নিয়মিত চর্চায় দক্ষতা আসে?
কথায় আছে, কোনো বিষয়ে দক্ষতা পেতে হলে ওই বিষয়ে নিয়মিত চর্চা অপরিহার্য। বেহালা বাজানো, গলফ কিংবা দাবা খেলার মতো যেকোনো কাজে সাফল্যের জন্যই আগে থেকে বিষয়টি নিয়ে নিবিড় চর্চা করতে হবে। কিন্তু একটি বিষয় নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন চর্চা করলেই কি তাতে পরিপূর্ণ দক্ষতা আসে?
প্রশ্নটি নিয়ে মনস্তত্ত্ববিদেরা দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন। সম্প্রতি একটি নতুন গবেষণার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী দাবি করছেন, কোনো বিষয়ে সাফল্য অর্জনে চর্চার যতটা প্রভাব আছে বলে তাঁরা মনে করেন, আসলে ততটা নেই।
ওই গবেষণায় নেতৃত্ব দেন গবেষক ব্রুক ম্যাকনামারা। তাঁদের গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী সাইকোলজিক্যাল সায়েন্স। গবেষকেরা সংগীত, খেলাধুলা, শিক্ষা ও পেশাগত দক্ষতাবিষয়ক মোট ৮৮টি গবেষণা নিবন্ধের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখতে পান, কোনো বিষয়ে নিবিড় চর্চার সঙ্গে দক্ষতার একটা সম্পর্ক অবশ্যই আছে। তবে চর্চার হেরফের হওয়ার কারণে দক্ষতায়ও কিছু পার্থক্য দেখা যায়। হিসাব অনুযায়ী, বিশেষ দক্ষতার মাত্র ১২ শতাংশ অর্জিত হয় চর্চার ফলে।
ব্রুকের মতে, অব্যাহত চর্চা প্রশ্নাতীতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিষয়টাকে যতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়, আসলে তা ততটা নয়। গবেষকেরা জানিয়েছেন, বিষয় ভেদে চর্চার সঙ্গে সঙ্গে দক্ষতা অর্জনের হার পরিবর্তিত হয়। খেলাধুলার ক্ষেত্রে চর্চার মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনের হার সর্বোচ্চ (২৬ শতাংশ)। তবে ব্যক্তিভেদে এই দক্ষতা অর্জনেও পার্থক্য দেখা যায়। আর সংগীতে দক্ষতা অর্জনেও চর্চার ভূমিকা অনেক (২১ শতাংশ)।
বিশেষজ্ঞরা ‘জন্ম’ নেয়, নাকি ‘তৈরি’ হয়—বিজ্ঞানীদের মধ্যে এই প্রশ্ন উঠেছে জিনবিদ্যা (জেনেটিকস) আবিষ্কারের পরপরই। ২০ বছর আগে গবেষক কে. এন্ডারস এরিকসনের প্রভাবশালী এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, দক্ষতা হলো একটি বিষয়ে দীর্ঘ সময় ধরে নিবিড় চর্চা বা অনুশীলনের ফল। জনপ্রিয় বিভিন্ন বই ও সাময়িকীতে এই গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়। আর এটি মানুষকে কঠোর পরিশ্রমের প্রেরণা দেয়। তবে ব্রুকের মতে, তাঁদের গবেষণার প্রাপ্ত তথ্যের সঙ্গে এরিকসনের ওই গবেষণার তথ্যে কোনো মিল পাওয়া যায়নি।
চর্চা যদি গুরুত্বপূর্ণ না হয়, তবে দক্ষতা অর্জনের জন্য কী করতে হবে? গবেষকেরা ধারণা করছেন, কোনো বিষয়ের চর্চা শুরুর সময়টা দক্ষতা অর্জনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। কারণ, অনেক কম বয়সে এই চর্চা শুরু করা হলে দক্ষতা অর্জনের জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়। আর ব্যক্তিভেদে দক্ষতা অর্জনের হার ভিন্ন হয় ব্যক্তির সাধারণ জ্ঞান ও বিশেষ কোনো কাজের সামর্থ্যের কারণে।
সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট।
http://www.prothom-alojobs.com/index.php?NoParameter&Theme=article_zone_new&Script=articleviewdetailshttp://www.prothom-alojobs.com/index.php?NoParameter&Theme=article_zone_new&Script=articleviewdetails_new&ArticleID=210_new&ArticleID=210