Science & Information Technology > Internet Technology
দেরিতে হলেও সম্ভাবনা অপার
(1/1)
Karim Sarker(Sohel):
স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টেলিভিশন সম্প্রচার, স্যাটেলাইট ফোন, ইন্টারনেট সেবা এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাসসহ নানা সেবা পাওয়া যাচ্ছে। তবে এতসব সুবিধা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের নিজস্ব কোনো স্যাটেলাইট নেই। ফলে বৈশ্বিক যোগাযোগের জন্য স্যাটেলাইট সেবা ভাড়া করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনগুলোকে সংবাদ সম্প্রচার করার জন্য বছরে গুণতে হচ্ছে প্রায় দুই লাখ ডলার। সে হিসাবে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মিলে বছরে দিচ্ছে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এই সব টাকাই ভাড়া হিসেবে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অদূরদর্শিতার কারণেই এতো দিনেও নিজস্ব স্যাটেলাইট স্থাপন করা যায়নি বলে মনে করছেন প্রযুক্তিবিদরা।
তবে দেরিতে হলেও নিজস্ব স্যাটেলাইট স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সামনে ফেব্রুয়ারিতেই স্যাটেলাইট তৈরির টেন্ডার দেয়া হবে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই মহাকাশে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট স্থাপন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন, বাংলাদেশের কক্ষপথে বহু আগেই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা উচিৎ ছিল। এতে করে বাড়তি খরচের বোঝা মাথায় চাপতো না। বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশনগুলো বছরে যে পরিমান স্যাটেলাইট ভাড়া দিতে হচ্ছে সে টাকাও বাংলাদেশে থেকে যেতো।
প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার বাংলামেইলকে বলেন, ‘টেলিকমিউনিকেশনের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা রয়েছে। সারা বিশ্বের টেলিকমিউনিকেশন নিয়ন্ত্রণ করে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ)। সংস্থাটি অনেক আগে থেকে বাংলাদেশের জিও স্যাটেলাইট (ভূ-উপগ্রহ) উৎক্ষেপণের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সে সুযোগটাকে কাজে লাগায়নি। ফলে এখন বাংলাদেশকে উচ্চমূল্যে রাশিয়ার একটি স্যাটেলাইটের স্লট ব্যবহার করতে হচ্ছে। যা কি না অনেকটা ব্যয় সাপেক্ষ এবং অস্থায়ী ব্যবস্থা।’
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু-১ নামে যে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কথা চলছে সেটি নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এতে করে টেলিকমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিপ্লব শুরু হয়ে যাবে। স্যাটেলাইট টেলিভিশনের ব্যয়ও অনেকটা কমে যাবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য কক্ষপথের স্লট ভাড়া নিতে রুশ প্রতিষ্ঠান ইন্টারস্পুটনিকের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিটিআরসি। মোস্তাফা জব্বার বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন হবে সেটির ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের স্যাটেলাইটের ভবিষ্যৎ। কারণ, তারা চাইলে যেকোনো মুহূর্তে স্লট ভাড়ার চুক্তি বাতিল করতে পারে। এতে করে হুমকির মুখে পড়তে পারে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট সেবা। এক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানোর আহ্বান জানান দেশের অন্যতম এই প্রযুক্তিবিদ।
ভাড়ায় স্লট পাওয়া গেলেও এই স্যাটেলাইট থেকে পূর্ণাঙ্গ সুবিধাই মিলবে। বাংলাদেশ নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে অন্য দেশকেও ভাড়া দিতে পারবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। দেশের প্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন, নিজস্ব স্যাটেলাইট থাকলে বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৫ কোটি ডলার আয় করতে পারবে।
এ বিষয়ে তথ্য ও প্রযুক্তিবিদ মুনির হাসান বলেন, ‘নতুন পুরনো মিলিয়ে দেশে এখন প্রায় ৪২টি টেলিভিশনের অনুমোদন রয়েছে। এসব টেলিভিশনের ব্যয়ের বড় একটা অংশ হলো স্যাটেলাইট ভাড়া। বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করা হলে এসব টেলিভিশনের ব্যয়ভার অনেকটাই কমে যাবে।’
বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণে মূল পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল (এসপিআই)। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ হচ্ছে- উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য বাজার পর্যবেক্ষণ, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, আইটিইউয়ের সঙ্গে তরঙ্গ সমন্বয়, স্যাটেলাইট সার্ভিস ডিজাইন, স্যাটেলাইট আর্কিটেকচারাল ডিজাইন, সিস্টেম ডিজাইন, দরপত্র প্রস্তুত, ম্যানুফ্যাকচারিং ও সুষ্ঠুভাবে উৎক্ষেপণ পর্যবেক্ষণের কাজ করবে। এ ছাড়া জনবল তৈরিতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া।
Collected...
Karim Sarker(Sohel):
ছবি দেখুন-----
Navigation
[0] Message Index
Go to full version