ভাগ্য গণনাকারীরা হাত দেখে ভাগ্য বলে দিতে পারে—এমন বিশ্বাস হয়তো কারও কারও আছে। কিন্তু চিকিৎসকেরা হাত দেখে বুঝতে পারেন রোগের লক্ষণ। হাতের বর্ণ-চেহারা-নখ ইত্যাদি আপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ধারণ করে। আপনার হাতই হয়তো বলে দিতে পারে অনেক কিছু।
হাত মেলানো মন্দ নয়
চিকিৎসকের সঙ্গে হাত মেলানোর মাধ্যমেও হয়তো জানা যাবে অনেক কিছু। যেমন: হাইপার থাইরয়েড, অতি উদ্বিগ্ন রোগীর হাত ঘামে ভেজা থাকে, হাতে কাঁপুনি থাকতে পারে। আবার হাইপোথাইরয়েড রোগীর হাত থাকে খসখসে। হাতের তাপমাত্রাও অনুভব করা যাবে এর মাধ্যমেই। আপনি একজন ধূমপায়ী কি না, তা-ও বোঝা যাবে আপনার আঙুল ও নখের রং দেখেই। আপনার আঙুলের ফাঁকে সংক্রমণ থাকলেও তা নজরে আসবে সহজে।
নখের আছে নানা রং
দেহে স্বাভাবিক রক্ত থাকলেই সাধারণত নখের রং গোলাপি হয়। নখ দেখতে যদি ফ্যাকাশে ও প্রাণহীন লাগে, তবে রক্তস্বল্পতা আছে বলে ধরা যায়। ডায়াবেটিস বা যকৃতের রোগেও নখ ফ্যাকাশে হয়। নখ হলুদ এবং শক্ত ও মোটা হয়ে গেলে বুঝতে হবে, আপনার নখে ছত্রাকের সংক্রমণ হয়েছে। নখে সাদা সাদা ছোপ পড়তে পারে কিডনির সমস্যায় বা আমিষের অভাবে। নখের নিচে ও কোণে নিলচে রং হলে বুঝতে হবে যথেষ্ট অক্সিজেনের সরবরাহ নেই দেহে। হাঁপানি রোগী বা ফুসফুস ও হৃদ্রোগীদের ঠোঁট বা নখ নীল হয়ে এলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া প্রয়োজন।
ভঙ্গুর নখ
অনেকের অল্পতেই নখের আগা ভেঙে যায়। নখে বা হাতে বেশি পানি লাগালে নখ ভঙ্গুর হয়ে যায়। এ ছাড়া বারবার নখ ভেঙে যাওয়া পুষ্টিহীনতা বা রক্তপ্রবাহ কমে যাওয়ার লক্ষণ। নখের কোণের ত্বক লাল ও ফোলা হতে পারে সংক্রমণের কারণে। একে প্যারোনাইকিয়া বলে। আবার সোরিয়াসিসের রোগীদের নখে গর্ত গর্ত থাকতে পারে।
আঙুল ফুলে কলাগাছ?
নখ ও আঙুলের মাঝে একটা কৌণিক ব্যবধান থাকার কথা। এই কোণ নষ্ট হয়ে গেলে তাকে বলে ক্লাবিং। ফুসফুস ও হৃদ্যন্ত্রের নানা জটিল রোগে এ ক্লাবিং হতে দেখা যায়। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের রোগীদের হাতে কয়েক রকমের অস্বাভাবিকতা দেখা যায় যেমন, আঙুল হয়ে যায় বাঁকা। আবার বাতের নানা সমস্যায় হাতের বিভিন্ন সন্ধি ফুলে যেতে পারে। হাতের বিভিন্ন স্নায়ুর সমস্যাও বোঝা যাবে হাতের আকৃতি দেখেই।
এসব ছাড়াও ত্বকের ও সন্ধির নানা রোগ, শিশুদের ডাউনস সিনড্রোম (অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অস্বাভাবিক আকৃতি) ও নানা রকমের ক্যানসারের গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ বলে দেয় আপনার হাত। ডিন, মেডিসিন অনুষদ, বিএসএমএমইউ|
প্রসঙ্গ: জেনে নিন জীবনধারা