বিশ্বের নয়টি দুর্লভ গাছ

Author Topic: বিশ্বের নয়টি দুর্লভ গাছ  (Read 970 times)

Offline Saqueeb

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 536
  • Test
    • View Profile
বিশ্বের নয়টি দুর্লভ গাছ
« on: December 06, 2014, 02:22:12 PM »

যতদিন যাচ্ছে ততই মানবসভ্যতা পরিবেশ বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে একদিকে যেমন মানুষের অস্তিত্ব হুমকির মুখে তেমনি প্রাকৃতিক অনেক সম্পদও ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আর এই বিলীন হয়ে যাওয়ার তালিকায় এগিয়ে আছে গাছ। গত ৫০ বছরে বিশ্বের নানান প্রান্ত থেকে অনেক গাছ পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এছাড়াও অনেক প্রাণীতো বিলুপ্ত হয়ে গেছেই। যেমন ধরা যাক আফ্রিকার কালো গণ্ডারের কথাই। প্রাচীন আফ্রিকার বহু গল্পে-মিথে জড়িয়ে আছে এই গণ্ডারের নাম। কিন্তু এখন আর কোথাও চাইলেও দেখা মিলবে না কালো গণ্ডারের।

অনেকেই মনে করেন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আর যাই ঘটুক গাছেদের বিলুপ্তি হবে না। কিন্তু কথাটা আসলে সত্যি না। জলবায়ুর ক্রমাগত পরিবর্তনের ফলে অনেক গাছই ধীরে ধীরে বংশবিস্তার করতে পারছে না। যেমন ধরা যাক প্রাচ্যের অশত্থ বৃক্ষের কথাই। যেখানে একটা সময় এই বৃক্ষকে কেন্দ্র করে নগর সভ্যতা গড়ে উঠেছিল এই অঞ্চলে, এখন সেখানেই এই বৃক্ষ প্রায় দেখতেই পাওয়া যায় না। এবারের ফিচারে বাংলামেইলের পাঠকদের জন্য এমন নয়টি গাছের পরিচিতি তুলে ধরা হলো, যে গাছগুলো বর্তমানে দুর্লভ এবং যেকোনো সময় বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।

অ্যাটেনবার্গ পিচার গাছ


বিশ্বের নয়টি দুর্লভ গাছফিলিপাইনের ভিক্টোরিয়া পর্বতে দেখতে পাওয়া যায় এই গাছ। বিশ্বের আর কোথাও এই গাছের সন্ধান পাওয়া যায় না। মাটি থেকে মাত্র ত্রিশ সেন্টিমিটার উচু হওয়ায় এই গাছটি সহজেই পোকামাকড় ও ইদুরদের ফাঁদে ফেলতে পারে। ২০০৭ সালে একদল প্রাণীবিদ এই গাছটি আবিস্কার করেন। আবিস্কারকদের মধ্যে একজন ব্রিটিশ ন্যাচারাল হিস্টিরি ব্রডকাস্টারের ডেভিড অ্যাটেনবার্গ। তার নামেই মূলত গাছটির নামকরণ করা হয়।

আত্মঘাতী তালগাছ

বিশ্বের নয়টি দুর্লভ গাছমাদাগাস্কারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রত্যন্ত অঞ্চলেই একমাত্র এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। এক একটি গাছ অন্তত ৫০বছর জীবিত থাকে। যখনই তাদের কাণ্ডে ফুল ফোটে তখনই মূলত তারা মারা যায়। ২০০৫ সালে এই গাছটি আবিস্কৃত হয়। এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, বিশ্বে এখন মাত্র এই গাছের সংখ্যা ৯০টি।

ওয়েস্টার্ন আন্ডারগ্রাউন্ড অর্কিড

বিশ্বের নয়টি দুর্লভ গাছঅন্যান্য অর্কিডের সঙ্গে এই অর্কিডের মূল পার্থক্যই হলো এটি মাটির নিচে জন্মায়। শুধু তাই নয়, গাছটির ফুলও ফোটে মাটির নিচে। মে মাসের শেষে এবং জুন মাসের শুরুর দিকে এই অর্কিড গাছে ফুল ফোটে। তখন চারপাশে সুঘ্রান ছড়িয়ে পরে। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ব্রুমবুশ নামক এলাকায় এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। অন্য সব গাছের মতো এরা দিনের বেলা সূর্যের আলো থেকে শক্তি সঞ্চয় করে না। এই গাছ মাটির ভেতর থেকে শক্তি সঞ্চয় করে।

গলফ বল


বিশ্বের নয়টি দুর্লভ গাছমেক্সিকোর কুয়ারেতারো পাহাড়ে জন্মায় গলফ বল নামের এই গাছ। সচরাচর এই গাছ দেখতে সাদা রংয়ের হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে গোলাপি রংয়ের গাছও দেখা যায়। গত বিশ বছরে আশঙ্কাজনক হারে এই গাছের সংখ্যা কমেছে।

ভেন্ডা সাইকাড

বিশ্বের নয়টি দুর্লভ গাছচুলের মতো দেখতে গাচটি মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার লিম্পোপো প্রদেশে দেখতে পাওয়া যায়। ১৯৯৬ সালে বৃক্ষের নতুন প্রজাতি হিসেবে একে সনাক্ত করা হয়। আফ্রিকার স্থানীয় জনগোষ্ঠি এই গাছের ফলকে বিশেষ গহনা হিসেবে ব্যবহার করার কারণে অবৈধভাবে অনেকেই এই গাছ ধ্বংস করে ফেলে ফল আহরণ করতে গিয়ে। বর্তমানে হাতে গোনা কয়েকটি গাছ মাত্র জীবিত আছে।

জেলিফিস ট্রি

বিশ্বের নয়টি দুর্লভ গাছপ্রথমে ধারণা করা হয়েছিল যে এই গাছটি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু ১৯৭০ সালে এই গাছটিকে আবারও পাওয়া যায়। সিসিলি দ্বীপপুঞ্জের মাহে দ্বীপে এই গাছ এখন পাওয়া যায়। মূলত এই গাছটি তার জেলিফিসের মতো দেখতে ফলের কারণে এই নামেই পরিচিত।

পোক মি বয় ট্রি

বিশ্বের নয়টি দুর্লভ গাছব্রিটিশ ভার্জিন আইসল্যান্ডের আনেগাদা দ্বীপে এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। প্রতি ১০ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে একটি করে গাছ জন্মায়। যুক্তরাজ্যের টরটোলা রাজ্যের জুনিয়র ওনেইল বোনানিক্যাল গার্ডেনে এই বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় থাকা গাছটিকে সংরক্ষণে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

অ্যাসেনসন আইনল্যান্ড পার্সলি ফ্রেন

বিশ্বের নয়টি দুর্লভ গাছদক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের আগ্নেয়গিরি অঞ্চলে এই ক্ষুদ্রাকৃতির গাছের বসবাস। প্রায় ৫০ বছর ধরে বিশ্বাস করা হতো যে এই গাছটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু ২০০৯ সালে একদল বোটানিস্ট আবারও আবিস্কার করেন এই গাছ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গাছটির প্রায় ভিন্ন ভিন্ন ৪০টি প্রজাতি ছিল। কিন্তু বর্তমানে মাত্র একটি প্রজাতিই জীবিত আছে।

কোরাল ট্রি

বিশ্বের নয়টি দুর্লভ গাছদক্ষিণ-পূর্ব তাঞ্জানিয়ার গহীন বনাঞ্চলে মূলত এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। ১৯৯৮ সালে এই গাছটিকে বিলুপ্ত গাছ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পুনরায় ২০০১ সালে একই বনে আবারও গাছটির সন্ধান পাওয়া যায়
Nazmus Saqueeb
Sr. Lecturer, Dept. of Pharmacy,
Daffodil International University.