একবিংশ শতাব্দীতে এসে নীলচাষের ইতিহাস অনেকটাই বিস্মৃত। বেশ কয়েক বছর আগে ঢাকায় এশিয়াটিক সোসাইটির অফিস প্রাঙ্গণে ড. নওয়াজেশ আহমদের লাগানো গাছটি দেখে চমকে উঠি।
বাঙালি জীবনের সেই দুঃসহ স্মৃতির ধারক। আর ইংরেজ শাসকদের চরম নিষ্ঠুরতার এক করুন উপাখ্যান।
আরেকটি গাছ রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে ব্রিটিশ নীলকরদের প্ররোচণায় নদীয়া, যশোর, বগুড়া, রংপুর ও ঢাকাসহ অনেক জেলাতেই ব্যাপক নীল চাষ শুরু হয়।
কিন্তু কয়েক বছরের ব্যবধানে ইউরোপের বাজারে চাহিদা কমে গেলে নীলচাষ হয়ে পড়ে অলাভজনক। ফলে কৃষকরা নীলচাষে অপারগতা জানায়। কিন্তু ব্রিটিশ বেনিয়ারা শক্তি প্রয়োগ শুরু করলে ১৮৫৯-৬০ সালের দিকে তুমুল আন্দোলন শুরু হয়।
প্রতিরোধের মুখে একসময় বন্ধ হয়ে যায় নীলচাষ। নীল গাছ (Isatis tinctoria) মূলত অতিপ্রাচীন রঞ্জক উদ্ভিদ। মিশরের ১৮তম রাজবংশের মমিগুলো নীলরঙা কাগজে মোড়াননো থাকত। প্রাচীন ভারতের চরক সংহিতায় নীলের প্রশস্তি রয়েছে।
গাছ ১.২ থেকে ১.৮ মিটার লম্বা ও ঝোপালো। মঞ্জরি পাতার চেয়ে খাটো। পাতা লম্ব-আয়তাকার। ছোট ছোট ফুল জুলাই-সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফোটে। ফল বাঁকানো। পাতার নির্যাস জলাতঙ্ক ও মৃগীরোগে উপকারী।