সালমান খান একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন প্রকৌশলী এবং 'খান একাডেমী'র প্রতিষ্ঠাতা। খান একাডেমী একটি উন্মুক্ত অনলাইনভিত্তিক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। নিজ বাসার ছোট অফিস থেকে যাত্রা শুরু করা, এই শিক্ষাবিদ প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়, বিশেষত গণিত ও বিজ্ঞানের উপর ৩০০০ এর অধিক ভিডিও তৈরি করেছেন। ২০১২ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত, ইউটিউব এ খান একাডেমীর চ্যানেলটি ৩৫৫০০০ এর অধিক গ্রাহককে আকৃষ্ট করেছে। ২০১২ সালে মার্কিন পত্রিকা টাইম এর জরিপে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির বার্ষিক তালিকার একটি উল্লেখযোগ্য নাম, খান একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা, সালমান আমিন খান।
শৈশব
সালমান খানের দাদাবাড়ি বাংলাদেশের বরিশালে। তাঁর বাবা ডা. ফখরুল আমিন খান চিকিৎসক ছিলেন। তাঁর দাদা আব্দুল ওয়াহাব খান ছিলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার (১৯৫৫-৫৮)। সালমানের বাবা অভিবাসী হয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানেই লুইজিয়ানার নিউ অরলিন্স শহরে সালমানের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। ১৯৯১ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সেই বাবাকে হারান।
শিক্ষাজীবন
সালমান ম্যাসাচুসেট্স ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে গণিত এবং তড়িৎ প্রকৌশল ও কম্পিউটার বিজ্ঞান—এ দুই বিষয়ের ওপর স্নাতক করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ প্রকৌশল ও কম্পিউটার বিজ্ঞান এর ওপর স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন সালমান। অতঃপর এমবিএ করেন হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে।
খান একাডেমী
খান একাডেমী একটি অনলাইন ভিত্তিক অ-লাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত সালমান খান এর প্রতিষ্ঠাতা। ২০০৬ সালে এই খান একাডেমীর জন্ম। আর ইউটিউবে এর জন্মদিন অর্থাৎ ইউটিউবে একাউন্ট খোলা হয় ২০০৬ সালের ১৬ নভেম্বর। এখানে গণিত, ইতিহাস, স্বাস্থ্য এবং মেডিসিন, অর্থ, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, জ্যোতির্বিজ্ঞান, অর্থনীতি, সৃষ্টিতত্ত্ব, জৈব রসায়ন, আমেরিকান নগর, কলা ইতিহাস, মাইক্রো ইকোনমিকস এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান এই সবই আপনি শিখতে পারবেন বিনামূল্যে। খান একাডেমী বিভিন্ন বিষয়ের উপর তিন হাজারের বেশি ভিডিও লেকচার, টিউটোরিয়াল তৈরি করেছে।
পুরস্কার ও সম্মাননা
অসাধারণ সব পরিকল্পনা জনসমক্ষে আনার জন্য গুগল ঘোষণা করে ‘প্রজেক্ট টেন টু দ্য হানড্রেড’ নামে ১০ মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার। প্রতিষ্ঠানটির দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২০০৮ সালে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এতে বিশ্বের ১৭০টির বেশি দেশ থেকে জমা পড়ে এক লাখ চুয়ান্ন হাজার আবেদন। দুই বছরের যাচাই-বাছাই শেষে প্রথমে ১৬টি পরিকল্পনা নির্বাচন ও তার তালিকা তৈরি করে গুগল। পরে চূড়ান্তভাবে বেছে নেওয়া হয় পাঁচটিকে। নির্বাচিত প্রকল্পগুলোকে আরও বিস্তৃত করার জন্য দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থসহায়তা। শিক্ষা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে সালমানের ‘খান একাডেমী’র বিনামূল্যে শিক্ষামূলক অনলাইন ভিডিও টিউটরিয়াল। একাডেমিটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ২০ লাখ ডলার পুরস্কার দিয়েছে গুগল। ২০১২ সালের জুনে ৮ জুন অনুষ্ঠিত ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ১৪৬ তম সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন সালমান। ৩৫ বছর বয়সী সালমান খানই এমআইটির ইতিহাসে কনিষ্ঠতম সমাবর্তন বক্তা। ২০১২ সালের মে মাসে রাইস ইউনিভার্সিটিতেও সমাবর্তন বক্তা ছিলেন সালমান। ২০১০ সালে সালমান মাইক্রোসফট টেক অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
সালমানের কাজে মুগ্ধ বিশ্বের শীর্ষ ধনী বিল গেটস। তিনি ও তাঁর এগারো বছর বয়সী সন্তান ররি নিয়ম করে ইউটিউবে বসে গণিত বিষয়ে জানার জন্য। বিল গেটসকে শিক্ষার্থী হিসেবে পেয়ে দারুণ খুশি সালমান।
Ann ও John Doerr অনুদান দেয় ১০০,০০০ ডলার ($)।
“সুলিভান ফাউন্ডেশন” বিনা মূল্যে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে খান একাডেমীকে ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার ($) অনুদান হিসেবে প্রদান করে।
খান একাডেমির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটঃ
www.KhanAcademy.orgখান একাডেমির ইউটিউব একাউন্টঃ
www.YouTube.com/KhanAcademywww.YouTube.com/KhanAcademyBanglaফেসবুকে খান একাডেমিঃ
www.Facebook.com/khanAcademy