‘বিশ্বকাপটাই সবচেয়ে বড়’

Author Topic: ‘বিশ্বকাপটাই সবচেয়ে বড়’  (Read 636 times)

Offline maruppharm

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1227
  • Test
    • View Profile
বার্সেলোনার হয়ে লিওনেল মেসি জিতেছেন সম্ভাব্য সব শিরোপাই। কিন্তু আক্ষেপ একটাই, আর্জেন্টিনার হয়ে জেতেননি কিছুই। এবার ব্রাজিলেই কি ফুরাবে অপেক্ষা? ফুটবল সাময়িকী ফোরফোরটুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেসি জানালেন এবার বিশ্বকাপটা তাঁর চাই-ই চাই
l বিশ্বকাপের দিকে কতটা আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছেন?
লিওনেল মেসি: (হেসে) সত্যি বলতে কী, ব্যাপক। এটা বিশেষ এক প্রতিযোগিতা, ফুটবলের সবচেয়ে সুন্দর প্রতিযোগিতা। এটা দারুণ এক টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে।
l দক্ষিণ আমেরিকায় বলেই কি আপনার কাছে এটি বিশেষ?
মেসি: আমি জানি না এটা বেশি ‘বিশেষ’ কিনা। তবে যেহেতু এবারের বিশ্বকাপটা বাড়ির পাশেই হচ্ছে তাই এটা নিশ্চিত, আর্জেন্টিনা অন্যবারের চেয়ে অনেক বেশি সমর্থক পাবে। তবে আমার কাছে প্রতিটি বিশ্বকাপই আলাদাভাবে বিশেষ কিছু, সেটা যেখানেই হোক না কেন।
l টুর্নামেন্টটা (বিশ্বকাপ) নিজেই কি সবচেয়ে বড় নয়?
মেসি: বিশ্বকাপই সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট, তবে ক্লাব পর্যায়ে চ্যাম্পিয়নস লিগও বিস্ময়কর রকম বড় এক টুর্নামেন্ট। আমি ভাগ্যবান এখানে খেলেছি ও চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।
l বিশ্বকাপের সময় আর্জেন্টিনার আবহটা কেমন থাকে?
মেসি: আর্জেন্টিনার জনগণের কাছে এটা মহাগুরুত্বপূর্ণ এক ব্যাপার। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়েই তারা অপেক্ষা করছে। আমাদের নিয়ে তাদের প্রত্যাশাটাও আকাশচুম্বী। এটা হয়েছে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আমরা যেভাবে খেলে চূড়ান্ত পর্বে উঠেছি সেটার কারণেই।
l বিশ্বকাপ নিয়ে ছেলেবেলার কোনো স্মৃতি মনে পড়ে?
মেসি: প্রথম যে বিশ্বকাপটা আমার মনে আছে সেটা ফ্রান্স ’৯৮। কোয়ার্টার ফাইনালে ডেনিস বার্গক্যাম্পের গোলে হল্যান্ডের কাছে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। ২০০২ সালেরটাও মনে আছে। মনে পড়ছে আর্জেন্টিনা ফেবারিট হিসেবেই গিয়েছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গ্রুপপর্ব থেকেই বাদ পড়ে যায়। মেসি
l এই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা অন্যতম ফেবারিট। এটাকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
মেসি: সত্যিই ব্রাজিল থেকে ট্রফি নিয়ে ফেরার বড় এক সুযোগ আর্জেন্টিনার সামনে। তবে এটা শুধু আমাদের যেসব খেলোয়াড় আছে কিংবা যেভাবে আমরা বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছি সেই কারণেই নয়। আমাদের প্রস্তুতি, উৎসাহ, জয়ের ক্ষুধাটাও বড় এক কারণ। ব্যক্তিগতভাবে আমি খুব ঠান্ডা মাথাতেই এটা নিয়ে ভাবছি।
l বার্সেলোনার হয়ে তো সবকিছুই জিতেছেন। আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ জেতার গুরুত্ব কেমন হবে?
মেসি: যেকোনো খেলোয়াড়ের কাছেই বিশ্বকাপ জেতার চেয়ে বড় আর কী আছে, এটা তো অদ্বিতীয়। আমি ভাগ্যবান বার্সেলোনার হয়ে অনেক ট্রফি জিতেছি, প্রতিটিই আমার কাছে বিশেষ কিছু। তবে বিশ্বকাপটাই সবচেয়ে বড়। আমি কি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নের পদকের সঙ্গে ব্যালন ডি’অর বদলে নেব? হ্যাঁ। আমি সব সময়ই বলে আসছি দলের সাফল্যে অংশ হওয়ার চেয়ে ব্যক্তিগত পুরস্কারের গুরুত্ব আমার কাছে নগণ্য।
l আগুয়েরো বলেছেন মাঠে আপনাদের দুজনের বোঝাপড়াটা টেলিপ্যাথিক পর্যায়ের...
মেসি: সেই ১৪-১৫ বছর বয়স থেকে আমরা একে অপরকে চিনি। একসঙ্গে খেলাটা সব সময়ই উপভোগ করি। মাঠের বাইরেও আমাদের দারুণ বন্ধুত্ব। এটাই মাঠে আমাদের সেরাটা বের করে আনতে সাহায্য করে।
l ২০০৮ অলিম্পিকের সোনা জয়ই আর্জেন্টিনার হয়ে আপনার সেরা সাফল্য?
মেসি: আর্জেন্টিনার হয়ে ভালো-মন্দ দুই ধরনের অভিজ্ঞতাই আছে। সবচেয়ে সুন্দর ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ জয়, ২০০৮ অলিম্পিকও তা-ই। ২০০৭ কোপা আমেরিকাটাও দারুণ কেটেছে, যদিও দুর্ভাগ্যক্রমে ফাইনালে হেরেছি। তবে সত্যি বলছি, হ্যাঁ, সোনা জেতাটাই আমার সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত।
l মেসি, আগুয়েরো, ডি মারিয়া ও হিগুয়েইন—আক্রমণভাগটা তো অসাধারণ...
মেসি: বার্সেলোনার চেয়ে এখানে আমার ভূমিকাটা একটু ভিন্ন। আর্জেন্টিনায় পিপাই (হিগুয়েইন) আমাদের সেন্টার ফরোয়ার্ড। আমি একটু নিচে খেলি। আমি এই ভূমিকাতেই খুশি।
l কোচ হিসেবে সাবেলা কেমন?
মেসি: তিনি অসাধারণ এক মানুষ। ফুটবলটা বেশ ভালো বোঝেন। দলকে কীভাবে খেলাতে চান সেই ধারণাও পরিষ্কার। পুরো বাছাইপর্বে ও প্রীতি ম্যাচেও তিনি দলে একই খেলোয়াড় রেখেছেন, প্রথম একাদশেও তেমন পরিবর্তন ছিল না। একটা দল হিসেবে গড়ে উঠতে ব্যাপারটা আমাদের সাহায্যই করেছে। আমরা একে অপরকে বেশ ভালোভাবে জানি। গত বছর দুয়েকে দল এতে আরও শক্তিশালী হয়েছে। তাঁর অসাধারণ ফুটবল-মস্তিষ্ক । জানেন সেটা কীভাবে খেলোয়াড়দের মধ্যে সঞ্চালন করা যায়।
l আর্জেন্টিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কারা?
মেসি: যে দলগুলো বিশ্বকাপে সব সময়ই ভালো করে সেগুলোই—ব্রাজিল, জার্মানি, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, হল্যান্ড, স্পেন। যেকোনো টুর্নামেন্টেই এরা ফেবারিট। নিজেদের ইতিহাসের সেরা সময় কাটাচ্ছে এমন কিছু দলও আছে। তবে আমার কাছে আর্জেন্টিনার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ওই বড় দলগুলোই। আর্জেন্টিনা ও এদের একটি ফাইনালে খেলবে আমরা শুধু এটাই আশা করতে পারি। প্রতিটা ম্যাচেই আমরা একই মানসিকতা নিয়ে খেলব যাতে গ্রুপপর্ব পেরোনোটা নিশ্চিত হয়।
l নেইমারের মতো আপনার কাঁধেই দেশের প্রত্যাশার সবটুকু ভার। কীভাবে সামলাবেন?
মেসি: মাথা ঠান্ডা রেখে। আমি মনে করি না আর্জেন্টিনা জাতীয় দল আমার ওপর নির্ভরশীল। সত্যটা পুরোই ভিন্ন। আমাদের দারুণ কিছু খেলোয়াড় আছে যারা সামর্থ্যের সেরাটা খেলে ট্রফিটা জিততে পারে। আমাদের মূল লক্ষ্যই তো এটা।
l নেইমারকে কি চাপ সামলানো নিয়ে কোনো পরামর্শ দিয়েছেন?
মেসি: না, সত্যিই না। বিশ্বকাপ নিয়ে আমরা কদাচিৎই আলাপ করেছি। কারণ বার্সেলোনাকে নিয়ে আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার ছিল।
·l সব সময়ই ম্যারাডোনার সঙ্গে আপনার তুলনা হয়। বলা হয় পার্থক্যটা হলো ম্যারাডোনা বিশ্বকাপ জিতেছেন, আপনি পারেননি। এটাই কি অনুপ্রেরণা?
মেসি: আমি কখনোই অন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে তুলনা করি না। এই ব্যাপারগুলোকে আমি গুরুত্বই দিই না। ডিয়েগোর সঙ্গে তুল্য হওয়াটা খারাপ কিছু নয়, তবে বিশ্বকাপ জয়ের অনুপ্রেরণা হতে পারে না। আমি বিশ্বকাপ জিততে চাই, কারণ এটা আর্জেন্টিনার সবার ও দলের জন্য দারুণ কিছু হবে। আশা করছি, আমরা লক্ষ্যটা ছঁুতে পারব।
l এটা কি এমন কিছু যেটা শুধু নিজের জন্যই পেতে চান?
মেসি: অবশ্যই। ১০০ ভাগ।
l সেরা গোলদাতা হয়ে গোল্ডেন বুট জেতার সম্ভাবনা আপনার কতটা?
মেসি: সত্যি বলছি, ওটা আমার লক্ষ্য নয়। আমি বিশ্বকাপে যাচ্ছি চ্যাম্পিয়ন হয়ে ট্রফিটা হাতে তুলতে। ওটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
l বিশ্বকাপ জয় কি আপনার ভবিতব্য?
মেসি: আশা তো করি। তবে প্রশ্নটার উত্তর একমাত্র ঈশ্বরই জানেন! (সংক্ষেপিত)
Md Al Faruk
Assistant Professor, Pharmacy