Faculty of Engineering > EEE
বাচ্চা জন্মাবে মেশিনে!
(1/1)
mahmud_eee:
গবেষকেরা আশা করছেন মায়ের পেটে নয়, আগামী তিন দশকের মধ্যেই কৃত্রিম উপায়ে শরীরের বাইরেই মানবশিশুর জন্ম-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
‘একটোজেনেসিস’ নামের এই পদ্ধতি ২০৩৪ সাল নাগাদ প্রস্তুত হবে বলেই ধারণা করছেন গবেষকেরা। এর পরের দশকেই এটি মানুষের কাছে সহজলভ্য হবে। ২০০১ সাল থেকেই এ প্রযুক্তিটি নিয়ে গবেষণা চলছে।
গবেষকেরা ‘একটোজেনেসিস’ পদ্ধতির সাহায্যে এর আগে ‘প্লাসেন্টা যন্ত্রে’ ইঁদুরের ভ্রূণ তৈরিতে কাজ করেছেন। এই প্রযুক্তি নিয়ে অবশ্য পক্ষে-বিপক্ষে নানা বিতর্ক রয়েছে। প্রযুক্তিটির সমর্থকেরা বলছেন, এই প্রযুক্তির ফলে শিশুমৃত্যুর হার কমবে এবং সহজে শিশুর নজরদারি করা যাবে। তবে সমালোচকেরা বলছেন, এ ধরনের প্রযুক্তির ফলে সামাজিক সমস্যা তৈরি হবে। মা ও শিশুর মধ্যকার বন্ধন আর থাকবে না।
‘একটোজেনেসিস’: সন্তান হবে কৃত্রিম গর্ভাশয়ে
‘একটোজেনেসিস’ হচ্ছে শরীরের বাইরে একটি জৈব দেহের বেড়ে ওঠার পদ্ধতি, যা পশু বা ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। এতে কৃত্রিম গর্ভাশয়ের জন্য কৃত্রিম একটি জরায়ুর প্রয়োজন পড়ে, যেটি ফিটাসের জন্য পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে। বর্জ্য অপসারণের জন্য কাস্টম-বিল্ট অ্যামিনোটিক ফ্লুইডের থলিও প্রয়োজন পড়ে। এই সব বস্তুকে একটি ‘প্লাসেন্টা যন্ত্র’ দিয়ে সংযুক্ত করা হয়, যাতে বিভিন্ন কেবল বা তার যুক্ত থাকে। এই তারগুলোর মাধ্যমে ফিটাসের শরীরের ওজন, হূত্স্পন্দন বেড়ে ওঠার প্রকৃতি বোঝা যায়। গবেষকেরা দাবি করেছেন, পুরো কৃত্রিম এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সন্তান জন্ম হলে ‘সারোগেট মাদার’ বা গর্ভ ভাড়া নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। এ ছাড়া সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার কমে যাবে। এ ছাড়া বেশি বয়সে সন্তান নেওয়ার ঝামেলাও কমে যাবে। শিশু অসুস্থ হলে সহজে ওষুধ দেওয়া যাবে।
অনলাইন ম্যাগাজিন মাদারবোর্ডকে হাঙ্গেরিয়ান বংশোদ্ভূত মার্কিন ভবিষ্যদ্বাদী জোলতান ইস্তাভান জানিয়েছেন, আগামী দুই দশকের মধ্যেই কৃত্রিম এই গর্ভধারণ পদ্ধতিটি পুরোপুরি ব্যবহারোপযোগী হয়ে যাবে এবং তিন দশকের মধ্যেই মানুষের কাছে সহজলভ্য হবে। তাঁর দাবি, এই প্রযুক্তিগুলোর অধিকাংশই বর্তমানে প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু আইনি ও নৈতিক বাধা থাকায় এই প্রযুক্তির প্রয়োগে দেরি হচ্ছে।
একটোজেনেসিসের ইতিহাস
২০০১ সাল থেকে গবেষণা শুরু হলেও ‘একটোজেনেসিস’-এর ইতিহাস কিন্তু বেশ দীর্ঘ। ১৯২৪ সালে ব্রিটিশ গবেষক জে. বি. এস হালদানি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ২০৭৪ সালনাগাদ শুধু ৩০ শতাংশ শিশুর জন্ম হবে প্রাকৃতিক উপায়ে। ২০০১ সালে এসে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হু-চি লু কৃত্রিম জরায়ু তৈরি করেন এবং তাতে মানব ভ্রূণ নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে সফল হন। কিন্তু পরীক্ষাগারে মানব শিশুর জন্ম দেওয়া বিষয়ে আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় এই গবেষণা বন্ধ করে দিতে হয় তাঁকে। দুই বছর পরে কৃত্রিম গর্ভাশয়ে ইঁদুরের ভ্রূণ জন্ম দেন তাঁরা। কিন্তু এই ভ্রূণের গঠনবিকৃতি দেখা যায়। ২০০৯ সালে নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমব্রায়োনিক টিস্যু বা ভ্রূণ কোষ থেকে শুক্রাণু তৈরির ঘোষণা দেন। ভবিষ্যদ্বাদী জোলতান ইস্তাভান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘শরীরের প্রয়োজন ছাড়াই প্রজাতির বংশ বিস্তারের এই উদ্ভাবন ছিল সুদূরপ্রসারী। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই প্রক্রিয়া সফলতা পেলে মানুষ তা গ্রহণ করবে কি না, তা নিয়ে। আমার ধারণা হচ্ছে, মানুষ তা গ্রহণ করবে।’
সমালোচনা
২০১২ সালে নারীবাদী অ্যানড্রেয়া ডোরকিন কৃত্রিম গর্ভাশয় প্রযুক্তির সমালোচনা করে বলেন, ‘নারীরা চাইলে এখনই পুরুষদের সরিয়ে দিতে পারে কিন্তু তাদের সামষ্টিক প্রজ্ঞায় তারা পুরুষের সঙ্গে থাকে। এখন সত্যিকারের প্রশ্ন উঠছে যে, যদি কৃত্রিম গর্ভধারণ পদ্ধতিটি সফল হয়, তখন পুরুষ কী তার পাশে নারীদের রাখবে? সারকথা হচ্ছে, নারীর বিকল্প তৈরিতে নারীর সাহায্য দরকার নেই পুরুষের, কিন্তু নারীর ক্ষেত্রে এর ঠিক বিপরীত।’
(হাফিংটন পোস্ট, ডেইলি মেইল, মাদারবোর্ড ম্যাগাজিন)
Kazi Taufiqur Rahman:
That's ridiculous. >:(
Navigation
[0] Message Index
Go to full version