দীর্ঘজীবী ও দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে প্রয়োজন যে ৭টি খাবরের

Author Topic: দীর্ঘজীবী ও দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে প্রয়োজন যে ৭টি খাবরের  (Read 1073 times)

Offline Mafruha Akter

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 309
    • View Profile
দীর্ঘদিন সুস্থ থাকার জন্য রোগমুক্ত থাকা অত্যন্ত জরুরী। মানুষকে রোগমুক্ত নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা দেয়ার জন্য খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞানীদের চেষ্টার অন্ত নেই। বিভিন্ন রোগের আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য এবং মানুষকে দীর্ঘায়ু প্রদানের জন্য উপযুক্ত পুষ্টি উপাদান আবিষ্কারের লক্ষ্যে অবিরাম গবেষণা চলছে তাঁদের। সারা বিশ্বের খাবারের মধ্য থেকে দীর্ঘজীবী হবার কিছু খাবার উঠে এসেছে এসব গবেষণায়। আসুন জেনে নিই খাবারগুলো কী -

ফুলকপি :
শীতকালে ফুলকপি আমাদের রসনাকে তৃপ্ত করে। ফুলকপিতে রয়েছে সালফারসমৃদ্ধ একটি উপাদান, যার নাম সালফোরাফেন। এই উপাদানটি ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর। এছাড়া ফুলকপিতে রয়েছে কোয়েরসেটিন, যা বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।

বাদাম :
বাদামে লবণ নেই। কাঁচা বা ভাজা যে বাদামই খাওয়া হোক না কেন, ভিটামিন ই-এর খুব ভালো উপাদান যোগাবে শরীরে। এছাড়া বাদামে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম যা হৃদরোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকর।
আমেরিকার লস অ্যাঞ্জলসের কাছে একটি স্বাস্থ্য গবেষণা কেন্দ্রের কয়েকজন গবেষক দীর্ঘদিন অধূমপায়ী ও নিরামিষভোজী একদল লোকের খাদ্যাভ্যাস পর্যবেক্ষণ করেন। তাতে দেখা গেছে যারা সপ্তাহে অন্তত পাঁচ-ছয় বার এক মুঠি করে বাদাম খেয়েছেন, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কদাচিত্‍ বাদাম খায় এমন লোকের তুলনায় অর্ধেক।

কন্দজাতীয় খাবার :
মাটির নিচ থেকে আমরা কন্দজাতীয় যেসব খাবার পাই সেগুলোর মধ্যে পেঁয়াজ এবং রসুনের গুণের কথা না বললেই নয়! এ জাতীয় খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে জৈব সালফার। রসুনের নির্যাস রক্তের ঘনত্ব কমিয়ে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা হ্রাস করে। ভারতে এক গবেষণায় দুশো বাইশজন হৃদরোগীকে রোজ ছয় থেকে দশ গ্রাম রসুন খাইয়ে অত্যন্ত সুফল পাওয়া গেছে। চীনে কয়েকজন রোগ বিশেষজ্ঞ পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন পেঁয়াজ অথবা পেঁয়াজ জাতীয় শাকসবজি পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধে খুবই সহায়ক।

আঙুর :
নিউ ইয়র্কের একদল ফল উত্‍পাদন বিশেষজ্ঞ গবেষণা করে দেখেছেন আঙুরে রয়েছে রেসভেরাট্রোল নামের এমন একটি উপাদান যা রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে লাল বা বেগুনি আঙুরের রস এবং কিশমিশে এই জিনিসটা বেশি পাওয়া যায়। তবে রোদে শুকানো কিশমিশে রেসভেরাট্রোল নাও থাকতে পারে। কারণ সূর্যের আলো এই উপাদানের জন্য ক্ষতিকর।
লাল আঙুরে কোয়েরসেটিন নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা ক্যান্সারে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কাজ করে। লাল এবং হলুদ পেঁয়াজ, ফুলকপিতেও রয়েছে এই পদার্থ। কোয়েরসেটিন প্রথমে মানবদেহে নিষ্ক্রিয় থাকে। তারপর কোনো রোগজীবাণু বিশেষ করে ক্ষতিকর কোষগুলোর আনাগোনা দেখলেই সাথে সাথে ঝাঁপিয়ে পড়ে!

সবুজ চা :
চা-কে অনেকে বিলাসের উপকরণ বলে মনে করলেও চা একটি উপকারী পানীয়। বিশেষ করে গ্রিন টি বা সবুজ চা। সবুজ চায়ে এপিগ্যালোক্যাটেচিন গ্যালেট নামে বিশেষ উপাদান আছে। এই শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফুসফুসের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে। জাপানে সবুজ চা খুবই জনপ্রিয়। জাপানীরা আমেরিকানদের চাইতে দ্বিগুণ ধূমপান করে তবু তাদের ফুসফুস ক্যান্সার কম হবার কারণ এই সবুজ চা!

সয়াবিন :
সয়াবিন হাজার হাজার বছর ধরে এশিয়াবাসীদের অন্যতম প্রধান শস্য। ১৯৮২ সালে জাপানের ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একদল গবেষক আড়াই লাখ লোকের ওপর অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছেন যারা রোজ সয়াবিনের স্যুপ খায় অন্ত্রের ক্যান্সারে তাদের মৃত্যু ঝুঁকি অন্যান্যদের চেয়ে কম। জেনিস্টেইন নামক স্বাভাবিকভাবে জাত একটি যৌগ রয়েছে সয়াবিনে যা ক্যান্সারের ক্ষতিকর কোষগুলোকে বাধা দেয়। সয়া দই, সয়া দুধ, সয়া ময়দা এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে জেনিস্টেইন থাকে।

সামুদ্রিক মাছ :
পৃথিবীতে সুস্থ-সবল মানুষদের মধ্যে এস্কিমোরা অন্যতম। রোজ রোজ প্রচুর পরিমাণে তেলযুক্ত খাবার খেয়েও দিব্যি সুস্থ থাকে তারা! এ ব্যাপারটি প্রথম প্রথম বিজ্ঞানীদের অবাক করলেও পরে তারা এস্কিমোদের নীরোগ থাকার কারণ খুঁজে পেয়েছেন। এস্কিমোরা প্রচুর পরিমাণে সামুদ্রিক মাছ খায়। স্যামন, মেকারেল, হেরিং ইত্যাদি মাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে চর্বি পায় তারা। এসব সামুদ্রিক মাছের চর্বিতে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। মাছের তেলের এই উপাদান রক্তকে পাতলা করে কোলেস্টেরল কমিয়ে আনে। ফলে তাদের উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে না। তাছাড়া মাছের তেল কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়ক।
Mafruha Akter
Sr. Library officer
Daffodil International University
(Uttara Campus)