শীর্ষ সোশাল মিডিয়া ফেইসবুকে ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাতিক নেতা এবং সরকারকে নিয়ে ‘কটুক্তি’ করার অভিযোগে ৮ ব্যক্তিকে মোট ১২৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত।
ফেইসবুকে ‘ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, সরকার বিরোধী প্রচারণা, মিথ্যাচার’ এবং সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনিকে উদ্দেশ্য করে ‘অপমানসূচক বক্তব্য’ দেয়ার অভিযোগে ৭ থেকে ২০ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেয় ইরানের আদালত।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ম্যাশএবল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মামলায় অভিযুক্ত ওই ৮ ব্যক্তিকে ইরানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী রেভিলিউশনারি গার্ড গ্রেপ্তার করেছিল ২০১৩ সালে। ওই ৮ ব্যক্তির মধ্যে এক ব্রিটিশ নারীও আছেন। বিভিন্ন অভিযোগে রোয়া সাবেরিনেজাদ নোবাখত নামে ওই নারীকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
এপ্রিল মাসে ম্যানচেস্টার ইভিনিং নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নোবাখত ফেইসবুক বন্ধুদের পোস্ট এবং অনলাইন চ্যাটে ইরানের সরকারকে ‘অতি নিয়ন্ত্রণকামী’ এবং ‘অতি ইসলামী’ বলে মন্তব্য করেছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার স্বামী।
নোবাখত বাদে বাকি ৭ অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ও সাজার সময় ছাড়া বিস্তারিত কোনো তথ্য পায়নি সংবাদ মাধ্যমগুলো। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, ‘আমির গোলেস্তানি (২০ বছর কারাদণ্ড), মুসৌদ ঘাসেমখানি (১৯ বছর ৯১ দিন), ফারিবোর্জ কারদারপার(১৮ বছর ৯১ দিন), সায়েদ মউসুদ সায়েদ তালেবি(১৫ বছর ১ দিন), আমিন আকরামিপৌর (১৩ বছর), মেহেদি রেশাহরি(১১ বছর) এবং নাঘমেহ শিরাজি(৭ বছর ৯১ দিন)।
এদিকে ফেইসবুকিংয়ের কারণে এমন ‘অস্বাভাবিক কঠোর’ রায়ের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা। ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন ফর হিউম্যান রাইটসের পক্ষ থেকে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, --“ ইরানের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করা এবং সাইবারস্পেসে নাগরিকদের কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ঠেকাতেই যে এমন রায় দেয়া হয়েছে তা স্পষ্ট।”
একই রকম মন্তব্য করেছেন দ্য ইরান হিউম্যান রাইটস ডকুমেন্টেশন সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক গিসৌউ নিয়া। ম্যাশএবলকে এক ইমেইলে নিয়া বলেন, “ফেইসবুক পোস্টের জন্য ২০ বছরের কারাদণ্ড? ঈশ্বরের দোহাই! অস্বাভাবিকরকম কঠোর সাজা এটি। অভিযুক্তদের দূর্ভাগ্য যে মামলার দায়িত্বে ছিলেন জজ মঘিশেহ। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, আইনজীবি এবং সাংবাদিকদের ছোট অপরাধে অস্বাভাবিক কঠোর সাজা দেওয়ার জন্য কুখ্যাতি আছে তার।”