ইশকেমিক (Ischaemic) হার্ট ডিজিজ

Author Topic: ইশকেমিক (Ischaemic) হার্ট ডিজিজ  (Read 1366 times)

Offline Jeta Majumder

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 150
  • Test
    • View Profile
হার্ট ব্লক হয়েছে বললেই আমাদের মনে যে রোগটির ছবি ফুটে উঠে তা হলো আসলে ইশকেমিক ডিজিজ। হার্ট ব্লক নামক প্রচলিত শব্দটি কিন্ত এই রোগের ক্ষেত্রে ভুল নামকরণের শিকার, কারণ হার্ট ব্লক নামে সত্যিই একটি হৃদ রোগ আছে যার সাথে এই রোগের মিল খুব সামান্যই। তবে হার্ট এর ধমণী তে ব্লক (করোনারি আরটারী স্টেনোসিস) হয়েছে বললে সেটা কিন্ত এই রোগটিকেই বোঝায়। তাই পাঠক এই ক্ষেত্রে একটু যত্নবান হবেন বলে আশা রাখবো। মেডিকেল পরিভাষায় একে করোনারি আর্টারি ডিজিজ বলা হয়।

ধমণীর ব্লক কীঃ হৃদপিন্ড শরীরের সর্বত্র রক্ত সরবরাহ করে, এই প্রবাহিত রক্তের কাজ খুব সহজ করে বললে হবে সর্বত্র পুষ্টির যোগান দেয়া। হৃদপিন্ডের নিজেরও পুষ্টির প্রয়োজন আছে আর তা আসে মোটামুটি মাঝারী মাপের তিনটি ধমণীর সাহায্যে। এদের নাম যথাক্রমে ডান পাশে আর,সি,এ (রাইট করোনারি আরটারি), মাঝে এল,এ,ডি (লেফট এন্টেরিয়র ডিসেন্ডিং), এবং যেটি হৃদপিন্ড কে ঘুড়ে আসে তার নাম এল,সি,এক্স (লেফট সারকামফ্লেক্স) আরটারি। কোনো কারণে যদি এসব ধমণী সরু হয়ে যায় বা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে করোনারি আরটারীর স্টেনোসিস হয়েছে বা ব্লক হয়েছে শব্দ দুটি ব্যবহৃত হয়। সাধারণত ধমণীর গায়ে চর্বি জমে তা ক্রমান্বয়ে সরু হতে থাকে। এটা যদি শতকরা ৫০ ভাগ এর বেশি হয়ে যায় সেক্ষেত্রে হৃদপিন্ডের রক্ত প্রবাহ মাত্রাতিরিক্ত কমে যেতে থাকে এবং রোগী সামান্য পরিশ্রমেই বুকে ব্যথা অনুভব করতে পারেন।

হার্ট এটাক / এমআই / স্ট্রোকঃ হার্ট এটাক রোগটিকে ভুলবশত স্ট্রোক বলা হয়ে থাকে। স্ট্রোক মস্তিস্কের রক্তক্ষরণ জাতীয় রোগ আর হার্ট এটাক হৃদপিন্ডের একটি রোগ, যার মেডিকেল পরিভাষা হল মায়কার্ডিয়াল ইনফার্কশন, ছোট্ট করে একে বলা হয় এম,আই। হার্ট এর ধমণী গুলো সরু হয়ে গেলে বা বন্ধ হয়ে গেলে রক্ত প্রবাহ আশংকা জনক হারে কমে যায় এবং হার্টের কোষ গুলো মৃত্যু বা ধ্বংসের দিকে ধাবিত হয়- এর ই নাম ইশকেমিয়া। কেতাবী নাম মায়কার্ডিয়াল ইশকেমিয়া। ইশকেমিয়া হলে বুকে তীব্র চাপ ও ব্যাথা অনুভুত হয় তখন এই সমস্যাটিকে বলে এনজাইনা পেক্টোরিস। এনজাইনা শব্দের বাংলা অর্থ ব্যাথা আর পেক্টরিস এর অর্থ বুক। যদি ইশকেমিয়া চলতেই থাকে তবে হার্ট এর কোষ গুলো একসময় মারা যায়, এই অবস্থাটির নামই মায়কার্ডিয়াল ইনফার্কশন বা এম,আই- যা আমরা প্রচলিত অর্থে হার্ট এটাক হিসেবে চিনি।

লক্ষনঃ ইশকেমিয়া হলে রোগীর বুকের বাম দিকে প্রচন্ড ব্যাথা বা এনজাইনা হয় এবং রোগী বুকে তীব্র চাপ অনুভব করে। অনেক রোগীই অভিযোগ করে যে তার বুকের উপর ভীষন ভারী একটা কিছু চেপে বসে আছে। ব্যাথার তীব্রতা বুকে বেশী থাকলেও এটা বুক থেকে গলা, গাল, মাড়ি, কান, বাম হাত এবং আশে পাশে ছড়িয়ে পরতে পারে। একে রেফার্ড পেইন বলা হয়। বুকের ব্যাথা ১ থেকে ৩ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে, তবে এটা কখনই ৩০ সেকেন্ড সময়ের কম দৈর্ঘের হয়না। আবার ১৫ মিনিটের বেশী স্থায়ী হওয়ার নজিরও খুব কম। এনজাইনা বা ব্যাথা শুরু হয় সাধারণত কোনো একটা পরিশ্রমের কাজ করার সময় যেমন দৌড়ানো বা জোরে হাটা ইত্যাদি। তবে পেট ভরে খাবার খাওয়া, যৌন ক্রিয়া এমনকি হঠাৎ রেগে যাওয়া বা উত্তেজিত হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ও এনজাইনা শুরু হয়ে যেতে পারে। ব্যাথার সাথে রোগীর অন্য উপসর্গ যেমন শ্বাসকষ্ট, পেট ফাপা লাগা, অস্থির লাগা, বুক ধড়ফর করা ইত্যাদিও থাকতে পারে। পরিশ্রম বন্ধ করে বিশ্রাম নিলে এই ব্যথা সাথে সাথে সাময়িক ভাবে কমে যেতে পারে।

রোগ নির্ণয়ঃ বুকের ব্যাথার কারণ হিসেবে এনজাইনা বা এম,আই সন্দেহ হলে প্রথম যে পরীক্ষাটি করা হয় তা হলো একটি ১২ লিডের ইসিজি। ব্যাথার শুরুর দিকে ইসিজি স্বাভাবিক ও আসতে পারে, এজন্য পর্যায়ক্রমে বেশ কয়েকবার ইসিজি করা লাগতে পারে। এর পর ও যদি ইসিজি স্বাভাবিক আসে এবং এনজাইনা হবার সন্দেহ থাকে সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে হার্ট এর এনজাইম এর মাত্রা দেখে এই রোগ নিশ্চিত করেন। প্রধানত ট্রপনিন আই এবং সি,কে,এম,বি এনজাইম দুটো দেখা হয়, এছাড়া অন্য এনজাইম ও দেখার প্রয়োজন হতে পারে। এনজাইনা বা এম,আই এর কারণ জানার চুড়ান্ত পরীক্ষা হলো এনজিওগ্রাম করা। সিটি স্ক্যান করে (সিটি এনজিওগ্রাম) অথবা পা কিংবা হাতের ধমনীতে বিশেষ ধরনের ক্যাথেটার প্রবেশ করিয়ে- দুভাবেই এনজিওগ্রাম করা যায়। তবে শেষের পদ্ধতিই বেশী কার্যকর। কোনো কোনো রোগী আছেন যাদের মাঝে মাঝে কাজের মধ্যে বুকে ব্যাথা হয় কিন্ত স্বাভাবিক অবস্থায় হয়না এবং ইসিজি করলেও ধরা পড়েনা তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রেস টেস্ট বা ইটিটি পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করতে হয়।

চিকিৎসাঃ করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা ইশকেমিক হার্ট ডিজিজ এর চিকিৎসা অবশ্যই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ (কার্ডিওলজিস্ট) এর তত্ত্বাবধানে করা উচিত। এর কোনো বিকল্প নেই। কারণ কেবল হৃদরোগ বিশেষজ্ঞই রোগীর সঠিক অবস্থা বিবেচনা করে আদর্শ চিকিৎসা দিতে পারেন। সহজ করে বললে এনজাইনা জাতীয় রোগে তারা প্রথমেই যে ঔষুধ গুলো দিয়ে থাকেন তার মধ্যে একটি হলো নাইট্রোগ্লিসারিন যা স্প্রে করে, শিরায় অথবা ট্যাবলেট হিসেবেও দেয়া হয়। এছাড়াও রক্তের প্লাটেলেট বিরোধী এসপিরিন বা ক্লোপিডোগ্রেল, উচ্চরক্ত চাপ নিয়ন্ত্রনের অসুধ, মরফিন জাতীয় শক্তিশালী ব্যাথা নাশক এবং রক্ত তরলকারি হেপারিন বা ইনোক্সাপারিন ও দেয়া হয়। কার্ডিওলজিস্ট অনেক সময় রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে রক্ত তরলকারি ইনজেকশন স্ট্রেপটোকাইনেজ বা এল্টেপ্ল্যাজ জাতীয় অসুধ ও ব্যবহার করে থাকেন। তবে ইশকেমিক হার্ট ডিজিজ এর চুড়ান্ত চিকিৎসা হলো প্রথমে এনজিওগ্রাম করে কোন ধমনীতে স্টেনোসিস আছে তা নির্ণয় করা এবং সেই অনুযায়ী এনজিওপ্লাস্টি করা বা ব্লক সরিয়ে সে স্থানে স্টেন্ট বসিয়ে দেয়া(যা প্রচলিত আছে রিং পরানো নামে)। অনেক সময়ই স্টেন্ট বসানো সম্ভব হয়না অথবা যৌক্তিক হয়না সেক্ষেত্রে অবশ্যই সিএবিজি বা বাইপাস অপারেশন (প্রকৃত নাম CABG- Coronary Artery Bypass Graft) করে রোগীর স্থায়ী রোগ মুক্তি ঘটান হয়।

Source: http://www.susastho.com/heart/4-ischaemic.html

Jeta Majumder
Lecturer
Department of Business Administration
Faculty of Business and Economics

Offline sayma

  • Faculty
  • Sr. Member
  • *
  • Posts: 340
    • View Profile
Re: ইশকেমিক (Ischaemic) হার্ট ডিজিজ
« Reply #1 on: April 09, 2014, 04:59:11 PM »
good and informative post... the symptoms of heart diseases are now clear after reading this writing..

Offline Shahnoor Rahman

  • Faculty
  • Sr. Member
  • *
  • Posts: 260
    • View Profile
Re: ইশকেমিক (Ischaemic) হার্ট ডিজিজ
« Reply #2 on: April 10, 2014, 11:51:45 AM »
informative post.