আলোকিত সমাজের জন্য প্রয়োজন আলোকিত আত্মা

Author Topic: আলোকিত সমাজের জন্য প্রয়োজন আলোকিত আত্মা  (Read 895 times)

Offline faruque

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 655
    • View Profile
আলোকিত সমাজের জন্য প্রয়োজন আলোকিত আত্মা

পশু প্রবৃত্তি দমন করে আল্লাহর সিফাত ও গুণাবলিতে নিজেকে সুশোভিত করে তোলাতেই নিহিত মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব। আত্মা ও চারিত্রিক পরিশুদ্ধির মাধ্যমে পরম প্রিয়তম বিশ্ব স্রষ্টার মাঝে আত্মালীন হওয়াতেই মানুষের সর্বোচ্চ সফলতা। আর এই পথনির্দেশের উদ্দেশ্যেই মূলত প্রেরিত হয়েছিলেন লাখো আম্বিয়া (আ.)। আম্বিয়ায়ে কেরাম সিদ্দিকীন শুহাদা ও সালেহীন অনুসৃত এই পরিশুদ্ধ ও অনন্ত অস্তিত্বে সত্তালীন হওয়ার প্রশিক্ষণ পদ্ধতিই সুলুক ও তাসাউক। পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে একে তাজকিয়া ও ইহসান নামে অভিহিত করা হয়েছে।

মানুষ দেহ ও আত্মার সমন্বিত জীব। প্রাণিকুলের অস্তিত্ব আত্মার ওপর নির্ভরশীল। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, রুহ বা আত্মা কেবলই আল্লাহর নির্দেশ। রুহ বা আত্মা আল্লাহ প্রদত্ত এমন নূর বা আলো, যা গোটা দেহকে আলোকিত করতে সক্ষম। হজরত মুহাম্মদ (সা.) এই পৃথিবীতে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে এসে সর্বপ্রথম মানুষের জাহিলিয়াত-মূর্খতার অন্ধকারাচ্ছন্ন হ্রদয়সমূহ আলোকিত করার সর্বাত্দক প্রচেষ্টা চালান। হেদায়াতের যে নূর তিনি নিয়ে এসেছেন তা দ্বারা ভ্রষ্টতার অাঁধারে নিমজ্জিত হৃদয়সমূহকে আলোকিত করেন। ... আল্লাহর কাছ থেকে এক জ্যোতি ও স্পষ্ট কিতাব তোমাদের কাছে এসেছে। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে চায় এর দ্বারা তিনি তাদের শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং নিজ অনুমতিক্রমে অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে নিয়ে যান এবং তাদের সরলপথে পরিচালিত করেন। (মায়িদা ১৫-১৬) মানুষের অন্তর যদি হেদায়েতের নূরে আলোকিত না হয় তাহলে আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠার সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হবে। এ জন্য আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথমেই মানুষের অন্তরকে আলোকিত করার চেষ্টা করতে হবে। সমাজে মানুষের অন্তর যদি আলোকিত হয় তাহলে সমাজ আলোকিত হবে। অন্যায়, অবিচার, জুলুম, নির্যাতন, দুর্নীতি, পাপাচার সবই সমাজ থেকে দূর হবে। আর মানুষের অন্তর যদি কলুষিত হয় তাহলে সমাজ থেকে জুলুম, নির্যাতন, অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি, পাপাচার দূর করা সম্ভব হবে না। হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ... শোন! মানবদেহে একটি গোশতের টুকরা আছে। যা ঠিক হলে গোটা শরীরই ঠিক হয়। আর তাতে পচন ধরলে গোটা শরীরেই পচন ধরে। শোন! সেই গোশতের টুকরাটি হচ্ছে কালব-আত্মা। (বুখারি-১/১৩)

মহান আল্লাহ এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর ইমান অন্তরকে আলোকিত করে। আখেরাতের ভাবনা মানুষকে আখেরাতমুখী এবং দুনিয়াবিমুখ করে। আর এই আল্লাহ, রসুলের ওপর ইমান এবং পরমকাল ভাবনাই পারে মানুষকে সব পাপ কাজ থেকে বিরত রাখতে। পরকালের চিন্তা যদি মানুষের মাথায় ঢুকে যায় তাহলে মানুষ নিজ ইচ্ছায় অন্যায়-অপরাধ থেকে বিরত থাকবে। আর পরকালবিমুখ হলে শত আইন করেও মানুষকে অন্যায়-অপরাধ থেকে বিরত রাখা সম্ভব হবে না। যার বাস্তব প্রমাণ আজকের পৃথিবী। সুতরাং আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য হেদায়াতের নূরে আলোকিত অন্তরের মানুষ প্রয়োজন। আর প্রয়োজন সবারই মধ্যে পরকাল ভাবনা জাগরুক করা।

লেখক : খতিব, মুহাম্মদিয়া দারুল উলুম জামে মসজিদ, রামপুরা, ঢাকা।

- See more at: http://www.bd-pratidin.com/islam/2014/11/06/41660#sthash.kySYirLi.dpuf