Science & Information Technology > Science Discussion Forum

তৈরি হচ্ছে মন বোঝার যন্ত্র

(1/1)

maruppharm:
মনে মনে কী ভাবছেন, তা ধরা পড়বে যন্ত্রে। মানুষের মন বোঝার এই যন্ত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানী জ্যাক গ্যালান্ট। আপনার চিন্তা ডিকোডিং করে তা বলে দিতে পারবেন তিনি। অর্থাত্, মনের কথা পড়তে পারেন এই বিজ্ঞানী। এটা তিনি পারেন শুধু তাঁর যন্ত্রের সাহায্যে।

জ্যাকের তৈরি যন্ত্রে থাকা মুভি দেখলে মস্তিষ্কে যে ছবি তৈরি হয়, তার কোড বিশ্লেষণ করতে পারেন তিনি। বিবিসিতে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলের গবেষক জ্যাক গ্যালান্ট। গ্যালান্টের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিকে প্রথমে ওই যন্ত্রের সাহায্যে একটি মুভি দেখানো হয়। এ সময় তাঁর মস্তিষ্কে যাওয়া সংকেতগুলো পরিমাপ করতে থাকেন একদল গবেষক। এরপর মস্তিষ্কের সেই ঝাপসা, কম্পোজিট ছবিগুলোকে একটি বিশেষ অ্যালগরিদমের মাধ্যমে পুনর্নিমাণ করা হয়। অর্থাত্, একজন ব্যক্তি কোনো কিছু দেখার পর মস্তিষ্কে যে সংকেত যায়, সেগুলো মেপে তা মুভিতে রূপান্তর করা হয়।
জ্যাক গ্যালান্ট অবশ্য ব্রেইন ডিকোডার তৈরি করতে চান না। তাঁর গবেষণা মূলত কীভাবে ভিজ্যুয়াল সিস্টেম কাজ করে, বিষয়টি দেখা এবং মস্তিষ্ক কীভাবে ভিজ্যুয়াল তথ্য ধারণ করে, তার মডেল তৈরি করা।
এ ক্ষেত্রে ব্রেইন রিডারকে আলাদা একটি প্রকল্প বলে মনে করেন তিনি।

গ্যালান্ট বলেন, ‘আপনি যদি মস্তিষ্ক কীভাবে ছবি ধারণ করে, তার খুব ভালো মডেল তৈরি করতে পারেন, তারপর সেটা থেকে সেরা ডিকোডার বানানো যায়।’ তবে এটাকে কোনো বিজ্ঞান মানতে নারাজ তিনি।
বিজ্ঞান হোক বা না হোক অনেকেই আশঙ্কা করছেন ভবিষ্যতে চিন্তা ধরার এই যন্ত্র সরকারিভাবে ব্যবহার করা হবে এবং মানুষের চিন্তা কবজা করা হবে।
গ্যালান্ট অবশ্য বলছেন, এ ধরনের যন্ত্র নিয়ে ভয়ের কারণ থাকলেও এখনই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মস্তিষ্ক পড়ার জন্য এ ধরনের যন্ত্র তৈরিতে যে দুটি মূল বাধা রয়েছে তা দূর করতে ৫০ বছর লেগে যাবে। এই বাধা দুটি হচ্ছে পোর্টাবিলিটি বা বহনযোগ্যতা ও মস্তিষ্ক সংকেতের শক্তি।
বর্তমানে মস্তিষ্কের সংকেত পড়তে এমআরআই যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। এমআরআই যন্ত্র মস্তিষ্কের কার্যবিধি দেখার সেরা উপায় হলেও এটা পূর্ণাঙ্গ বা সহজে বহনযোগ্য নয়। এমআরআই মেশিনের ‘সাবজেক্ট’ সহজে নড়াচড়া করতে পারে না। ব্যয়বহুল এ যন্ত্রটির আকারও বিশাল।

এদিকে মস্তিষ্কের ছবি ও চলচ্চিত্রের ছবির তুলনা করলে দেখা যায়, ছবির মানের দিক থেকেও যথেষ্ট পার্থক্য থাকে। এমআরআই স্ক্যানে যে ছবি তোলা হয় তাতে ঝকঝকে ছবি পাওয়ার মতো রেজুলেশন থাকে না। তাই গ্যালান্টের মতে, যত দিন না মস্তিষ্ক কার্যকলাপ ধরার উন্নত যন্ত্র তৈরি করা যায়, ততদিন পর্যন্ত সাধারণ ব্যবহারের উপযোগী মস্তিষ্ক ডিকোডিং মেশিন তৈরি সম্ভব নয়।

মানুষের স্বপ্ন ধরার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীস্বপ্ন ধরার যন্ত্র
গ্যালান্ট মস্তিষ্কের কোনো ডিকোডিং মেশিন তৈরিতে কাজ না করলেও অন্যেরা বসে নেই। সম্প্রতি জাপানের গবেষকেরা স্বপ্ন ধরার যন্ত্র তৈরিতে কাজ করছেন। গবেষকেরা এ কাজে ব্যবহার করছেন এফএমআরআই নামের একটি পদ্ধতি।

স্বপ্নের ঘটনা অনেকের মনে থাকে, অনেকের থাকে না। কারও মনে পড়ে অস্পষ্ট। গবেষকেরা দাবি করেন মস্তিষ্ক স্ক্যান করে ধরা যাবে স্বপ্ন।

গবেষকেরা বিশেষ অ্যালগরিদম ব্যবহার করে একটি ভিজ্যুয়াল ইমেজারি ডিকোডার তৈরি করেন। গবেষকেরা জানান, তাঁরা মস্তিষ্ক স্ক্যান করে ঘুমন্ত অবস্থায় তার কার্যকলাপ ধরতে সক্ষম হয়েছেন। এটি অবশ্যই একটি বড় সফলতা।

গবেষক গ্যালান্টের মতে, স্বপ্ন ধরার সেরা যন্ত্রটি তৈরি করতে হলে প্রয়োজন হবে মানুষের মনের কথাগুলো ডিকোড করা। এমন কোনো যন্ত্র তৈরি করা যা মানুষের মনের কথাকে ব্যবহারিক রূপ দেবে। তারপর মন থেকে চাইলের গাড়ির মতো যন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া যাবে।

Navigation

[0] Message Index

Go to full version