Proper Uses of medicine and Management

Author Topic: Proper Uses of medicine and Management  (Read 989 times)

Offline Arif

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 203
    • View Profile
Proper Uses of medicine and Management
« on: April 01, 2014, 03:26:46 PM »
জনস্বাস্থ্য: ওষুধের নিরাপদ ব্যবহার এবং ব্যবস্থাপনা
সম্প্রতি খুলনার একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন ক্লিনিকে ভুল ইনজেকশন দেয়ার কারণে সাদিয়া নামের এগার বছর বয়সের ফুটফুটে একটি শিশুর মৃত্যু ঘটেছে (সুত্রঃ দৈনিক যুগান্তর)। অত্যন্ত দুঃখজনক এবং বেদনাদায়ক একটি সংবাদ। তার পিতামাতাকে সান্ত্বনা দেয়ার মত ভাষা আমাদের নেই। পেটে গ্যাসের সামান্য ব্যথায় কাতর প্রিয় সন্তানকে সুস্থ করার প্রয়াসে ক্লিনিকে এসে লাশ নিয়ে ফিরে যেতে হল। বিধাতার অমোঘ নিয়মে আমরা কোনভাবেই প্রাণোচ্ছল সাদিয়াকে আর ফিরে পাব না। কিন্তু তার পিতামাতাকে এই যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতে হবে বাকিটা জীবন। তবে আমাদের কি কিছুই করার নেই? সরকারের কি কিছুই করার নেই?
ওষুধ বস্তুটি যদিও প্রাণ রক্ষার্থে ব্যবহৃত হয় তথাপি ওষুধের অনিরাপদ ব্যবহার প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। ওষুধ বিশেষজ্ঞদের মতে সঠিক মাত্রায় সঠিক ক্ষেত্রে একটি রাসায়নিক যৌগ ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অপরদিকে এর অযৌক্তিক ব্যবহার আমাদের শারীরিক, মানসিক, আর্থিক এবং ক্ষেত্র বিশেষে মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সাদিয়ার ক্ষেত্রে ব্যথানাশক ইনজেকশনের পরিবর্তে চেতনানাশক ইনজেকশনের প্রয়োগের ফলে এই দুঃখজনক পরিণতি। এটি একটি বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। আমাদের চারপার্শ্বে অহরহ এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে। ওষুধের ভুল, অনিরাপদ এবং অযৌক্তিক ব্যবহারের কারণে জনস্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন। রেনাল এসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ মোঃ রফিকুল ইসলামের মতে আমাদের দেশে বর্তমানে ৮০ শতাংশ মানুষ কোন না কোন ভাবে কিডনীজনিত রোগে আক্রান্ত যার প্রধান কারণ হল ওষুধের যথেচ্ছামূলক ব্যবহার। ওষুধের অনিরাপদ এবং অযৌক্তিক ব্যবহারে যকৃতের রোগ, চামড়ার রং পরিবর্তন, চুল পড়ে যাওয়া, অঙ্গহানি, হাড়ের ক্ষয়, বিভিন্ন ক্ষুদ্র জীবাণুর আক্রমণ, অন্ত্রের প্রদাহ এবং ক্যান্সারসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এর পরিণামে একজন সাময়িক অসুস্থ মানুষ অকাল বার্ধক্য থেকে মৃত্যুবরণও করতে পারেন।অন্যদিকে ওষুধ অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় গবেষণালব্ধ ফলাফল বলছে ওষুধের পিছনে সরকারের ব্যয় ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে অযৌক্তিক। অর্থাৎ নিরাপদ ও যৌক্তিক ব্যবহার করে ওষুধের পিছনে অর্থ অপচয় রোধ করা সম্ভব।
অনেকের মনে প্রশ্ন উদয় হতে পারে যে একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকা সত্ত্বেও এমন ঘটনার পিছনে কারণ কি? যথাযথ অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে আমাদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটের সাথে অধিক জনসংখ্যার বিস্ফোরণই এর প্রধান কারণ। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অথবা জেলা হাসপাতালের একজন মেডিকেল কর্মকর্তা প্রায় শখানেক রোগী দেখেন প্রতিনিয়ত। এছাড়া হাসপাতালের বা ক্লিনিকের ইনডোর রোগীদের চিকিৎসা প্রদানসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই বাস্তবিক অর্থে একজন চিকিৎসকের পক্ষে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা ব্যবহার নিয়ে রোগীদের সাথে আলোচনা করার পর্যাপ্ত সময় হাতে থাকে না। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে একজন চিকিৎসকের পক্ষে সম্ভব নয় সকল রোগীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার যথাযথ তথ্য ব্যবস্থাপনা করা। অন্যদিকে প্রতিনিয়ত খবরের কাগজে দেখা যায় ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, যার অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইনজেকশন দেয়ার পরপরই রোগীর মৃত্যু ঘটেছে বলে জানা যায়। এমনকি ঘটনাস্থলে ক্রোধে উন্মত্ত জনতা চিকিৎসকের উপর চড়াও হন। তাই বাস্তবতার নিরিখে উন্নত বিশ্বের হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ওষুধের দোকানে রোগীদের ওষুধ ব্যবহারের নিয়মকানুন এবং ব্যবহার পরবর্তী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখাশুনা করার লক্ষ্যে ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট নামে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ সম্প্রদায় কাজ করছেন। এসব ক্ষেত্রে একজন ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট সেইসব রোগীদের ওষুধ নিয়ে যথাযথ তথ্য সরবরাহসহ নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারেন। এছাড়া রোগীর অবস্থা বিবেচনাপূর্বক ওষুধের ডোজেজ ফর্ম নিয়ে চিকিৎসকের সাথেও শলাপরামর্শ করতে পারেন। অন্যদিকে রোগীর সাথে কাউন্সেলিং করে ওষুধের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করতে পারেন।সর্বোপরি সব রোগীর ওষুধের তথ্য ব্যবস্থাপনা সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ করতে পারেন যা পরবর্তীতে গবেষণার মৌলভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ফার্মাসিস্ট বলতে আজকাল জনগণ শুধু দোকানের ওষুধ বিক্রেতাকে ভেবে থাকেন। সাধারণ জনগণের এমনটি মনে করার পিছনে ফার্মাসিস্টদের পেশাগতভাবে কোন সম্মানহানি হয়না। বস্তুত মানবজাতি আবির্ভাবের সময় থেকেই রোগ এবং তা নিরাময়ে ওষুধ ব্যবহারের আগমন ঘটেছে। প্রাচীনকালে চিকিৎসকেরা (বৈদ্য, ওঝা ইত্যাদি) রোগ নির্ণয় করে তার ওষুধ নিজেই তৈরি করতেন। কিন্তু সময়ের আবর্তনে, বিজ্ঞান প্রযুক্তির উদ্ভাবনে রোগের নির্ণয় এবং ওষুধের উৎপাদন ধারা দুটি পৃথক হয়ে যায়। তাই এখনকার সময়ে চিকিৎসক সম্প্রদায় রোগীর রোগ নির্ণয়, এর সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং গবেষণা মূলত এই ধারার সাথে সম্পৃক্ত। অপরপক্ষে ওষুধ বিশেষজ্ঞগণ নিত্য নতুন ওষুধ আবিষ্কার, এর বাণিজ্যিক উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপদ এবং সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এই ধারার সাথে যুক্ত রয়েছেন। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের সাথে ওষুধ বিশেষজ্ঞদের বিস্তর ফারাক রয়েছে। একজন ওষুধ বিশেষজ্ঞ যেমন কোন রোগীর রোগ নির্ণয় করতে পারেন না অন্যদিকে একজন চিকিৎসক ওষুধ তৈরি করতে অপারগ। তাই সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় চিকিৎসক এবং ওষুধ বিশেষজ্ঞ উভয়েই অতীব প্রয়োজন।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের ওষুধখাত অত্যন্ত শক্তিশালী। দেশের প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ষাটেরও অধিক দেশে ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। কিছু অতীব জটিল এবং দামি ক্যান্সারের ওষুধ ছাড়া ৯৭ ভাগ ওষুধ আমাদের দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। অপরদিকে দেশের বৃহৎ ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর পণ্য মানের দিক দিয়ে বিশ্বের নামকরা কোম্পানির সমতুল্য। এক্ষেত্রে ফার্মাসিস্টবৃন্দ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। ফার্মাসিস্টবৃন্দ ওষুধ উৎপাদনে যেমন সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে তেমনি এর যথাযথ ব্যবহারেও পারদর্শী। ফার্মাসিস্টদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে বর্তমানে দেশে এগারটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সহ ত্রিশটিরও অধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিষয়টি পড়ানো হয়। বিগত এক দশকে ওষুধখাতের অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন এসব মেধাবিদের কল্যাণেই সম্ভব হয়েছে। ফার্মেসি পেশার তিনটি বৃহৎ কর্মক্ষেত্র যেমন ওষুধ উৎপাদন, এর মান নির্ণয় এবং যথাযথ ব্যবহার। ওষুধ উৎপাদন এবং মান নিয়ন্ত্রণে ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশকৃত ছাত্রছাত্রীরা এই দুটি ক্ষেত্রেই চাকুরীর বাজারে প্রবেশ করছে। তাই ওষুধ কোম্পানিগুলোতে এখন পর্যাপ্ত সংখ্যক ফার্মাসিস্ট কাজ করছেন। অন্যদিকে নতুন নতুন পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে এই ব্যবসায় বিনিয়োগের পরিমান ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি হওয়ার ফলে বিপুল সংখ্যক ফার্মাসিস্ট লেখাপড়া শেষ করে বেকার অবস্থায় রয়েছেন। গত কয়েক বছর আগে এ ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্টের সংখ্যা ছিল হতে গোনা কয়েকজন। অথচ কালের পরিক্রমায় এই সংখ্যাটি আজ অনেক বড় হয়ে গিয়েছে।
বর্তমান শিক্ষাক্ষেত্রে একটা অরাজকতা বিরাজমান। কোন কোন ক্ষেত্রে কত শিক্ষিত জনবল দরকার, তার কোন হিসাব বা ব্যবস্থাপনা নেই। দেখা যাচ্ছে পোশাক খাতের জন্য যে বিশেষজ্ঞ জনবল প্রয়োজন তার ব্যবস্থা না করে ব্যবসায় প্রশাসনের ছাত্রের সংখ্যা অনেক বেশি। শিক্ষক হিসেবে বিজ্ঞান পড়ানোর জন্য যত ছাত্র প্রয়োজন তার চেয়ে মানবিকে ছাত্রের প্রাচুর্য। এরকম ভুরি ভুরি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। তেমনি যতগুলো পদের সৃষ্টি হয় প্রতিবছর ওষুধ খাতে তার চেয়ে বেশি ছাত্র ভর্তি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। আর স্বভাবতই যারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় একটি চাকুরীর আশায়, তাদের হতে হয় হতাশ। এর পিছনে সরকারের সাথে সাথে ফার্মেসি পেশার নিয়ন্ত্রণ কর্তা ফার্মেসি কাউন্সিল উক্ত অবস্থার জন্য বেশি দায়ী। একেবারে ঢালাওভাবে প্রায় সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয় পঠনের অনুমোদন প্রদান করা মোটেও সমীচীন হয়নি। সৃষ্ট পদের সাথে তাল মিলিয়ে যৌক্তিক ছাত্রসংখ্যা নিরূপণে এই প্রতিষ্ঠানটি ব্যর্থ। তাই আজ প্রায় অর্ধেক ফার্মাসিস্ট বেকার জীবনের ঘানি টানছেন। ফার্মেসি কাউন্সিলসহ এই বিষয়ে অভিজ্ঞদের উচিত ছিল সরকারের সাথে সঠিক পরিকল্পনা করে ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট, কমিউনিটি ফার্মাসিস্ট ইত্যাদি কর্মক্ষেত্র উন্মোচন করা এবং তদ্রুপ ছাত্র সংখ্যা নির্ধারণ। বিগত কয়েক দশকে দেশের প্রয়োজনে ফার্মাসিস্টের কাছে প্রাথমিক মূল চাহিদা ছিল ওষুধ উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণ এবং রক্ষনাবেক্ষন নিশ্চিতকরণ। তাই ক্লিনিক্যাল ক্ষেত্রে ফার্মাসিস্টদের মেধা এবং যোগ্যতাকে এতদিন ব্যবহার করা হয়নি। কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে এবং রোগীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ফার্মাসিস্টবৃন্দের মেধাকে উক্ত ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যেতে পারে। বিগত কয়েকটি সরকার স্বাস্থ্যখাতে ক্লিনিক্যাল বা কমিউনিটি ফার্মাসিস্ট ব্যবহার বিষয়ক প্রস্তাবের সাথে সহমত পোষণ করেছে কিন্তু পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকবল না থাকায় অনুমোদন দেয়া হয়নি। যেহেতু বর্তমানে পর্যাপ্ত সংখ্যক দক্ষ জনবল আমাদের হাতে রয়েছে, তাই জাতির স্বাস্থ্যগত স্বার্থে এবং রোগীদের সঠিক ওষুধের ব্যবহার নিশ্চিতকরণে ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা রাখার জন্য রাষ্ট্রের আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
ওষুধের নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী ব্যবহার নিয়ে আমাদের দেশে ফার্মাসিস্টদের কার্যক্ষেত্র নেই বললেই চলে। কিন্তু উন্নত বিশ্বে অধিক সংখ্যক ফার্মাসিস্ট এই খাতে কাজ করছেন। বর্তমানে জাপানে ফার্মাসিস্টদের ৬০ ভাগ ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট হিসেবে হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ওষুধের দোকানে কাজ করছেন। বাকি ফার্মাসিস্ট ওষুধ উৎপাদন, শিক্ষা, কমিউনিটি ফার্মাসিস্ট এবং গবেষণা কাজে নিয়োজিত। এসব উন্নত বিশ্বে তাই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় রোগী মৃত্যুর হার, ভুল চিকিৎসায় অঙ্গহানি কিংবা রোগীদের তথ্য ব্যবস্থাপনায় প্রায় শতভাগ সফলতা অর্জন করেছে। এছাড়া ওষুধের পিছনে সরকার এবং ব্যক্তিক্ষেত্রে ব্যয় অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। তাই উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের বেশকিছু বেসরকারি হাসপাতালে এ ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্টবৃন্দ সফলতার সাথে কাজ করছেন। যদিও তাদের ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট হিসেবে মূল কাজে সম্পৃক্ত করা হয়নি। শুধুমাত্র চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন মোতাবেক ওষুধ বিতরণ এবং এর রক্ষণাবেক্ষণেই তাদের ক্ষেত্র সীমাবদ্ধ। অপরদিকে সরকারি হাসপাতালগুলোতে বি ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্টবৃন্দ ওষুধ রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিতরণের সাথে জড়িত রয়েছেন। তাই বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি অত্যন্ত মলিন এবং অবহেলিত। আর ক্লিনিকগুলোর কথা না হয় নাই বা উল্লেখ করি। ওষুধ নিয়ে যে সমস্ত অব্যবস্থাপনাগুলো সচরাচর অবলোকন হয় যেমন ওষুধ পাচার হওয়া, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দামি দামি জীবন বাঁচানো ইনজেকশন নষ্ট হয়ে যাওয়া, ক্ষেত্র বিশেষে নিম্নমানের ওষুধ ক্রয়, ওষুধের সঠিক বিতরণ বা নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত না হওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। এক্ষেত্রে একজন বি ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্টের প্রয়োজনীয় জ্ঞানের অভাবেই অধিকাংশ সমস্যার সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে সরকার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিদেনপক্ষে একটি করে প্রধান ফার্মাসিস্ট পদ চালু করে এবং উক্ত পদে একজন এ ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্ট বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে পূরণ করেন তাহলে ওষুধ ব্যবস্থাপনার আমূল পরিবর্তন সাধিত হবে, যা মোটেও ব্যয়সাপেক্ষ নয়।এটি আজ সকল ফার্মাসিস্টদের প্রাণের দাবি। এক্ষেত্রে ফার্মাসিস্টদের মূল কাজ হবে ওষুধের রক্ষণাবেক্ষণ, সরবরাহ, ক্রয়, তথ্য ব্যবস্থাপনা, রোগীদের সাথে কাউন্সেলিং ইত্যাদি। এই বিষয়ে যথাযোগ্য কমিটি গঠন করে সেই ফার্মাসিস্টবৃন্দের কর্মপরিধি কি হবে তা নির্ধারণ করা যেতে পারে। একজন দক্ষ ফার্মাসিস্ট পারবেন রোগীদের জন্য নিরাপদ ও যৌক্তিক ওষুধের ব্যবহার নিশ্চিত করতে। অপরদিকে নিম্নমানের ওষুধ ব্যবহারের কুফলতা সম্পর্কে জনগণকে সচেতনও করে তুলতে পারেন। সফলতার ধাপে ধাপে এটি ছড়িয়ে দেয়া হবে জেলা উপজেলার হাসপাতালগুলোতেও। ধীরে ধীরে দেশের সকল ক্লিনিক এবং ওষুধের দোকানেও পরবর্তীতে এ ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্ট নিয়োগ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দক্ষ লোকবল ইতিমধ্যে আমাদের দেশে রয়েছে। তবে এই পদক্ষেপের জন্য চিকিৎসক, সেবিকা তথা স্বাস্থ্যখাতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অভিমত নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রয়োজন।
চিকিৎসা সেবায় চিকিৎসকদের অবদান অবিস্মরণীয়। তাদের যথাযোগ্য এবং সুনিপুণ কর্মের ফলেই আজকে স্বাস্থ্যখাতের এই অভূতপূর্ব অর্জন সাধিত হয়েছে। চিকিৎসকের প্রধান দায়িত্ব রোগীর রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে ওষুধের চয়ন পর্যন্ত। তথাপি হাসপাতালে বা ক্লিনিকে ওষুধের সঠিকভাবে ব্যবহার, উৎপাদন, সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ, বিতরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের জ্ঞান অত্যন্ত সীমিত। বিধায় উক্ত খাতে সরকারের গৃহীত নীতিমালা সফলতার আলো দেখছে না। স্বাস্থ্যখাতে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে। আওয়ামী লীগ সরকার একটি আধুনিক স্বাস্থ্যনীতি জাতিকে উপহার দিয়েছে। কিন্তু কোন এক অজানা কারণে নতুন ওষুধ নীতিমালা তৈরির প্রক্রিয়াটি স্থবির হয়ে আছে। আমার জানামতে উক্ত ওষুধ নীতিমালায় ওষুধ বিশেষজ্ঞগণ এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তাই অবিলম্বে ওষুধ নীতিমালা বাস্তবায়ন করে জনস্বাস্থ্য খাতে ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট পদ সৃষ্টি করা হোক। আমরা আর কোন শিশু সাদিয়ার মত দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না। আর কোন পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ বহন করার মত বেদনাদায়ক সংবাদ শুনতে চাইনা। উপরোক্ত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা হলে একটি প্রাণও যদি বাঁচানো সম্ভব হয়, তাই হোক আমাদের প্রত্যাশা।
(Writer: M A Muhit)
Muhammad Arifur Rahman
Assistant professor and Head
Department of Pharmacy