মুক্ত বাতাসে বেড়ে উঠুক আপনার সন্তান

Author Topic: মুক্ত বাতাসে বেড়ে উঠুক আপনার সন্তান  (Read 2704 times)

Offline imam.hasan

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 246
    • View Profile
আজকালের বাচ্চারা হয়তো একটু বেশিই ব্যস্ত থাকে লেখাপড়া নিয়ে। এই ভারি ব্যাগ, বই-খাতা, খেলাধুলার যেনো ফুরসতই নেই। খেলাধুলা তো দূরের কথা বাসার সবার সঙ্গে মন খুলে কথা বলারও সুযোগ নেই তাদের। এখন প্রাইভেট তো তখন স্কুল, এখন হোমওয়ার্ক তো তখন প্রাইভেট টিচারের দেওয়া পড়া।

বাচ্চাদের যদি এখন কেউ একজন জিজ্ঞেস করে-বাবু তুমি খেলাধুলা কর? শিশুটি যা উত্তর দেবে তার জন্য হয়তো আপনি মোটেও প্রস্তুত নন! আপনি হয়তো বলবেন, খেলো, কি খেলো, কোথায় খেলো? প্রশ্ন করলেই বলবে, কেন বাসায় বসে কম্পিউটারে!!!

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এ যুগে আপনার শিশুটি হয়তো এভাবেই ঝুঁকছে ইনডোর গেমের প্রতি। আবার জায়গা আর নিরাপত্তার অভাবে আপনিও হয়তো তাকে বাইরে যেতে তাগিদ দিচ্ছেন না!

কিন্তু এতে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে হতে পারে আপনার কোমমতি শিশুটি। বাধাগ্রস্থ হতে পারে তার স্বাভাবিক মানসিক বিকাশ। আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে পারে অনেক!

প্রতিযোগিতার এ বাজারে অধিকাংশ শিশু এক কাঠামোবদ্ধ কঠোর জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক শিশু তো একটুও সময় পায় না প্রকৃতপক্ষে খেলার জন্য!

কিন্তু শিশুর জন্মগত অধিকার হিসেবে তাকে শুধু খেলাধুলার মধ্যে বেড়ে  উঠতে দেওয়ার পক্ষপাতি অনেক বিশেষজ্ঞ।

আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে কেন একটি শিশুর খেলাধুলার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠা দরকার? সম্প্রতি আমেরিকান একাডেমির শিশুরোগ চিকিৎসার এক ক্লিনিক্যাল প্রতিবেদনে  শিশুদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার অগ্রগতি এবং পিতার-মাতার সঙ্গে শিশুদের বন্ধন (The Importance of Play in Promoting Healthy Child Development and Maintaining Strong Parent-Child Bonds) শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুদের সুস্থ মানসিক বিকাশের জন্য মুক্তভাবে খেলার নানা উপকারিতা আছে। যেমন-

. মুক্তভাবে খেলতে দিলে শিশুদের সৃজনশীলতা, কল্পনাশক্তি ও কর্মদক্ষতাসহ অন্যান্য দিকগুলো বৃদ্ধি পাবে।

.উৎসাহী শিশুরা বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে নিজের সংযোগ ঘটাতে পারবে।

. এটা শিশুদের ভয় দূর করতে সহায়তা করবে এবং নিজের প্রতি, কাজের প্রতি তার আস্থা বৃদ্ধি পাবে।

.  শিক্ষানবিশ শিশুরা একটা দলে কাজ করার সুযোগ পাবে এবং এতে তাদের শিক্ষনীয় বিষয়গুলো অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারবে এবং ভুলগুলো সংশোধন করতে পারবে।     

. এটা শিশুদের নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রাথমিক হাতেখড়ি হতে পারে।

. সবচেয়ে বড় ব্যাপার এতে শিশু অফুরন্ত আনন্দ পাবে।

এটা খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, এ ধরনের খেলার কোনো কাঠামো থাকবে না, তা একান্তই শিশুদের দ্বারা চালিত খেলা। এটা বড়দের দেওয়া নির্ধারিত খেলার সময় নয় এবং এটা ঘরে বসে টিভি দেখা , কম্পিউটারে কিংবা ভিডিও গেমে খেলা নয়।

এর মানে এই নয় যে, যখন আপনার সন্তান খেলতে যাবে বিশেষত বাইরে তখন আপনি তার ওপর নজর রাখবেন না।

আসুন এবার আমরা কতগুলো খেলার নাম জেনে নেই যেগুলো আপনার শিশুরা খুব একটা অপছন্দ করবে বলে মনে হয় না।

সত্যিকারের ‘ফ্রি প্লে’ হলো সেটা মোটেই কাঠামোবদ্ধ নয়। যা শিশুর কল্পনাশক্তি বাড়াতে সহায়ক হবে। যেমন-ব্লক এবং পুতুল খেলা। তবে বাচ্চাদের ইলেকট্রনিক্স খেলার প্রতি মোটেই উৎসাহিত করবেন ‍না। এ খেলনাগুলো যেনো ইলেকট্রনিক্স না হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

বাড়ির পাশের মাঠে শুধুমাত্র একজন কোচের কাছে একদল ছেলের ফুটবল খেলা আরেকটি অন্যতম ‘ফ্রি প্লে’। এটা সত্যিকার ‍অর্থেই  একটা ‘ফ্রি প্লে’। কেনন‍া এটা আপনার শিশুর মানসিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে তার দৈনন্দিন শারীরিক পরিশ্রমের ‍কাজটিও হয়।

যদি আপনার সন্তানকে শুধু পড়ানোর পর পড়িয়েই যান তাহলে দেখবেন একসময় সে বিমর্ষ হয়ে পড়ছে। হাপিয়ে উঠছে প্রাত্যহিক চাপে। কাজেই প্রাত্যহিক পড়ার চাপ কমিয়ে তাকে একটু খেলতে দিন নিজের মতো।

দেখবেন আপনার সন্তান কেমন প্রকৃতির মতো উচ্ছল হয়ে উঠেছে। সে যেন আপনাকে আরও একটু বেশি ভালো বাসছে আজকাল।

Offline fatema_diu

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 309
    • View Profile
the day my kid plays, she eats and sleeps early without any fuss.