বাংলাদেশের প্রায় সব মানুষের একটা অন্যতম সাধারণ ধারণা হল ঢাকা মানেই টাকার সমুদ্র, ঢাকা মানেই বসবাসের সুযোগ্য ব্যবস্থা। ঢাকা তে সবাই হাতের নাগালে পাচ্ছে সুখ। কারন ঢাকা যে বাংলাদেশের রাজধানী। আর রাজধানী তো আর এমনি এমনি হয়ে যায় নি। সব সুযোগ সুবিধায় স্বয়ংসম্পূর্ণ বলেই তো রাজধানী। এই ভেবে সকল সুখ সুবিধা ভোগ করার জন্য ছুটে চলে আসে এই জাদুর শহরে। আবার অনেকে জীবন ভর বংশ পরম্পরায় সুখ ভোগ করতে স্থায়ী ভাবে থাকার ব্যবস্থা করছে। আসলেই ঢাকায় কতটা সুখে বসবাস করার ব্যবস্থা রয়েছে?
আমরা যদি ঢাকার লোক সংখ্যার দিকে দৃকপাত করি তবে দেখতে পাব, মাত্র ১,৪৬৩.৬০ বর্গ কিলোমিটারে বাস করে প্রায় ১,৮৩,০৫,৬৭১ (২০১২)। তা বর্তমানে আরও বেড়েছে। অধিক মানুষের বাসস্থানের জন্য তৈরি হচ্ছে বড় বড় দালান, যা দিয়ে ঢাকা পরেছে ঢাকা। ঢাকাকে ঘিরে শত জল্পনা কল্পনা শেষে যখন ঢাকায় এসে আশ্রয় নিচ্ছে ফুটপাতে, তখন নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। এক শ্রেণীর লোক ঢাকার বস্তি গুলোকে আরও ভারি করে তুলছে। কারন প্রযুক্তি শিল্পে উন্নত স্থানটি সবাই বেছে নেয়।
ঢাকা শহরের বহুল পরিচিত যানজটের কথা উল্লখ করে বলার কিছু নেই। এ যে সবার চির চেনা। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে প্রথমে ভাবতে হয় কর্মক্ষেত্রে পৌঁছানোর জন্য কত সময় হাতে নিয়ে বের হব। প্রতিদিন ২০৬টি গাড়ি নামছে জনগণের যাতায়াত সুবিধার জন্য। তারপরও ভোগান্তির শেষ নেই জনগণের। প্রতিদিনই একি সমস্যা পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। এই ডিজিটাল বাংলাদেশের কত ডিজিটাল ব্যবস্থা, ট্রাফিক পুলিশ আইনে আনা হয়েছে নতুনত্ব। যানবাহন পরিচালনার সুবিধার্থে বিপুল অর্থ ব্যয় সাপেক্ষে রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে সময় ভিত্তিক সিগন্যাল ব্যবস্থা। তারপরও লাঠি আর আঙ্গুল দ্বারা দিকনিরদেশেনা দিতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশদের। ভাষণে শুধু কত টাকা ব্যয় হল তা শোনা যায়, কিন্তু তা কতটুকু ফলপ্রসূ হল তার ব্যাখ্যা কেউ দেয় না। কোটি কোটি টাকার প্রকল্প পরিকল্পনা করা হয়, কিন্তু তা বাস্তবায়নের নাম মাত্র নেই। গনপরিবহনের এই দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা দিন দিন আরও প্রকট হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কি করে আমরা বলি আমরা সুখি।
কর্মসংস্থানের নেই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। পেটের দায়ে নিজের সামাজিক অবস্থান থেকে নিচে নেমে কাজ করতে হচ্ছে। ক্ষুদা জ্বালার কাছে হার মেনে নিজের আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে কাজ করছে। হয়ত কেউ ফুটপাতে দোকান দিয়ে জীবন চালনার চেষ্টা করছে, হয়ত তারও বেবস্থা করতে না পেরে লিপ্ত হচ্ছে আপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। জীবন ব্যবস্থার উন্নয়নটা কতখানি তা উপলব্ধির বাহিরে।
তারপরও আমরা কি করে ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য হিসেবে খেতাব দেই? আমরা আশা প্রার্থী রাজধানীর সঙ্কট নিরসনে কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্ট নীতি বাস্তবায়নে স্বক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন।