সিরামিক খাতে কাজের সুযোগ বাড়ছে

Author Topic: সিরামিক খাতে কাজের সুযোগ বাড়ছে  (Read 720 times)

Offline khairulsagir

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 142
  • Test
    • View Profile
দেশে এখন দ্রুত বর্ধনশীল একটি খাত সিরামিক। সিরামিক টেবিলওয়্যার, টাইলস ও স্যানিটারিওয়্যার—তিনটি শিল্পকে একত্রে সিরামিক খাত বলা হয়। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে সিরামিক পণ্যের অভ্যন্তরীণ বাজার ছিল প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার। এ খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মরত আছেন প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ। প্রতিবছর এ শিল্পের প্রসারের সঙ্গে বাড়ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ।
সিরামিকশিল্পের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ সিরামিক ওয়্যারস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিডব্লিউএমএ) হিসাব অনুযায়ী, দেশে এখন সিরামিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫০। এর মধ্যে সিরামিক টেবিলওয়্যার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ১৪টি, টাইলস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ২০টি ও স্যানিটারি উৎপাদনকারী ১৬টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে সরাসরি কর্মরত আছেন ৪০ হাজারের বেশি মানুষ।
দেশের অন্যতম সিরামিক টাইলস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গ্রেটওয়াল সিরামিক। ২০০৬ সাল থেকে নিজস্ব কারখানায় উৎপাদিত টাইলস দেশের বাজারে বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। সিরামিক খাতে চাকরির বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সামছুল হুদা জানান, উচ্চশিক্ষিত তরুণদের কাজের প্রচুর সুযোগ রয়েছে এ খাতে। উৎপাদননির্ভর শিল্প হিসেবে কারখানা পরিচালনার জন্য প্রকৌশলী, ব্যবস্থাপক, সিরামিস্ট, কেমিস্ট, গ্রাফিক ডিজাইনার, আইটি খাতের কাজ জানেন—এমন লোকদের কাজের সুযোগ আছে। পাশাপাশি বিপণনে দক্ষ লোকের ভালো চাহিদা আছে।
গ্রেটওয়ালে কাজের পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সামছুল হুদা বলেন, ‘আমরা সব সময় নতুনদের কাজের সুযোগ করে দিয়ে আসছি। শুরু থেকে কাজ করছেন এমন অনেকেই এখন আমাদের এখানে নীতিনির্ধারণী পদে কাজ করছেন।’ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পড়া একজন তরুণের বেতন ও সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে তিনি জানান, এ পর্যায়ের একজন তরুণ ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন। প্রকৌশল ও সিরামিক বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের বেতন দক্ষতা অনুযায়ী আরও বেশি হয়।
আরএকে সিরামিকের মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান জানান, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরএকে সিরামিকসে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক কাজের প্রচুর চাহিদা আছে। পাশাপাশি কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থাপনা, নকশা, বিপণন, সিরামিস্ট পদেও কাজের সুযোগ আছে। নির্বাহী পদে ২০ হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ শুরু করতে হয়। অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বাড়ার সঙ্গে কর্মীদের বেতন-ভাতা, পরিবহন, আবাসনসহ অন্যান্য সুবিধা প্রতিষ্ঠান বহন করে বলে জানালেন তিনি।
সিরামিকের কারখানা গুলোতে আছে নানা কাজের সুযোগ। গাজীপুরের শ্রীপুরে গ্রেট ওয়ালের কারখানা থেকে ছবি তুলেছেন মাসুদ রানাকাজের বড় ক্ষেত্র আছে সিরামিক পণ্য উৎপাদনের প্রতিষ্ঠানগুলোতেও। মুন্নু সিরামিকের ভাইস চেয়ারম্যান মইনুল ইসলাম বলেন, ১৯৮৪ সাল থেকে দেশের সিরামিকশিল্পে কর্মসংস্থান তৈরিতে কাজ করা হচ্ছে। মুন্নুর কারখানায় এখন দুই হাজার শ্রমিক কাজ করেন। কর্মকর্তা পর্যায়ে কর্মরত আছেন ১৬০ জন। দক্ষ শ্রমিকদের বেতন ৩৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে আরও বেশি হয়ে থাকে। আর কর্মকর্তা পর্যায়ে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকার বেশি পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। এ ছাড়া পরিবারের চিকিৎসা, সঞ্চয়, বিমাসুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা কর্মকর্তারা পেয়ে থাকেন।
ফার সিরামিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইরফান উদ্দিন বলেন, ‘কাজের প্রচুর সুযোগ আছে সিরামিকশিল্পে। রপ্তানিমুখী শিল্প হিসেবে বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ, করপোরেট পর্যায়ে সম্পর্ক, আবার দেশের বাজারে বিপণন করতে পারে—এমন লোকদের আমরা নিয়ে থাকি। এ ছাড়া অফিস ব্যবস্থাপনা, অর্থ ও হিসাব নিয়ন্ত্রণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তির কাজে পারদর্শী অনেক লোক আমাদের প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন।’ নিজের প্রতিষ্ঠানের হিসাব দিয়ে তিনি জানান, তাঁদের কারখানায় শ্রমিকের সংখ্যা দেড় হাজার। তাঁদের দেখভালের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তা আছেন প্রায় ৩০০।সিরামিক খাতে কমবেশি সরাসরি কর্মসংস্থানের ২০ শতাংশ কর্মকর্তা পর্যায়ের চাকরির সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় আট হাজার। প্রতিবছরই উৎপাদনক্ষমতা ও বিনিয়োগ বাড়ার পাশাপাশি গড়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ নতুন চাকরি তৈরি হচ্ছে এ খাতে। সে হিসাবে বছরে কর্মকর্তা পর্যায়ে কমপক্ষে ৪০০ নতুন চাকরি তৈরি হচ্ছে।
উদ্যোক্তারা জানান, চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। এ জন্য অনেক সময় চীন, ভারত থেকে লোক এনে কারখানা
চালাতে হয়।






Source: www.prothom-alo.com