ট্যাবলেট কেনার আগে ৯টি বিষয় বিবেচনা করুন
ভালো মানের একটি ট্যাবলেট কিনতে হলে বেশ মোটা অংকের টাকা খরচ করতে হয়। আধুনিক এই জনপ্রিয় প্রযুক্তিপণ্যটি হস্তগত করার আগে তাই অন্তত ৯টি বিষয় জেনে নেওয়া উচিত। প্রতিনিয়ত তথ্যপ্রযুক্তির নতুন সংস্করণ আসছেই। ফলে অনেকে ট্যাবলেট কেনার আগে কোনটি উত্তম, তা ভাবতেই পেরেশান হয়ে যান। এসব বিষয়ে আপনার জ্ঞান থাক বা নাই থাক, নীচের বিষয়গুলো জেনে রাখুন।
১. ব্যাটারি লাইফ
হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর উপযোগী করেই ট্যাবলেট বানানো হয়েছে। তাই ট্যাবলেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো এর ব্যাটারির শক্তি। বিভিন্ন মডেলের ওপর ভিত্তি করে ট্যাবলেটের ব্যাটারি মাত্র দু-চার ঘণ্টা থেকে শুরু করে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারার মতো বানানো হয়। তবে আপনার ব্যবহারের ওপর নির্ভর করবে ব্যাটারি কতক্ষণ চালু থাকবে।
২. অ্যাপ্লিকেশনস
আপনি যে ধরনের অ্যাপস ব্যবহার করবেন, তার ওপর ভিত্তি করে ট্যাবলেটের অপারেটিং সিস্টেম ঠিক করতে হয়। তাই বলা যায়, কোন অপারেটিং সিস্টেমসহ ট্যাবলেট কিনবেন তা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। অ্যাপলের আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড- এ দুটি অপারেটিং সিস্টেম এখন বাজারে খুবই জনপ্রিয়। এ দুটোতে রয়েছে অসংখ্য অ্যাপস। এ ছাড়া উইন্ডোজ ৮.১ অপারেটিং বাজারে রয়েছে।
৩. স্টোরেজ স্পেস
তথ্য, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি রাখার জন্য বিভিন্ন ধারণ ক্ষমতার ট্যাবলেট রয়েছে। তবে সাধারণত ৮ গিগাবাইট থেকে চাহিদার শুরু। এখন ১২০ জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ ক্যাপাসিটির ট্যাবলেট বাজারে এসেছে। প্রচুর গান, ভিডিও, ছবি বা অ্যাপস ডাউনলোড করে রাখতে চাইলে একটু বেশি স্পেস দেখে ট্যাবলেট নিতে হবে। আর ইন্টারনেটে ব্রাউজ করাই যদি মুখ্য হয়, তবে এতো স্পেস দরকার নেই।
৪. ওয়াই-ফাই
ডাটা কানেকশন কেমন হবে তা আরেকটি অতি জরুরি বিবেচনার বিষয়। শুধু ওয়াই-ফাই বা ওয়াই-ফাইসহ মোবাইলে সংযোগ হবে কিনা বা থ্রিজি বা ফোরজি কানেকশন ইত্যাদি আপনার চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ঠিক করে নিতে হবে। ওয়াই-ফাই থাকলে যেকোনো অফিস পাড়া বা শপিং মলে ইন্টারনেটে ব্রাউজিং করতে পারবেন। আবার মোবাইল ডাটা প্ল্যান নিতে চাইলে অবশ্যই মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে ডাটা কানেকটিভিটি নিতে হবে।
৫. স্ক্রিন বা পর্দা
ট্যাবলেটের পর্দা কতোটা ঝকঝকে ও পরিষ্কার চাইছেন তা আপনাকে ঠিক করতে হবে। ন্যুনতম এইচডি-তে পরিষ্কার ছবি ও টেক্সট দেখতে চাইলে ৭২০পি (১২৮০x৭২০) রেজ্যুলেশনের পর্দা নিতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে স্ক্রিনের আকারটা ৫ ইঞ্চি থেকে ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে (আড়াআড়িভাবে মাপা হয়)। ছোট পর্দার ট্যাবলেট কম চার্জে চলে।
৬. প্রসেসর
এটি মোবাইল বা ট্যাবলেটের হৃদযন্ত্র। সাম্প্রতিক প্রযুক্তির বাজারে মাল্টি কোর প্রসেসর চলে এসেছে। প্রসেসরের এই কোর যতো বেশি হবে, ট্যাবলেট ততো দ্রুত একই সঙ্গে অনেক কাজ করতে পারবে।
৭. ওজন
চলাফেরা করতে সুবিধাজনক ওজনেই ট্যাবলেট বানানো হয়। সবচেয়ে কম ওজন ৪০০ গ্রাম থেকে শুরু করে সর্বাধিক ৭০০ গ্রাম পর্যন্ত ট্যাবলেটের ওজন হয়ে থাকে। তবে বিশেষভাবে বানানো কিছু মাল্টি ট্যাবলেটের ওজন এক কেজি ছাড়াতে পারে। মোবাইলের মতো দিন-রাত ট্যাবলেটটি বহন করার প্রয়োজন যাদের রয়েছে, তাদের জন্যে ওজন একটি বিবেচ্য বিষয়।
৮. ক্যামেরা
প্রায় সব ট্যাবলেটেই ছবি তোলা ও ভিডিও করার জন্য পেছনে একটি ক্যামেরা দেওয়া থাকে। এ ছাড়া অনেক ট্যাবলেটে ভিডিও চ্যাট করার জন্য সামনেও একটি ক্যামেরা দেওয়া হয়। ছবি তোলা বিশেষ উদ্দেশ্য থাকলে বেশি মেগা পিক্সেলের ক্যামেরাসহ ট্যাবলেট কেনা ভালো।
৯. র্যাম
ট্যাবলেট তার অ্যাপসগুলোকে চালানোর জন্য র্যাম ব্যবহার করে। কম্পিউটার ও মোবাইলেও র্যাম থাকে। আধুনিক অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস অপারেটিং সিস্টেমে ১ থেকে ২ গিগাবাইট পর্যন্ত র্যাম দেওয়া থাকে। আবার উইন্ডোজ ট্যাবলেটের অধিকাংশতেই ২ থেকে ৪ গিগাবাইট র্যাম সংযুক্ত থাকে। র্যাম যতো বেশি হবে, ট্যাবলেট বা মোবাইল বা কম্পিউটারে অ্যাপস ততো দ্রুত চলবে।