ওবামা, স্টিভ জবস্‌, জুকারবার্গ এবং আইনস্টাইনের মতো সফল মানুষ প্রতিদিন একই পোশাক

Author Topic: ওবামা, স্টিভ জবস্‌, জুকারবার্গ এবং আইনস্টাইনের মতো সফল মানুষ প্রতিদিন একই পোশাক  (Read 1505 times)

Offline faruque

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 655
    • View Profile
ওবামা, স্টিভ জবস্‌, জুকারবার্গ এবং আইনস্টাইনের মতো সফল মানুষ প্রতিদিন একই পোশাক পরেন কেন?

http://www.deshebideshe.com/assets/news_images/d8002109eeb15c38817dd0707542bee9.jpg

আমরা ভেবেও দেখি না প্রতিদিন সকালে আমরা কতক্ষণ সময় বলা চলে নষ্টই করি আজ কী কাপড় পরবো- এটা ভেবে। এটা হয়ত আপনাকে স্কুল অথবা অফিসে পৌঁছুতে দেরিই করিয়ে দেয় অসংখ্যবার। আমরা মূল্যবান সময়ের অনেক অপচয় করি অনেক অসার বিষয়ে খুঁটিনাটি ভাবতে গিয়ে। কোনো পোশাক এই দুনিয়াটাকে পাল্টে দেবে না, এমনকি এটা হয়তো আপনার দিনটিকেও পাল্টাতে পারবে না। এসব কথার অর্থ এই নয় যে ফ্যাশন গুরুত্বহীন কোনো ব্যপার, কারণ সংস্কৃতির উপরে এর অসামান্য প্রভাব রয়েছে এবং ফলশ্রুতিতে এটি সমাজের গতিপথেও ভূমিকা রাখে। সত্যিকারভাবেই ফ্যাশনের মাঝে শিল্পকলা, সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের সম্মিলন ঘটে।

 উদাহরণ হিসেবে ১৯৬০’এর সময়ের দিকে তাকালে দেখা যায়, তখনকার মানুষের পরিচ্ছদ ফুটে উঠেছিলো তৎকালীন বিপরীত-সংস্কৃতির আন্দোলন এবং প্রচলিত রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী রূপ হিসেবে। সহজভাবে বলতে গেলে, পোশাক বলে দিতে পারে সামাজিক অবস্থার চিত্র। তবুও একই সাথে, আমরা শতভাগ না হলেও মাত্রাতিরিক্ত বস্তুকেন্দ্রিক আর অগভীর সমাজে পরিণত হয়েছি। নিঃসন্দেহে পোশাক-পরিচ্ছদ ছাড়াও আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে ভাববার রয়ে গেছে। একইভাবে, আমেরিকার মহান লেখক হেনরী ডেভিড থর্যো একবার বলেছিলানঃ “আমাদের জীবন ক্ষুদ্র বিষয়ে অযথা সময় নষ্ট করায় ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। ...সহজভাবে বললে, সহজ করুন।” এক কথায়, তুচ্ছ বিষয়ে মাথা ঘামাবেন না। জীবনের বৃহত্তর দিকের প্রতি মনোযোগ দিয়ে জীবনকে সহজ করুন।

সঙ্গত কারণেই খুব সফল অনেক ব্যক্তিই তাঁদের দৈনন্দিন জীবনাচরণে এই দর্শন গ্রহণ করেছেন। সিদ্ধান্তের ক্লান্তিঃ কেন অনেক রাষ্ট্রপ্রধান এবং প্রধান-নির্বাহীগন প্রতিদিন একই পোশাক পরেন আপনি তাঁকে পছন্দ করেন বা নাই করেন, এ ব্যাপারে কোনো বিতর্ক নেই যে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর একটিতে নিযুক্ত আছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ওবামা। এই পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দেশটির নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তি হিসেবে তাঁর কাছে অজস্র বিষয় উপস্থাপিত হয়। তিনি যাই করুন না কেন, এটা নিয়ে সমালোচনা হবেই। সহজ ভাবে বললে, তাঁর কাছে তাঁর ওয়ারড্রোব নিয়ে ভাববার চেয়ে আরো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার রয়েছে।



ঠিক এই জন্যেই প্রেসিডেন্ট ওবামা প্রতিদিন একই স্যুট পরে থাকেন। প্রায় প্রতিদিনই আর কি। আমাদের হয়ত মনে থাকতে পারে যখন ইন্টারনেটে তাঁর খাকি পরিহিত একটা ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। যদিও সেটা আসলে হয়তো তাঁর চেয়ে বেশি আমাদের নিয়েই বেশি কিছু প্রকাশ করেছে। যাই হোক, অধিকাংশ সময়ে ওবামা হয় নীল অথবা ধূসর স্যুট পরে থাকেন। ভ্যানিটি ফেয়ার-এর জন্যে মার্টিন লুইস তাঁর একটি প্রবন্ধে প্রেসিডেন্ট ওবামার এই নিয়মের রুটিনকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেনঃ ওবামা বলেন- “আপনারা দেখবেন যে আমি শুধু ধূসর অথবা নীল স্যুটই পরে থাকি। আমি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রকে ছোটো করে আনতে চাই। আমি কী খেতে চাই কিংবা কী পরতে চাই এসব নিয়ে ভাবতে চাই না। কারণ আমার আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়।” মার্টিন লুইসের প্রবন্ধের এক গবেষণায় ঊঠে এসেছে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সাধারণ কাজের ফলে কারো আরো অধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা হ্রাস পায়।

গার্ডিয়ান পত্রিকায় স্টুয়ার্ট হেরিটেজ লিখেছেন- “ বারাক ওবামা তাঁর ওয়ারড্রোবকে এমনভাবে স্বল্প আয়োজনে সাজিয়েছেন যে তিনি দৃঢ়তার সাথে যেকোনো পরিস্থিতেই সেটা থেকে কাপড় বেছে নিতে পারেন অনায়াসে এবং অন্যান্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন যেটা মানবজাতির ভবিষ্যতেরও নির্ধারক হয়ে যায়।” প্রেসিডেন্ট ওবামাই একমাত্র ব্যক্তি নন রীতি অনুসরণকারীদের মাঝে। সদ্যপ্রয়াত মহান স্টিভ জবস্‌ সবসময়েই তাঁর নির্দিষ্ট কালো টার্টলনেক এবং জিনস্‌ পরতেন।



আরো আছে, মার্ক জুকারবার্গ সাধারণত নৈমিত্তিকভাবেই একটি ধূসর টি-শার্টের সাথে কালো হুডি আর জিনস্‌ পরেই জনসমক্ষে আসেন। একইভাবে জানা যায়, আলবার্ট আইনস্টাইন একই রকমের অনেকগুলো ধূসর স্যুট কিনেছিলেন যাতে তাঁকে কোন স্যুট পরবেন- এটা ভেবে প্রতিদিন সকালে সময় নষ্ট করতে না হয়। এই সবকিছুই “সিদ্ধান্তের ক্লান্তি” তত্ত্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এটা একটি সত্যিকার মানসিক পরিস্থিতি, অনেক গুরুত্বহীন সিদ্ধান্ত নিয়ে ভেবে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে মানুষের উৎপাদনশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সহজ করে বললে, প্রতিদিন কী কাপড় পরবো- এটার উপর জোর দেয়ার ফলে মানুষ কাজে ক্রমাগত অদক্ষ হতে থাকে। ঠিক এই জন্যেই প্রেসিডেন্ট ওবামা, স্টিভ জবস্‌, মার্ক জুকারবার্গ এবং আলবার্ট আইনস্টাইন-এর মতো ব্যক্তিত্বরা তাঁদের জীবনকে সহজ সরল করার স্বার্থে তাঁদের পোশাকের আলমারিকে একমুখী করেছিলেন।

জীবনকে সরল করুন

আলমারিতে নানারকম পোশাকের সম্ভার অতিরঞ্জিত একটা ব্যাপার। আমরা খুব বেশি সময় অপচয় করি এমন সব বিষয় নিয়ে, যেগুলোর কোনো সত্যিকার সারবত্তা নেই। এবং আমরা এটাও ভেবে দেখি না যে কত সহজে আমরা এটা পরিবর্তন করতে পারি।



ঠিক এজন্যই উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট হোসে মহিকা টাই পরা থেকে বিরত থাকেন এটা বলে যে- “টাই এমন একটুকরো কাপড়, যেটা গলাকে অযথাই আটকে রাখে। আমি ভোগবাদের একজন শত্রু। কারণ এই অতিমাত্রায় বস্তুক্রয়নীতির কারণে আমরা আমাদের মৌলিক জিনিসগুলো ভুলে যাচ্ছি এবং মানবিক শক্তির অপচয় করছি তুচ্ছ বিষয়াদির উপর যেগুলোর আদতে মানুষের সুখের সাথে খুবই কম ভূমিকা আছে।”

তিনি একদমই ঠিক বলেছেন। আমাদের মাঝে অধিকাংশ মানুষই বস্তুগত জিনিসের প্রতি আসক্তির দোষে দুষ্ট। এসব আসলে আমাদের জীবনে প্রকৃত কোনো অর্থ বয়ে আনে না। প্রকৃত সার্থকতা পাওয়া যায় পৃথিবীর বুকে বেরিয়ে পরা এবং সত্যিকার হিতার্থী পরিবর্তনের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা।

এক জোড়া নতুন জুতো কিনলে হয়ত আপনি সাময়িকভাবে কিছুটা আত্মবিশ্বাসী বোধ করবেন, কিন্তু এটা দীর্ঘমেয়াদে আপনার জীবনের কোনোই সমৃদ্ধি আনবে না।
নির্দ্বিধায় বলা যায়, এই পৃথিবী একটি খুবই একঘেয়ে স্থান হয়ে যাবে যদি আমরা ঠিক একই কাজ প্রতিদিনই করতে থাকি।

তবুও, আমরা আমাদের জীবনকে আরেকটু সহজ করতে চিন্তা করতে পারি দৈনন্দিন উদ্দেশ্যবিহীন কিছু কিছু ব্যাপারে কিছুটা সময় কম নষ্ট করে। এইভাবে কেউ হয়ত দেখবেন যে তিনি অনেক কম চাপমুক্ত, অনেক উৎপাদনশীল এবং পরিপূর্ণ জীবনযাপন করা শুরু করেছেন।

জীবন এমনিতেই অনেক জটিল, তাই তুচ্ছ বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে নিজেদের সুখকে নিয়ন্ত্রণ করবেন না। সহজ করুন, সহজ করুন।

- See more at: http://www.deshebideshe.com/news/details/43283#sthash.W0HQoEuw.dpuf


Offline mahmudul_ns

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 129
  • Never confuse a single defeat with a final defeat.
    • View Profile
Md. Mahmudul Islam
Lecturer, Dept. Of Natural Sciences
Daffodil International University
mahmudul.ns@diu.edu.bd