মুরগির খাদ্য নিয়ে সংবাদমাধ্যমের খবরে এবার বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজেরাই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা। ট্যানারির বিষাক্ত বর্জ্যে মুরগির খাদ্য ও তাতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হওয়ার পর একপক্ষ সেই বক্তব্য মেনে নিয়ে সাধুবাদ জানিয়েছে। আরেক পক্ষ এই খবর প্রত্যাখ্যান করেছে।
এসব খবরের পর পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজেদের যে বক্তব্য তুলে ধরছেন তা সাধারণের মাঝে বিভ্রান্তি বাড়াচ্ছে। গত ১৬ জুলাই একটি ইংরেজি দৈনিকে এবং ১৯ জুলাই একটি বাংলা দৈনিকে বিজ্ঞাপন দুটি প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি শিল্প সমন্বয় কমিটি (বিপিআইসিসি) তাদের মুরগির মাংস ও ডিম সবচেয়ে নিরাপদ দাবি করছে। বলছে, পোল্ট্রির মুরগি, ডিম ও ফিড সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। অন্যদিকে কাজী ফার্মস নামে একটি পোল্ট্রি উৎপাদন প্রতিষ্ঠান বলছে, মিডিয়া রিপোর্টই সত্যি।
যদিও এই কথা বলে, কাজী ফার্মস তাদের নিজেদের পোল্ট্রি বিক্রির লক্ষ্যে দাবি করছে একমাত্র তারাই ট্যানারি বর্জ্যকে মুরগীর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে না।
মিডিয়ার খবরকে স্বাগত জানিয়ে কাজী ফার্মস তার বিজ্ঞাপনে খবরগুলোর বরাত দিয়ে বলছে, বাংলাদেশে যে মিট অ্যান্ড বোন মিল (এমবিএম) বা মাংস ও হাড়ের তৈরি পোল্ট্রিখাদ্য মুরগী ও মাছকে দেওয়া হচ্ছে তা বিষাক্ত। ট্যানারির বর্জ্যকে কাজী ফার্ম মুরগীর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে না, এ কথা জানিয়ে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশের অধিকাংশ মুরগী ও মাছের খাদ্যে ক্ষতিকারক এমবিএম ব্যবহৃত হচ্ছে।
অন্যদিকে বিপিআইসিসি বলছে, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ফিআব)-এর সদস্যভুক্ত কোনো একটি মিলেও ট্যানারির বর্জ্য, ক্রেমিয়াম বা অন্য কোনো ধরনের ক্ষতিকারক উপকরণ ব্যবহার করা হয় না।
এমবিএমে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকে উল্লেখ করে কাজী ফার্মস তার বিজ্ঞাপনে বলেছে, পোল্ট্রি খাদ্য হিসাবে এমবিএম সবচেয়ে সস্তা যা কসাইখানার বর্জ্য নারী-ভুড়ি, হাড়, পা ইত্যাদি জ্বালিয়ে নিয়ে পরে শুকিয়ে গুঁড়ো করা হয়। এসব খাদ্যে বিষাক্ত ক্রোমিয়াম থাকে যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
বিপিআইসিসি একই বিজ্ঞাপনে এমবিএম ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছে এবং স্বীকার করেছে যে অনেকেই এমবিএম ব্যবহার করছেন। আবার একই সঙ্গে গবেষণা রিপোর্ট ও সংবাদমাধ্যমের খবরের নিন্দা করছে সংগঠনটি।
গবেষণার নমুনায়ন ভ্রান্ত হয়েছে দাবি করে তারা বলছেন, এই গবেষণা দুরভিসন্ধিমূলক এবং বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্পগুলোকে ধ্বংসের অপচেষ্টা।
সংবাদমাধ্যমের খবর ও তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশিত দুটি বিজ্ঞাপনের পর সাধারণ মানুষ পোল্ট্রির খাদ্যের ব্যাপারে আরও বিভ্রান্তিতে পড়েছেন।
- See more at:
http://www.banglanews24.com/beta/fullnews/bn/308398.html#sthash.8FfOXZOa.dpuf