান্সার আছে কি না। আর ক্যান্সার হয়ে থাকলে টিউমার কতটুকু বড় হয়েছে, কী ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন এবং সামনের সময়গুলোতে তা কতটা বাড়তে পারে, ওই পদ্ধতিটির মাধ্যমে তা জানা যাবে। গবেষকরা জানিয়েছেন, খুবই সাধারণ ক্যান্সারগুলো শনাক্ত করার জন্য তাঁদের পরীক্ষা পদ্ধতি কাজে লাগবে। যেমন : স্তন ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার ইত্যাদি। তাহলে তাঁদের পরীক্ষা পদ্ধতি কেমন? গবেষকরা জানান, ক্যান্সার কোষগুলো খুব দ্রুত শরীরে ভাঙে এবং মারা যায়। এর মাধ্যমে কোষগুলো শরীরের রক্তপ্রবাহে যে ডিএনএ ছাড়ে (রিলিজ) করে, সেটা পরীক্ষা করেই ক্যান্সার শনাক্ত করা সম্ভব। তাঁদের গবেষণার ফল সম্প্রতি ‘ন্যাচার মেডিসিন’ সাময়িকীর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে। সূত্র : ডেইলি মেইল।