ওয়াসফিয়া নাজরীন। বাংলাদেশি সর্বকনিষ্ঠ ও দ্বিতীয় নারী পর্বতারোহী। তিনি ২০১২ সালের ২৬ মে শনিবার সকাল পৌনে ৭টায় বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেন। সম্প্রতি ন্যাশনাল জিওগ্রাফির বর্ষসেরা অভিযাত্রীর খেতাব অর্জন করেন ওয়াসফিয়া নাজরীন।
ওয়াসফিয়া ১৯৮২ সালের ২৭ অক্টোবর ঢাকায় জন্ম গ্রহণ করেন। জন্মের কিছুদিন পর তার পরিবারসহ খুলনায় চলে যান। ওয়াসফিয়ার দাদার বাড়ি ফেনী, কিন্তু তিনি পাঁচ বছর বয়সে চলে যান চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনপদে কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর এবং এখানেই পাহাড়ের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে।
ওয়াসফিয়া আবার জন্মস্থান ঢাকায় চলে আসেন। রাজধানীর স্কলাসটিকা স্কুল থেকে ও এবং এ লেভেল সম্পনড়ব করার পর যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায় এগনেস স্কট বিশ্ববিদ্যায়ে পড়তে যান। তার বিষয় ছিল সামাজিক মনোবিজ্ঞান ও স্টুডিও আর্ট। এরপর স্কটল্যান্ডে কিছুদিন পড়াশোনা করেন। ছাত্রীজীবনে তিনি যুদ্ধবিরোধী এবং মানবতার পক্ষে বিভিনড়ব বৈশ্বিক ইস্যুতে সμিয় আন্দোলনকর্মী ছিলেন। তিনি উনড়বয়নকর্মী হিসেবেও কাজ করেছেন। এখন তিনি বাংলাদেশ অন সেভেন সামিট কর্মসূচিতেই সময় দিচ্ছেন। তার মেন্টর হিসেবে আছেন পৃথিবীর প্রম সেভেন সামিট বিজয়ী কানাডার প্যাট্রিক মোরো।
ওয়াসফিয়ার লক্ষ্য সাত মহাদেশের সাতটি চূড়া জয়। এ পর্যন্ত ২০১১ সালের ২ অক্টোবর আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বত কিলিমানজারো, ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ পর্বত অ্যাকোনকাগুয়া, ২০১৩ সালের ২৮ মার্চ ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এলব্রুস জয় করেন। রাশিয়ার স্থানীয় সময় সকাল সাতটা ৫১ মিনিটে তিনি এলব্রুস চূড়ায় আরোহণ করে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা ওড়ান।
২০১১ সালের জুলাই মাসে ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বত এলবার্সের চূড়ার ৩০০ মিটার নিচে থেকে খারাপ আবহাওয়ার জন্য ফিরে আসেন ওয়াসফিয়া। এছাড়াও ২০০৯ সালে নেপালের লুরী পর্বত, ২০১০ সালে আইল্যান্ড পিক জয় করেন।
চলতি বছরের ৭ নভেম্বর শুμবার ন্যাশনাল জিওগ্রাফির বর্ষসেরা অভিযাত্রীর খেতাব পেয়েছেন এভারেস্টজয়ী দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী ওয়াসফিয়া নাজরীন।
ওইদিন বর্ষসেরা অভিযাত্রীদের তালিকা প্রকাশ করা হয় ন্যাশনাল জিওগ্রাফির ওয়েবসাইটে। প্রতিবছর তারা বিভিনড়ব ক্ষেত্র থেকে ১০ জনকে বর্ষসেরা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন। ন্যাশনাল জিওগ্রাফির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে দুঃসাহসী অভিযানের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে নিজের অঙ্গীকার ও কর্মতৎপরতার জন্য ওয়াসফিয়াকে ২০১৪ সালের অন্যতম বর্ষসেরা হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।
এছাড়াও পিপলস চয়েস অ্যাওয়ার্ড নামে দ্বিতীয় একটি পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি, যাতে এই দশ অভিযাত্রীর প্রত্যেককে প্রতিদিন একবার করে ভোট দেয়া যাবে।
এই পেজে (ধফাবহঃঁৎব.হধঃরড়হধষমবড়মৎধঢ়যরপ. পড়স) গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়া যাবে। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিপলস চয়েস অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা করা হবে।
২০১২ সালের ৯ জুন দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্ট চূড়ায় ওঠেন ওয়াসফিয়া নাজরীন। বাংলাদেশের প্রম এভারেস্ট জয় নারী নিশাত মজুমদার।
প্রম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন মুসা ইব্রাহিম ২০১০ সালের ২৩ মে। তার পথ ধরে এই গৌরবের ভাগিদার হন এম এ মুহিত ও নিশাত।
সাত মহাদেশের সাতটি চূড়া জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নেমেছেন ওয়াসফিয়া। হিমালয়ের সর্বোচ্চ চূড়া এভারেস্টসহ তিনি ছয় মহাদেশের ছয়টি সর্বোচ্চ পর্বতচূড়া জয় করেছেন।
২০১১ সালের ২ অক্টোবর আফ্রিকার মাউন্ট কিলিমানজারো এবং একই বছেরের ১৬ ডিসেম্বর দক্ষিণ আমেরিকার সর্বোচ্চ পর্বত অ্যাকনকাগুয়া জয় করেন ওয়াসফিয়া। - See more at:
http://www.dailyinqilab.com/2014/11/25/221239.php#sthash.B33jj4gU.YMNTfT0j.dpufSource: নিউজ নেটওয়ার্ক