পৃথিবীর সম্বন্ধে সবচে' বড় সত্য হচ্ছে পৃথিবী ঠিক নরম পাউরুটি না

Author Topic: পৃথিবীর সম্বন্ধে সবচে' বড় সত্য হচ্ছে পৃথিবী ঠিক নরম পাউরুটি না  (Read 1347 times)

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
: পৃথিবীর সম্বন্ধে সবচে' বড় সত্য হচ্ছে পৃথিবী ঠিক নরম পাউরুটি না।

তুমি যদি ছিঁচকাদুনে দূর্বল টাইপের হরিণ-মানুষ হও, পৃথিবী তোমার জন্য একটা বড় নৃশংস খাঁচা ছাড়া চিড়িয়াখানা, যেখানে বাঘরা নখ শান দিয়ে ঘুরে বেড়ায় হরিণ খোঁজার জন্য, আর মানুষজন টিকেট কিনে ফুটা দিয়ে উঁকি মেরে তাকিয়ে থাকে সেই জিনিস দেখে মজা পাবার জন্য। বেশিরভাগ মানুষ তোমার সাথে মিশবে তাদের স্বার্থে তোমাকে ব্যবহার করার জন্য, তুমি যখন ঘেন্নায় বমি করে দিতে চাবে তখন এই মানুষগুলো তোমার বমি করা দেখে ভয়ে পালাবে, তোমার জন্য কিছুই করবে না।

এরপর তুমি যদি সেখানে কাত হয়ে মরে যাও, এই মানুষগুলো একটু্ও আফসোস করবে না, তোমাকে হাসপাতালে না নেবার জন্য।

তুমি যদি তোমার জীবণে সত্যি কিছু একটা করতে চাও, শুধু বাগড়ম্বর করার জন্য কিংবা মহাপুরুষের ইউনিফর্ম পড়ার জন্য না, নিজেকে বোকাদের মহলে জ্ঞানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্যও না, হয়তো রাগের চোটে, যারা তোমাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো সবসময় কিংবা যাদের দাম্ভিকতা কিংবা নিজেকে উঁচু মহলে তুলে আভিজাত্য দেখানো দেখে তোমার নিজেকে খুব ছোট আর অসহায় মনে হতো, তোমাকে শক্ত হতে হবে। নিজেকে একটা ছোট্ট শক্ত বুলডোজার ভাবো, যাকে কোন দেয়াল থামাতে পারে না।

বেশিরভাগ দাম্ভিক মানুষ দাম্ভিক হয়, কারণ তারা তাদের সীমাবদ্ধতা সম্বন্ধে কিছুই জানে না। ধরো কেউ একজন, যার হয়তো রাস্তার ফকির হবার কথা ছিল, সে দুইপাতা মুখস্থ করে একটা PhD নিয়ে ভার্সিটির টিচার হয়ে গেলো। তুমি কিভাবে আশা করতে পারো, যে সে নিজেকে একজন মহামান্য পন্ডিত ভাববে না? মানুষ তখনই তার সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে সচেতন হয়, যখন সে তার সামনে তার চেয়ে উন্নত মানুষজনকে দেখতে পায়, এবং পার্থক্যটা বুঝতে পারে। বেশিরভাগ মানুষ যথেষ্ট সৎ না, নিজের সীমাবদ্ধতা স্বীকার করার জন্য। বেশিরভাগ মানুষ নিজেকে শ্রেয়তর ভাবতে চায়, সেজন্য তারা নিজেদেরকে শ্রেয়তর করার বদলে চোরের মতো নিজের কাছ থেকে নিজের সব সীমাবদ্ধতা ঢেকে ফেলে - খুব সহজ শর্টকাট - কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ তাই করে।

পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই - "বেশিরভাগ মানুষ" টাইপের। তারা পৃথিবীতে আসে, দুই পা হেঁটে খুশি হয়ে কবরে চলে যায়, কখনো খুব বড় কোন ঝুঁকি নেয় না, কখনো খুব বড় কিছু করার চেষ্টা করে না, কখনো পুরোপুরিভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে না। কিছু কিছু মানুষ হরিণ-মানুষ টাইপের হয়, স্রষ্টা তাদেরকে অতিরিক্ত আবেগ দিয়ে পাঠায়, সেজন্য কিছু হলেই তারা হাউমাউ করে কান্নাকাটি করতে শুরু করে। তুমি যদি সেরকম কেউ হও, একটু থামো।

পৃথিবীটা নরম পাউরুটি না, বাক্স ভরা কান্না মোছার ফেসিয়াল টিশুও না।

তুমি যদি বেঁচে থাকতে চাও, বুক ভরে শ্বাস নাও, একটা সত্যিকারের ভালো কবিতা পড়ো, পাহাড়ে গিয়ে মেঘ দেখে আসো। সাগরের পানিতে পা ডুবিয়ে কিছুক্ষণ একা একা হেঁটে বেড়াও। এটা তোমার জীবণ। তোমার স্বপ্নগুলো অন্য কেউ কখনো দেখবে না। অন্য কেউ কখনো সাহসও পাবে না সেগুলো সত্য করার। অন্য কেউ কখনো সেই মানুষটা হবে না, যেই মানুষটা তুমি হতে চাও। হয়তো পৃথিবী অনন্ত অনন্ত কাল ধরে অপেক্ষা করবে তোমার মত আরেকটা মানুষ বানানোর, তার মধ্যে তোমার স্বপ্নগুলো পুরে দেবার জন্য, তারপর হয়তো আরো অনন্ত অনন্ত সময় ধরে অপেক্ষাই করতে থাকবে।

তুমি একটা ছোট্ট শক্ত বুলডোজার। আর তুমি যতদিন বেঁচে থাকবে, পৃথিবীটা তোমার পৃথিবী।

লেখা - বন্ধু, নটার নাটাই