মানবদেহের কিডনি নিয়ে মানুষের কৌতূহল যেমন আছে তেমনি কিডনি নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠাও কম নয়। মহান স্রষ্টা মানবদেহের জন্য দু’টি কিডনি দিয়েছেন। যদি কারও একটি কিডনি অকেজো হয়ে যায় অথবা কোন কারণে ফেলে দিতে হয় তাহলে মাত্র একটি কিডনি নিয়েও মানুষ সুস্থভাবে জীবন যাপন করতে পারে। তাই দু’টি কিডনি মহান রাব্বুল আল-আমীনের অশেষ নেয়ামত। আর আপনি জানেন কি কিডনি আমাদের কি উপকার করে এবং কেমনভাবে উপকার করে।
এটা সত্যি সত্যি এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। মানবদেহের প্রতিটি কিডনিতে রয়েছে এক মিলিয়ন থেকে দেড় মিলিয়ন বা ১০ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ নেফ্রন। আর এই নেফ্রনকে বলা হয় কিডনির একক। এই নেফ্রনসমূহ অতিশয় সরু নলের মত। প্রতিটি নেফ্রনের দৈর্ঘ্য ৩ সেমি বা এক ইঞ্চির খানিকটা বেশি। এসব নেফ্রন যদি একটা একটা করে লম্বা করা যায় তাহলে এই নেফ্রন নামক নলের দীর্ঘ হবে কয়েক মাইল।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিটি কিডনির নেফ্রনের দৈর্ঘ্য হবে ৪৫ লক্ষ সেমি বা ২৮ মাইল। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো কিডনির প্রধান কাজ হলো আমাদের শরীরের হার্ট যে রক্ত সরবরাহ করে তা কিডনির সরু নালীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং কিডনিই আমাদের রক্তকে ফিল্টার করে আবার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পাঠায়। আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি প্রতিনিয়ত শত শত লিটার রক্ত কিডনির সরু নেফ্রনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অথচ কোথাও বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে না।
সবকিছু চলছে ঠিকঠাকভাবে। এমনকি কিডনির একটি সরু নালীও ছিঁড়ে যাচ্ছে না। এটা যদি কোন স্বাভাবিক সৃষ্টি হতো তা হলে নিশ্চয়ই অনবরত এই কিডনি ব্যবহার করা অসম্ভব হতো। শুধু তাই নয়, আমরা যত পানি অথবা ফ্লুইড গ্রহণ করি তাও কিডনির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং কিডনির নিসৃত তরল পদার্থই ইউরিন হিসাবে বাডারে জমা হয় এবং পরে ইউরিন হিসাবে নিসৃত হয়। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মানবদেহের পাঁচটি ভাইটাল অঙ্গের মধ্যে কিডনি অন্যতম।
কোন কারণে যদি দু’টি কিডনিই অকেজো হয়ে পড়ে তবে জীবন বিপন্ন হবার আশংকা থাকে। তাই কিডনির সুস্থতা আমাদের অতি জরুরি। শুধু রক্ত ফিল্টার করা এবং ইউরিন নিঃসরণই নেফ্রনের কাজ নয়। এই নেফ্রন শরীরের বর্জও নিঃসরণ করে রক্তের ভলিউম, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, খনিজ লবণ নিয়ন্ত্রণসহ বহুবিধ কাজ করে।