Entrepreneurship > IT
An Innovative Entrepreneur: Eraz Islam
(1/1)
Badshah Mamun:
একজন উদ্ভাবনী উদ্যোক্তা: ইরাজ ইসলাম
২০০৫ সাল। ব্যবসায় পরিকল্পনাবিষয়ক প্রতিযোগিতায় সুইডেনের স্টকহোম স্কুল অব এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপে অংশ নেয় তরুণ শিক্ষার্থীদের একটি দল। মেলে সেরা পরিকল্পনার স্বীকৃতি। কেবল পরিকল্পনা নয়, ‘হেলভেরা’ নামের অনলাইনে কেনাকাটার ই-কমার্স সাইট তৈরি করে তা বাস্তবে রূপও দিল তারা। আর এই পুরো কাজের নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশের ইরাজ ইসলাম।
এই অর্জনের সুবাদে মাত্র ২১ বছর বয়সে এই বাংলাদেশি তরুণ সেই সময় সুইডেনের জনপ্রিয় ইন্টারনেট ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিনের করা শীর্ষ তিন উদ্যোক্তার তালিকায় স্থান করে নেন।
তবে সুইডেনের মতো উন্নত দেশের বাজারে নতুন একটি প্রতিষ্ঠানের টিকে থাকাটা কঠিন। তাই হেলভেরাও টিকতে পারেনি। এরপর দেশে ফিরে আসেন ইরাজ। বললেন, ‘দেশে ফিরে আমি উপলব্ধি করি, বাংলাদেশে অনেক মেধাবী কম্পিউটার বিজ্ঞান প্রকৌশলী তৈরি হয়েছেন, যাঁরা দারুণ সব কাজ করতে পারেন। মেধা ও প্রযুক্তি দুটিই যেহেতু আছে, তাই চিন্তা করি নতুন কিছু করার, যা ঢাকায় বসেও যেমন করা যাবে, তেমনি আবার চাইলে দেশের বাইরে থেকেও পরিচালনা করা যাবে।’
২০০৮ সালে ইরাজ দুই বন্ধু শাফকাত ইসলাম ও আসিফ রহমানকে নিয়ে গড়ে তোলেন ‘নিউজক্রেড’ নামের সংবাদভিত্তিক বিশেষ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান থেকে সংবাদ সংগ্রহ করে তা বিভিন্ন গ্রাহক, প্রকাশক কিংবা সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করাই নিউজক্রেডের কাজ। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে নিউজক্রেডের প্রধান কার্যালয় হলেও নিয়মিত কার্যক্রমগুলো পরিচালিত হয় ঢাকার বনানী থেকে। এ ছাড়া কাজ হয় লন্ডন ও ম্যানহাটান থেকে। ঢাকা থেকেই পুরো কাজের সমন্বয় করেন ইরাজ।
পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়নে শুরুর দিকে যথেষ্ট অর্থ ছিল না। তাই স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিউজক্রেড চার পর্বে তহবিল সংগ্রহ করে। তাতে যুক্ত হন বিশ্বসেরা সব বিনিয়োগকারী। কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ও ইস্ট কোয়েস্ট থেকে বিনিয়োগ হিসেবে নিউজক্রেড পেয়েছে চার কোটি ডলার। বর্তমানে প্রায় দুই হাজারের বেশি প্রকাশনার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ আছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, দি ইকোনমিস্ট, দ্য গার্ডিয়ান ইত্যাদি। গ্রাহকদের তালিকায় রয়েছে পেপসি, পিঅ্যান্ডজি, মাইক্রোসফট, ইয়াহু, ভিসাসহ বিখ্যাত সব প্রতিষ্ঠান।
ইরাজ বলেন, ‘সবচেয়ে বড় বিষয়, আমরা বিশ্ববাজারে এ সেবায় শীর্ষে এবং আমরা গর্বিত যে আমাদের প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের।’ নিউজক্রেডের এ সফলতায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা সাময়িকী বিজনেস ইনসাইডার-এর করা “সিলিকন ভ্যালি ১০০” তালিকায় ইরাজসহ যুক্ত হয়েছে নিউজক্রেডের অন্য দুই প্রতিষ্ঠাতার নাম।
সুইডেনের স্টকহোমে বেড়ে ওঠা ইরাজের বাবা জিনথেরাপি বিশেষজ্ঞ খালিদ বিন ইসলাম এবং মা ক্যানসার গবেষক তাহমিনা সি ইসলাম। ইরাজ স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন স্টকহোমের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে। তাঁর সহধর্মিণী ফাহমিদা ইসলাম বর্তমানে পড়াশোনা করছেন।
একজন উদ্যোক্তা হিসেবে ভবিষ্যতে দেশের জন্য কিছু করতে চান ইরাজ। তাঁর মতে, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পরিচয় সস্তা শ্রমের দেশ হিসেবে। যদিও বাংলাদেশের ইতিহাস হচ্ছে প্রখ্যাত কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানীসহ বিভিন্ন খাতের মেধাবীদের দেশ। নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ইরাজ বলেন, তরুণ উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশকে বিশ্বের মাঝে তুলে ধরতে হবে এবং সেটি বাংলাদেশি ব্র্যান্ড দিয়েই করতে হবে। বাংলাদেশ থেকেই পরবর্তী ফেসবুক, গুগল অথবা অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে এগিয়ে আসতে হবে মেধাবী তরুণদের।
Source:
Daily Prothom Alo (September 2, 2014)
http://goo.gl/qAoY3P
Navigation
[0] Message Index
Go to full version