ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই যেন ইদানীং বেড়েছে মশা-মাছি ও পোকামাকড়ের উপদ্রব। তবে তা থেকে রেহাই পাওয়ার উপায়ও আছে।
সন্ধ্যা হওয়ার কিছুক্ষণ আগে দরজা-জানালা বন্ধ করে দিতে হবে মশার হাত থেকে রেহাই পেতে। অন্তত ঘণ্টা দেড়েক বন্ধ রাখলে মশার প্রকোপ কমে যাবে। আবার সকালের আলো ফুটলেই ঘরের দরজা-জানালা সব খুলে দিতে হবে।
গাছের গোড়ায়, প্লাস্টিকের ভাঙা বাটিতে, ঘরে জমানো ফেলে দেওয়া সামগ্রী এসব জিনিসে অনেক সময় পানি জমে থাকে, যার কারণে এডিস মশা বাড়তে পারে। এ জন্য প্রতিদিন ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
স্প্রে করার সময় ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘরের কোনায় কোনায় স্প্রে করতে হবে। তবে স্প্রে করার সময় নিজের নাক বন্ধ করে ফ্যানের দিকে স্প্রে করতে হবে, যেন তা ওপর থেকে নিচে পড়ে। স্প্রে করার পর অন্তত পাঁচ মিনিট ঘর বন্ধ করে রাখতে হবে। এরপর ফ্যান ছেড়ে দিলে স্প্রের গন্ধ চলে যাবে।
এখনকার সময়ে অনেকে বাসাবাড়িতে মশারি না টানিয়ে দুই-তিনটা কয়েল জ্বালিয়ে রেখে কিংবা স্প্রে করে রাত কাটিয়ে দেয় মশা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য। কিন্তু এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এর চেয়ে মশারি টানিয়ে ঘুমানো অনেক নিরাপদ।
এখনকার সময়ে বাজারে কিছু স্পেশাল মশারি পাওয়া যায়, এসব ব্যবহার করা যেতে পারে কিংবা মশা মারার ব্যাটও ব্যবহার করা যেতে পারে মশার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য।
ঘরবাড়ি নির্মাণের সময় এমন ব্যবস্থা করতে হবে যাতে ঘরে আলো, বাতাস, রোদ প্রবেশ করার ব্যবস্থা থাকে। এতে পোকামাকড়ের উপদ্রব কম থাকবে। আবার পোকামাকড় নিধনের জন্য যেসব কীটনাশক ব্যবহার করা হয় সেসব ব্যবহারে আপাতদৃষ্টিতে পোকামাকড় নিধন হলেও তা পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তবে এসব কীটনাশক কম তীব্র হলে ব্যবহার করা যায়।
গরমকালে মাছির উপদ্রব বাড়ে। মাছির জন্য কোনো ওষুধ স্প্রে করা হয় না। মাছির উপদ্রব থেকে রেহাই পেতে সব সময় ঘরদোর জীবাণুনাশক তরল মেশানো পানি দিয়ে মুছে রাখতে হবে।
যেহেতু মাছি ময়লা-আবর্জনার ওপরে বসে তাই খাবার-দাবারের ওপর মাছি বসলে বিভিন্ন ধরনের পেটের অসুখ হতে পারে, তাই যেকোনো ধরনের খাবার সব সময় ঢেকে রাখতে হবে।
পিঁপড়ারা সারি করে যে পথে আসে সে পথে চলে যায়। তাই পিঁপড়াদের যাওয়া-আসার পথে রাতের বেলায় কেরোসিন দিয়ে রাখতে পারেন। টেবিলের ওপর খাবারগুলো জলকান্দার ওপর রাখলে তাতে পিঁপড়া আক্রমণ করতে পারে না।ঘরের সঙ্গে কোনো গাছের ডাল থাকলে বিষাক্ত পিঁপড়া কিংবা ইঁদুর আসার সম্ভাবনা থাকে বেশি। তাই ঘরের সঙ্গে গাছের ডাল লাগানো না থাকাই ভালো।
তেলাপোকা খোলা জায়গায় ডিম পাড়তে পারে না। তাই অতিরিক্ত আসবাবপত্র বা জিনিসপত্র ঘরে রেখে জঞ্জাল তৈরি করা যাবে না।
ইঁদুর নিধনের ক্ষেত্রে প্রথমেই চিহ্নিত করতে হবে ইঁদুর চলাচলের রাস্তা। কারণ ইঁদুর সাধারণত ঘরের মধ্যে একই পথে চলাফেরা করে। রাতের বেলায় বিস্কুটের কিংবা আটার দলার সঙ্গে জিঙ্ক ফসফাইড মিশিয়ে এই পথে রেখে দিতে পারেন। ইঁদুর যদি সেটা খায় তবে মারা যাবে।
আবার ইঁদুর মারার কিছু খাঁচা পাওয়া যায় বাজারে সেগুলো কিনে তার মধ্যে শুঁটকি মাছ, চিংড়ি শুঁটকি, নারকেলের ফালি বেঁধে দেওয়া যেতে পারে। তাতে খাবারের লোভে খাঁচায় ঢুকে ইঁদুর আটকা পড়বে।
সতর্কতা
অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে যে কোন কীটনাশক এর ওষুধের কৌটা শিশুদের হাতের নাগালের বাইরে রাখতে হবে।
পোকামাকড়ের উপদ্রব রোধে রাতে যেসব কীটনাশক ঘরে দেয়া হবে সকালে সেগুলো অবশ্যই সরিয়ে মেঝে মুছে ফেলতে হবে।
মশা মারার ব্যাট ও শিশুদের থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে।