বিমান ভ্রমণে দরকারি টিপস

Author Topic: বিমান ভ্রমণে দরকারি টিপস  (Read 1137 times)

Offline faruque

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 655
    • View Profile
বিমান ভ্রমণে দরকারি টিপস
« on: September 30, 2014, 10:32:14 AM »
বিমান ভ্রমণে দরকারি টিপস



নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত-সব শ্রেণির মানুষকেই এখন নানা কারণে বিমান ভ্রমণ করতে হয়। কেউ ভাগ্যের অন্বেষণে, কেউ বা ভ্রমনে, কেউ আবার চিকিৎসার জন্য পাড়ি জমান দেশের বাইরে। কেউ ঈদ-পূর্জা পার্বনে ফিরে যান ভৌগলিক সীমা পেরিয়ে হাজার মাইল দূরে প্রিয়জনের কাছে। আর এ যাত্রার অনিবার্য যান হচ্ছে বিমান। কিন্তু বিমান ভ্রমনে অধিকাংশ মানুষকেই কমবেশি সমস্যায় পড়তে হয়। তাই অনাকাঙ্খিত ঝামেলা এড়াতে আগে থেকেই কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

সময়মতো বিমানবন্দরে পৌঁছান

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিমানবন্দরে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসের কাউন্টারে রিপোর্ট করতে হয়। তাই যানজট ও অনাকাঙ্খিত যে কোনো পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে বিমানবন্দর রওনা হওয়া উচিত। সাধারণত আন্তর্জাতিক রুটে বিমান ছাড়ার ২ ঘন্টা আগে এবং অভ্যন্তরীন রুটে ১ ঘন্টা আগে রিপোর্ট করতে বলা হয়। এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিট নাম্বার আগে থেকে নির্দিষ্ট করা থাকে না। যাত্রার দিনে এয়ারলাইনসের কাউন্টারে রিপোর্ট করার পর বোর্ডিং কার্ড দেওয়া হয়। তাতেই উল্লেখ থাকে সিট নাম্বার। তাই দেরিতে রিপোর্ট করলে পছন্দমাফিক সিট পাওয়া কঠিন।

বুকিংয়ে সঠিক নাম ও পাসপোর্ট নাম্বার ব্যবহার করুন

বিমানের টিকেট বুকিং দেওয়ার সময় আপনার পুরো নাম ও সঠিক পাসপোর্ট নাম্বার ব্যবহার করুন। বোর্ডিং কার্ড দেওয়ার সময় এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ টিকেটের সাথে আপনার পাসপোর্ট মিলিয়ে নেবে। এছাড়া ইমিগ্রেশন বা বহির্গমন বিভাগও দুটি বিষয় মিলিয়ে দেখে আপনাকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেবে।

চেকলিস্ট মিলিয়ে নিন

বিমানবন্দরে যাত্রার আগে চেকলিস্ট মিলিয়ে দেখে নিন সব কিছু নেওয়া হয়েছে কি-না। বিশেষ করে দেশের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট, টিকেট, ডলার, ক্রেডিট কার্ড (যদি থাকে) নিতে ভুলবেন না। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বিদেশ যেতে হলে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট এবং স্থানীয় ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে নিন। আন্তর্জাতিক সেমিনার, কনফারেন্স হলে ইনভাইটেশন লেটার, অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড সাথে নিন। ভ্রমণের ক্ষেত্রে ক্যামেরা, বাইনোকুলার ফেলে গেলে আফসোসের শেষ থাকবে না।

হ্যান্ড ব্যাগে লিকুইড রাখবেন না

আপনার লাগেজ কর্তৃপক্ষ আলাদাভাবে বহন করবে। তবে আপনি চাইলে ছোটো দু’তিনটি হ্যান্ডব্যাগ সাথে রাখতে পারেন। এগুলো মাথার উপর লাগেজ ক্যারিয়ারে কিংবা সিটের নিচে রাখা যায়। কিন্তু হ্যান্ড লাগেজে পণ্য বহনে কিছু বিধিনিষেধ আছে। এতে কোনোভাবেই পানির বোতল, ড্রিংকস, শ্যাম্পু, বডি স্প্রে, পারফিউম বা অন্য কোনো তরল রাখা যাবে না। সে ক্ষেত্রে বিমানে ওঠার আগেই নিরাপত্তা কর্মীরা এগুলো রেখে দেবে। এছাড়া ধাতব অনেক কিছুই বহন করা যাবে না। স্ক্রু ড্রাইভার, স্লাইড রেঞ্জ, ম্যাচ, ইলেকট্রনিক ডিভাইস রাখা যাবে না। বিদেশ থেকে ফেরার সময় এ জাতীয় কোনো পণ্য আনতে চাইলে তা অন্য লাগেজে রাখতে হবে।

লাগেজ বেশি ভারি না করা

অপ্রয়োজনীয় জিনিস ঠেসে ভরে লাগেজ বেশি ভারি করবেন না। সব বিমানেই লাগেজের সর্বোচ্চ ওজন দেওয়া থাকে। এরচেয়ে বেশি ওজন হলে বাড়তি মালের জন্য উচ্চ হারে ভাড়া দিতে হয়। এটা আপনার জন্য বিড়ম্বনার কারণ হতে পারে।

নিরাপত্তার স্বার্থে বিধি মেনে চলুন

বিমানবন্দরে প্রবেশের সাথে সাথে নানা ধরণের চেকিংয়ের মুখোমুখি হতে হয়। এ সময় সংশ্লিষ্টদেরকে পূর্ণ সহযোগিতা করুন। স্ক্যানিং মেশিনে চেকের সময় ধাতব আসবাব বের করে নিন। মনে রাখবেন, আপনার নিরাপত্তার জন্যও এ ধরনের চেকিং খুব জরুরী।

নির্ধারিত সিটেই বসতে হবে

বোর্ডিং কার্ডে যে সিট নাম্বার উল্লেখ থাকবে সেটিতেই বসতে হবে। সাধারণত সিটের উপরে লাগেজ ক্যারিয়ারে সিট নাম্বার উল্লেখ থাকে। বোর্ডিং কার্ডের সাথে মিলিয়ে আপনার সিটটি খুঁজে নিন। প্রয়োজনে এয়ারহোস্টেজ, ফ্লাইট এটেন্ডেন্ট বা স্টুয়ার্ডসের সহায়তা নিন।

বিমান কর্মীদের সাথে ভালো আচরণ করুন

এয়ারহোস্টেজদের সাথে শোভন আচরণ করুন। তাদের প্রতি আন্তরিক হোন, ধন্যবাদ দিন। অভিযোগ থাকলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানান।

সিট হেঁলানোর আগে সতর্ক থাকুন

সিট হেঁলাতে চাইলে আপনার পেছনের যাত্রীকে আগে জানান। ভদ্রভাবে তাকে জিজ্ঞাস করুন। অসুবিধা হলে আলোচনা করুন।

আপনার সন্তান এবং আসবাবে নজর রাখুন

নিজের জিনিস সব সময় সাথে রাখুন। সিট ছেড়ে উঠতে হলে সহযাত্রীকে নজর রাখতে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করুন।

হাতল নিয়ে বিবাদে জড়াবেন না

হাত রাখা নিয়ে তর্কে না জড়িয়ে আলোচনা করুন। তবে সাধারণত, মাঝখানের সিটের যাত্রী এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকায় পায়।

হাঁটাচলায় সতর্ক থাকুন

এয়ারহোস্টেজরা নানা প্রয়োজনে আসা-যাওয়া করেন। সিটের দুই সারির মাঝে জায়গা থাকে খুবই সামান্য। হাতলে রাখা আপনার হাত তাদের গায়ে লাগতে পারে। টয়লেটে যাওয়া-আসার সময় সতর্ক থাকুন, যাতে অন্য যাত্রী বা এয়ারহোস্টেজের সাথে ধাক্কা না লাগে।

ওয়াশরুম ব্যবহারে যত্নবান হোন

অযথা টয়লেটে (Lavatory) বেশি সময় ব্যয় করবেন না। কারণ অন্য যাত্রীর হয়তো জরুরী প্রয়োজন থাকতে পারে। কমোডে কিছু ফেলবেন না। টয়লেট ব্যবহারের পর অবশ্যই ফ্লাশ করুন। কমোডের পেছনে ব্যবহারবিধি চিহ্নসহ লেখা থাকে। ভুলেও টয়লেটে ধুমপান করবেন না। বিমানের টয়লেট এয়ারটাইট। তাই সিগারেটের দুর্গন্ধ অন্যদের জন্য অস্বস্তির কারণ হবে।

ট্রানজিটে সময়মতো রিপোর্ট করুন

আপনি হয়তো কোনো দূরদেশে যাচ্ছেন। মাঝখানে কোনো বিমানবন্দরে বিমান বদলাতে (ট্রানজিট) হবে। এ ক্ষেত্রে বিমান থেকে নামার পর দেখে নিন পর্যাপ্ত সময় আছে কিনা। তা না হলে এদিক সেদিক না ঘুরে দ্রুত পরবর্তী বিমানের জন্য কাউন্টারে রিপোর্ট করুন। কানেক্টিং ফ্লাইটের জন্য আপনাকে নতুন করে বোর্ডিং কার্ড নিতে হবে।

বিডি-প্রতিদিন/২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪/আহমেদ

- See more at: http://www.bd-pratidin.com/2014/09/28/33590#sthash.LZBo1sa1.dpuf