সবজি-ফলে-মাছে-তেলে তারুণ্য!

Author Topic: সবজি-ফলে-মাছে-তেলে তারুণ্য!  (Read 694 times)

Offline Saqueeb

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 536
  • Test
    • View Profile
তারুণ্য ধরে রাখার রহস্য নাকি লুকিয়ে আছে সবজি, ফল, তাজা মাছ আর জলপাই তেলে! ঐতিহ্যগতভাবে ভূমধ্যসাগরীয় রান্নাবান্নার এসব মূল উপাদান জনপ্রিয় সব খাবারের প্রাণ। সম্প্রতি ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ভূমধ্যসাগরীয় এসব খাদ্যপ্রণালি অনুসরণ আমাদের জিনগতভাবে তারুণ্যদীপ্ত থাকতে সহায়তা করতে পারে। বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যপ্রণালির গুণকীর্তন দুনিয়াজুড়েই দিন দিন বাড়ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে চালানো এক গবেষণার ফলাফল হাতে নিয়ে আবারও বিষয়টি সামনে নিয়ে এলেন। তাঁরা বলছেন, ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যপ্রণালি অনুসারে বেশি বেশি শাক-সবজি ও ফলের সঙ্গে তাজা মাছ এবং জলপাইয়ের তেল খেলে তারুণ্য ধরে রাখা যাবে। কেননা, এসব খাবারদাবারের মিশ্রণ বয়স বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে ডিএনএ কোষের সহজাত বিভাজনকে খানিকটা প্রভাবিত করতে পারে। এ ছাড়া চিকিৎসকসহ পুষ্টি বিশারদেরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন, এমন খাবারদাবার হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

বোস্টনের একদল গবেষক এক দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রায় পাঁচ হাজার সেবিকার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা তথ্যাবলি পর্যবেক্ষণ করেন। এতে দেখা গেছে, যে সেবিকারা এমন ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যপ্রণালি অনুসরণ করেছেন, তাঁদের মধ্যে বয়সের তুলনায় বুড়িয়ে যাওয়ার ছাপ কম পড়েছে। অবশ্য পর্যবেক্ষণনির্ভর এই গবেষণা প্রতিবেদনটিতে এ বিষয়টি স্পষ্ট নয় যে, এমন খাদ্যপ্রণালি ঠিক কোন কারণে বুড়িয়ে যাওয়া রোধে সহায়ক।

বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক নিয়মে আমাদের দেহকোষগুলো বিভাজিত হতে থাকে। আর এই কোষ বিভাজনের সময়ই আমাদের জিনগত সংকেতগুলো তাদের নানা বৈশিষ্ট্য হারাতে শুরু করে। কিন্তু ক্রোমোসোমের প্রান্তগুলোতে টোলেমারেস নামের অতি-ক্ষুদ্র একটা কাঠামো থাকে। মূলত এ কাঠামোটিই আমাদের ডিএনএ সংকেতগুলোকে বহন ও রক্ষা করে থাকে। ফলে ক্রোমেসোমের মাথায় অনেকটা টুপির মতো চেপে বসে থাকা এই টোলেমারেসের ক্ষয় রোধ করতে পারলে হয়তো জিনগত বৈশিষ্ট্যও অনেকটা রক্ষা করা সম্ভব।

কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ক্রোমোসোমের এই টোলেমারেস খাটো হয়ে যেতে থাকে। আর খাটো হয়ে যাওয়া টোলেমারেসের সঙ্গে বয়সজনিত নানা রোগ এবং হৃদরোগ ও নানা ধরনের ক্যানসারের সম্পৃক্ততা আছে। মার্কিন বিজ্ঞানীদের চালানো গবেষণায় দেখা গেছে যে সেবিকারা নিয়মিত ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যপ্রণালি অনুসরণ করেছেন তাদের টোলেমারেস বেশ পুষ্ট এবং দীর্ঘ।

ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যপ্রণালির স্বাস্থ্যগত প্রভাব নিয়ে এই গবেষণাকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। তবে সঠিক কার্যকারণ সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে এমন পর্যবেক্ষণনির্ভর গবেষণা থেকে কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

অবশ্য, যুক্তরাজ্যের এক্সটিয়ার ইউনিভার্সিটির ডক্টর ডেভিড এললিয়েলিন বলেছেন, ‘বড় আকারে সুচারুভাবে সম্পন্ন এই গবেষণা সাধারণভাবে প্রচলিত এই ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ যে, খাবারদাবারে সচেতন হওয়া স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক।’ ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ‘এই গবেষণার ফলাফলে আমাদের পরামর্শের যৌক্তিকতা আরও দৃঢ় হলো যে স্বাস্থ্যকর খাবারদাবারে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।’
Nazmus Saqueeb
Sr. Lecturer, Dept. of Pharmacy,
Daffodil International University.