Science & Information Technology > Life Science

Scent is found in dreams?

(1/1)

khairulsagir:
স্বপ্নের মধ্যেও মানুষ নানা রকমের অনুভূতি টের পায়। এর মধ্যে দেখার বিষয়টি তো অবশ্যই আছে। কারণ, স্বপ্ন মানেই তো ছবি বা দৃশ্য। স্বপ্নে দেখা কিছু দৃশ্য ঘুম থেকে জেগে ওঠার পরও মনে থাকে। তবে বেশির ভাগ দৃশ্যই পরে আর মনে থাকে না।

এমনকি স্বপ্নের মধ্যে শ্রবণশক্তিও সজাগ থাকে। কিন্তু স্বপ্নে কি ঘ্রাণের অনুভূতি পাওয়া যায়? কেউ কেউ অবশ্য দাবি করেন, তাঁরা স্বপ্নে ঘ্রাণের অনুভূতিও পান। এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? স্বপ্ন দেখার সময় মানুষের ঘ্রাণেন্দ্রিয় কতটা সক্রিয় থাকে?

স্বপ্নরহস্য নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা জিজ্ঞাসা রয়েছে সেই প্রাচীনকাল থেকেই। স্বপ্ন দেখার সময় মানুষের বিভিন্ন ইন্দ্রিয়ের অভিজ্ঞতা বা অনুভূতি নিয়ে ১৮৯৬ সালে একটি গবেষণা হয়। ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বপ্নের মধ্যে মানুষের দৃষ্টিসংক্রান্ত অনুভূতি ৮৫ শতাংশ, শ্রবণসংক্রান্ত অনুভূতি ৬৯ শতাংশ, স্পর্শানুভূতি ১১ শতাংশ, ঘ্রাণের অনুভূতি ৭ শতাংশ এবং স্বাদের অনুভূতি ৬ শতাংশ সক্রিয় থাকে।

গবেষণায় পাওয়া তথ্য বলছে, স্বপ্নের মধ্যে দর্শনানুভূতিই সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। সেই তুলনায় স্পর্শ, ঘ্রাণ এবং স্বাদের অনুভূতি অনেক কম কার্যকর থাকে। কিন্তু কী কারণে অনুভূতির এ তারতম্য ঘটে এর ব্যাখ্যা এখনো অজানা।

স্বপ্ন দেখার সময় কেন ঘ্রাণেন্দ্রিয় তুলনামূলক কম সক্রিয় থাকে, তার সম্ভাব্য কিছু কারণও ব্যাখ্যা করেছেন গবেষকেরা।
মানুষের দেখা এবং শোনার অনুভূতিসংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ার অধিকাংশই মস্তিষ্কে সংঘটিত হয়। মস্তিষ্কের বাইরের আবরণের (সেরিব্রাল কর্টেক্স) দুই-তৃতীয়াংশই দর্শনেন্দ্রিয়ের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত। সেরিব্রাল কর্টেক্সই হচ্ছে মস্তিষ্কের উপলব্ধিসংশ্লিষ্ট সবচেয়ে প্রত্যক্ষ অংশ। তাই স্বপ্ন দেখার সময় দৃশ্য বা ছবির প্রাধান্য থাকাটাই স্বাভাবিক।
মস্তিষ্কের মধ্যে শব্দ প্রক্রিয়াজাতকরণের বিষয়টি ভাষার সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। ভাষা হচ্ছে মানুষের অভ্যন্তরীণ জীবনের কেন্দ্রীয় ধারণাগত কাঠামো, বিশেষ করে শব্দের অর্থ গঠনের মাধ্যমে অন্য মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে। ভাষা প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজটিও সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় সেরিব্রাল কর্টেক্সে।

অন্যদিকে, ঘ্রাণ ও স্বাদ গ্রহণের ইন্দ্রিয়গুলোর সঙ্গে সেরিব্রাল কর্টেক্সের সম্পৃক্ততা তুলনামূলক কম। ঘ্রাণকে মস্তিষ্কের সবচেয়ে আদি উপলব্ধি ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি সরাসরি মস্তিষ্কের স্মৃতি এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়। আর সে কারণেই কোনো নির্দিষ্ট ঘ্রাণ খুব দ্রুত মানুষের কোনো স্মৃতিকে স্পষ্টভাবে ফিরিয়ে আনতে পারে। এ ক্ষেত্রে সম্ভবত আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে ঘ্রাণ, স্বাদ ও স্পর্শের অনুভূতিগুলো কল্পনায় খুব স্পষ্টভাবে আসে না।

চোখ বন্ধ করে কোনো ছবি বা কারও সঙ্গে কথোপকথন বা কোনো গানের আওয়াজ কল্পনা করা খুব সহজ। কিন্তু কোনো ঘ্রাণ, স্বাদ বা স্পর্শ কল্পনা করাটা সহজ নয়। হয়তো এসব ইন্দ্রিয় তুলনামূলক কম ‘উৎপাদনশীল’। দৃষ্টি এবং শ্রবণের ইন্দ্রিয়গুলো মস্তিষ্ককে ব্যবহার করে উপলব্ধির একটি অভ্যন্তরীণ কাঠামো তৈরি করে। এটি বিভিন্ন স্নায়ু থেকে তথ্য সংগ্রহ করে একটি নকশা তৈরি করে। ঘ্রাণ হচ্ছে বাতাসের অনেক রাসায়নিক উাপাদানের প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া, আর ত্বকে চাপের প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে স্পর্শ। এ দুই অনুভূতির মধ্যে ‘কল্পনার’ সম্পৃক্ততা কম। সে কারণেই হয়তো স্বপ্ন দেখার সময় ঘ্রাণ এবং স্পর্শের অনুভূতি তুলনামূলক কম প্রভাব বিস্তার করে।

সম্ভবত স্বপ্ন হচ্ছে মস্তিষ্কে সংগৃহীত তথ্যের পুনর্গঠন বা একত্রকরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। যেসব তথ্য সবচেয়ে জটিল কাঠামোর, সেগুলো পুনর্গঠনের প্রয়োজন পড়ে সবচেয়ে বেশি। এ কারণেই হয়তো দৃশ্য, স্থান, শব্দ (ভাষা), বাস্তব জ্ঞান, ঘটনা, তাৎপর্য এবং মানবিক সম্পর্কগুলোই ঘুরে ফিরে আসে স্বপ্নের মধ্যে।
ইনডিপেনডেন্ট।

স্বপ্ন দেখার সময় অনুভূতির সক্রিয়তা
দৃষ্টি: ৮৫%
শ্রবণ: ৬৯%
স্পর্শ: ১১%
ঘ্রাণ: ৭%
স্বাদ: ৬%


Source: www.prothom-alo.com

Navigation

[0] Message Index

Go to full version