Health Tips > Pain

Arthritis in winter..

(1/1)

Farhana Israt Jahan:
শীতে বাতের চিকিৎসা ও করণীয়:

গরমের চেয়ে শীতে রোগীর ব্যথা বেড়ে যায়। শীতপ্রধান দেশগুলোতেও এই জাতীয় সমস্যা বেশি দেখা যায়। আমাদের দেশে শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেরই বাতের কষ্ট বাড়তে শুরু করে। তাই শীতে কীভাবে সুস্থ থাকা যায়, সে ব্যাপারে আমাদের থাকতে হবে অত্যন্ত সচেতন। স্বাস্থ্য সচেতনতা, চিকিৎসা সুবিধা, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি পরিবর্তনের ফলে দিনে দিনে মানুষের বয়স বৃদ্ধি পাচ্ছে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শারীরিক, মানসিক শক্তি ও দেহ কোষের কর্মক্ষমতা বা সামর্থ্য ধীরে ধীরে কমতে থাকে। টিস্যুর এই সামর্থ্যরে ক্রমাবনতির হার বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনুপাতে ঘটে। একজন ৮০ বছরের বৃদ্ধ যেমন কর্মক্ষম থাকতে পারেন, তেমনি আবার ৫০/৬০ বছর বয়সের ব্যক্তি ভুগতে পারেন বিভিন্ন ধরনের বার্ধক্যজনিত সমস্যা ও জয়েন্ট বা মাংসপেশির ব্যথায় কাতর।

সাধারণত মহিলারা ৪০ বছর আর পুরুষরা ৫০ বছরের পর বয়সজনিত জয়েন্টের সমস্যায় ভুগে থাকেন। আমাদের দেশের ৫০ ঊর্ধ্ব জনসংখ্যার শতকরা ৬৫ ভাগ লোক ব্যথাজনিত সমস্যায় ভোগেন। বিশেষ করে যেসব জয়েন্ট শরীরের ওজন বহন করে এবং অতিরিক্ত ব্যবহৃত হয়; যেমন- ঘাড়, কোমর, স্কন্ধ বা সোল্ডার জয়েন্ট। হাঁটু ব্যথার রোগী সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। বাতের ব্যথার অনেক কারণ রয়েছে- তার মধ্যে ৯০ ভাগ হচ্ছে ‘মেকানিকেল সমস্যা’। মেকানিকেল সমস্যা বলতে মেরুদণ্ডের মাংসপেশি, লিগামেন্ট মচকানো বা আংশিক ছিঁড়ে যাওয়া, দুই কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিক্স সমস্যা, কশেরুকার অবস্থানের পরিবর্তনকে বোঝায়। অন্যান্য কারণের মধ্যে বয়সজনিত হাঁড় ও জোড়ার ক্ষয় বা বৃদ্ধি, রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস বা গেঁটেবাত, অস্টিওআথ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস, এনকাইলজিং স্পন্ডাইলোসিস, বার্সাইটিস, টেন্ডিনাইটিস, স্নায়ুয়ুবিক রোগ, টিউমার, ক্যান্সার, মাংসপেশির রোগ, শরীরে ইউরিক এসিড বৃদ্ধি, অপুষ্টিজনিত সমস্যা, শরীরের অতিরিক্ত ওজন ইত্যাদি। শীতে এসব সমস্যার ব্যথা আরও বেড়ে যায় এবং রোগী অসুস্থ ও কর্মহীন হয়ে পড়ে।

তাই শীতে বাতের ব্যথা নিয়ে কষ্ট না পেয়ে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা নিতে হবে এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যারা বাতের ব্যথায় ভুগছেন তারা একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের চিকিৎসা ও পরামর্শে ভালো থাকতে পারেন। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াবিহীন অত্যন্ত আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। চিকিৎসক আপনার রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা ও পরামর্শ দিলে আপনি অবশ্যই বাতের কষ্ট থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন, পাশাপাশি থাকবেন কর্মক্ষম। নিুলিখিত পরামর্শ মাফিক চললেও বাতের ব্যথা থেকে অনেক অংশে সুস্থ থাকা যায়।

* ব্যথা বেশি হলে ৭ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেবেন।

* নিয়মিত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নেবেন।

* ব্যথার জায়গায় গরম/ঠাণ্ডা স্যাক দেবেন ১০-১৫ মিনিট।

* বিছানায় শোয়া ও ওঠার সময় যে কোনো একদিকে কাত হয়ে হাতের ওপর ভর দিয়ে শোবেন ও উঠবেন।

* মেরুদণ্ড ও ঘাড় নিচু করে কোনো কাজ করবেন না।

* নিচু জিনিস যেমন- পিঁড়ি, মোড়া বা ফ্লোরে না বসে চেয়ারে পিঠ সাপোর্ট দিয়ে মেরুদণ্ড সোজা করে বসবেন।

* ফোম ও জাজিমে না শুয়ে উঁচু শক্ত সমান বিছানায় শোবেন।

* মাথায় বা হাতে ভারী ওজন/ বোঝা বহন নিষেধ।

* দাঁড়িয়ে বা চেয়ারে বসে রান্না করবেন।

* ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের নির্দেশমতো দেখানো ব্যায়াম নিয়মিত করবেন, ব্যথা বেড়ে গেলে ব্যায়াম বন্ধ রাখবেন।

* শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, পেট ভরে খাওয়া নিষেধ, অল্প অল্প করে বার বার খাবেন।

* সিঁড়িতে ওঠার সময় ধীরে ধীরে হাতল ধরে উঠবেন।

* ঝরনায় বা চেয়ারে বসে গোসল করবেন।

* কোনো প্রকার মালিশ করা নিষেধ।

* দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না, ১ ঘণ্টা পর পর অবস্থান বদলাবেন।

* শোওয়ার সময় একটি পাতলা নরম বালিশ ব্যবহার করবেন।

* বাইরে চলাফেরা করার সময় কোমরের বেল্ট ব্যবহার করবেন, শোওয়ার সময় ও ব্যায়াম করার সময় অবশ্যই বেল্ট খুলে রাখবেন।

* হাই হিলযুক্ত জুতা ব্যবহার করবেন না, নরম জুতা ব্যবহার করবেন।

* ব্যথা তীব্র হলে উঁচু কমোডে বসে টয়লেট করবেন।

* চলাফেরায় ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন ও রাস্তা এড়িয়ে চলবেন ও সামনের বা মাঝামাঝি আসনে বসবেন।

collected

Navigation

[0] Message Index

Go to full version