Faculty of Science and Information Technology > Science and Information
The battery will be charged to sweat!
(1/1)
khairulsagir:
ব্যায়ামাগার বা জিমে ঘাম ঝরানো কেবল স্বাস্থ্যের জন্যই যে ভালো, তা নয়। এই ঘাম থেকে আপনার ফোন চালানোর শক্তি বা চার্জের জোগানও হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানী এবার উদ্ভাবন করেছেন একটি বিশেষ উল্কি বা ট্যাটু। এটি জৈব ব্যাটারি হিসেবে কাজ করে এবং মানুষের শরীরের ঘাম থেকে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করতে পারে। মার্কিন রসায়নবিদদের সংগঠন আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির সম্মেলনে এই প্রযুক্তির প্রদর্শনী হয়েছে।
জৈব ব্যাটারির জ্বালানি আসে ল্যাকটেট (ল্যাকটিক অ্যাসিডের রাসায়নিক লবণ) থেকে। প্রচুর শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের পর শরীর থেকে যে ঘাম বেরোয়, তাতে এই ল্যাকটেট পাওয়া যায়। এটি হৃৎপিণ্ডের গতি পর্যবেক্ষণকারী যন্ত্র, ডিজিটাল ঘড়ি এবং কখনো কখনো স্মার্টফোনের ব্যাটারি চার্জ করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান ডিয়েগো শহরে অবস্থিত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই ট্যাটু আকৃতির জৈব ব্যাটারি উদ্ভাবন করেছেন। জার্মানি থেকে প্রকাশিত রসায়নবিষয়ক সাময়িকী আংগেওয়ান্ডটে কেমি এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।
মানুষের ‘শারীরিক শক্তির’ সহায়তায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের ভাবনা ও গবেষণা বিজ্ঞানীরা অনেক আগেই শুরু করেছেন। প্রতিস্থাপিত জৈব জ্বালানির কোষের (বায়োফুয়েল সেল) শক্তি রক্ত থেকে সংগ্রহ করা যায় কি না, সেই চেষ্টা চলছে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ওয়েনঝাও জিয়া বলেন, ঘাম ব্যবহার করে যন্ত্র চার্জ করার প্রযুক্তি তাঁরাই প্রথম উদ্ভাবন করেছেন। এত দিন বিষয়টি ধারণার পর্যায়ে ছিল, এখন বাস্তব প্রয়োগের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। এ মুহূর্তে মাত্র চার মাইক্রোওয়াট চার্জ করা সম্ভব হয়েছে, যা পরিমাণে খুব বেশি নয়। তবে প্রযুক্তিটির উন্নয়নের মাধ্যমে আরও বেশি চার্জ করার চেষ্টা চলছে।
মজার ব্যাপার হলো, জৈব ব্যাটারি উদ্ভাবন করা জিয়া ও তাঁর সহযোগী গবেষকদের উদ্দেশ্য ছিল না। তাঁরা ল্যাকটেট পর্যবেক্ষণের জন্য পরিধানযোগ্য মনিটর বা যান্ত্রিক পর্দা তৈরি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঘটনাক্রমে তাঁরা অধিকতর আকর্ষণীয় একটি নতুন প্রযুক্তির খোঁজ পান।
ব্যায়ামবিদ ও খেলোয়াড়েরা প্রশিক্ষণকালে ঘাম ঝরানোর পর তাতে ল্যাকটেটের মাত্রা পরিমাপ করেন। কাজের গতি, সাফল্যের হার ও সুস্থতা নিরূপণের জন্য তাঁরা এমনটা করে থাকেন। কিন্তু প্রচলিত পদ্ধতিতে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ল্যাকটেটের মাত্রা পরিমাপের বিষয়টি বেশ ঝামেলাপূর্ণ ও সময়সাপেক্ষ। আরও দ্রুত ও সহজে ল্যাকটেটের মাত্রা নির্ণয়ের জন্য জিয়া ও তাঁর সহযোগীরা অস্থায়ী ট্যাটু তৈরি করেন। তিনি বলেন, ‘আমি এটি (ল্যাকটেট সেনসর ট্যাটু) পরে দেখেছি। এটি খুবই সহজ এবং বোঝাই যায় না যে শরীরে লাগানো হয়েছে। এটা কেবল খেলোয়াড়দেরই নয়, স্বাস্থ্যসচেতন যেকোনো ব্যক্তিই এই ট্যাটু ব্যবহার করে নিজেদের অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারবেন। হৃৎপিণ্ডের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে এটি সহায়ক হবে। এ ক্ষেত্রে রাসায়নিক তথ্য-উপাত্তের পাশাপাশি শারীরিক প্রতিক্রিয়া জানার মাধ্যমে অধিকতর স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।
পরে ওই ল্যাকটেট সেনসর থেকেই আরেক ধাপ এগিয়ে গবেষকেরা তৈরি করেন ঘামের শক্তিতে চালিত জৈব ব্যাটারি। তাঁরা এতে যুক্ত করেছেন একটি এনজাইম বা উৎসেচক, যা ল্যাকটেট থেকে ইলেক্ট্রন আলাদা করে একধরনের স্বল্প শক্তির বিদ্যুৎপ্রবাহ তৈরি করে। ওই ল্যাকটেট সেনসর বা ট্যাটুটি পরিধান করে ব্যায়ামের সাইকেলে চড়ে ঘাম ঝরালে ত্বকের প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে ৭০ মাইক্রোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। মজার ব্যাপার হলো, শারীরিকভাবে তুলনামূলক কম শক্তিশালী বা সক্ষম ব্যক্তিরা ওই ট্যাটু পরে ঘামের সাহায্যে বেশি বিদ্যুৎশক্তি তৈরি করেন। এ ব্যাপারে জিয়া বলেন, কম সক্ষম ব্যক্তিরা সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। কাজেই তাঁদের ঘামও হয় বেশি। আর তা থেকে ল্যাকটেটও পাওয়া যায় বেশি। তাই ব্যাটারিটির শক্তি জোগাতে সুস্থ ব্যক্তিদের অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়। বিবিসি
http://paimages.prothom-alo.com/contents/cache/images/350x0x1/uploads/media/2014/08/16/edf69ae7b474b301d05edcfa8b67a601-_76942874_76942766.jpg
Source: http://www.prothom-alo.com
Navigation
[0] Message Index
Go to full version