ত্বক নিয়ে আমরা কমবেশি সকলেই খুব চিন্তিত থাকি। কারণ মানুষের সৌন্দর্য প্রকাশ পেয়ে থাকে মুখের ত্বকের মাধ্যমেই। আপনি হয়তো মনে করতে পারেন যে ত্বকের বয়স কী আর এমন কারণে বৃদ্ধি পাবে! যদি বৃদ্ধি পেয়েই থাকে তাহলে তা হল ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার না করা, ঠিক ভাবে না ঘুমানো, ধূমপান করা ইত্যাদি কারণে হয়তো ত্বক নষ্ট হয় ও দেখতেও প্রাণহীন লাগে। এই যদি আপনার ধারণা হয়ে থাকে তাহলে হবে মারাত্মক ভুল, কারণ আপনি হয়তো ত্বকের বয়স অকালেই বৃদ্ধি পাওয়ার বিস্ময়কর কারণগুলো জানেন না। নিউ ইয়র্ক সিটির ‘মাউন্ট সিনাই হসপিটাল’ এর একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ‘জোশ জিকনার’ ত্বকের ওপর বিশেষ গবেষণা করে বলেছেন, আমরা প্রতিদিন এমন কিছু কাজ করে থাকি যার জন্য আমাদের ত্বকে সমস্যা দেখা দেয় ও অকালেই ত্বকের বয়স বৃদ্ধি পায়।। চলুন তাহলে জেনে নিই সেই বিচিত্র কারণগুলো।
বার বার মুখ পরিষ্কার করা:
মুখ পরিষ্কার রাখার জন্য অবশ্যই মুখ ধোয়া উচিত কিন্তু তা প্রতিদিন ২ বার ও ত্বকের ধরন অনুযায়ী একটি ভাল ক্লিনজার দিয়ে। তবে একটি কথা মনে রাখা ভাল তা হল আপনি ক্লিনজারটি ব্যবহার করছেন তা যে সব সময় আপনার ত্বকের সাথে মানিয়ে যা তা কিন্তু না। মাঝে মাঝে ত্বকের ধরন অনুযায়ী অন্য কোন ব্র্যান্ডের ক্লিনজারও ব্যবহার করুন।
স্ট্র দিয়ে কোনকিছু পান করা:
আমরা অনেকেই আছি যারা বিশেষ করে কোমল পানীয় পান করে থাকি স্ট্র দিয়ে। কিন্তু আপনি কি জানেন এই স্ট্র দিয়ে পানীয় পান করার ফলে আপনার ঠোঁট যেই আকার ধারণ করে তার মাধ্যমে আপনার ঠোঁটের চারপাশের চামড়া সংকোচিত হয়ে যায় যৌবনকালে বোঝা যায়না যখন ধীরে ধীরে বয়স বৃদ্ধি পায় ও আপনার ত্বক যখন দুর্বল থাকে তখন তা স্পষ্ট হয়।
ওজন কমে গেলে:
আমরা সবাই শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে একটু বেশি চিন্তিত থাকি। তাই যখন আমাদের ওজন কমে যায় তখন ওজন কমার সাথে সাথে আমাদের ত্বকেরও নমনীয়তা কমে যায়। তখন চেহারা প্রানহীন হয়ে যায় ও দেখতেও কিছুটা বয়স্ক লাগে।
বাৎসরিক চক্ষু পরীক্ষা এড়িয়ে যাওয়া:
আমাদের সকলেরই উচিত প্রতিবছর অন্তত একবার চোখের ডাক্তার দেখানো। কারণ আমাদের চোখের চারপাশের ত্বক থাকে অনেক বেশি নরম তাই খুব সহজেই অযত্নের কারণে অল্প বয়সেই চোখের আশেপাশে দেখা দেয় চামড়ার ভাঁজ
চোখে কনটেক্ট লেন্স পরা:
অনেকেই চোখে খুব ঘন ঘন লেন্স পরে থাকেন। কিন্তু লেন্স পরাতে কোন সমস্যা নেই তবে বার বার লেন্স না পরাই ভাল। আসল সমস্যা হল যখন আপনি লেন্স পরেন ও চোখ থেকে লেন্স বের করেন। কারণ চোখের চারপাশের ত্বক অনেক সেনসেটিভ থাকে, হাত দিয়ে চোখের উপড়ে ও নিচে ধরে টান টান করে যখন চোখ বড় করে লেন্স পরা হয় তখনই চোখের আশে পাশের ত্বকে দেখা দেয় ভাঁজ।
যখন আপনি ড্রাইভিং করেন:
আপনি গাড়ির ভিতর বসে গাড়ি চালাচ্ছেন বলেই যে আপনি সূর্যের আলো থেকে নিরাপদ আছে তা মনে করাটা ভুল হবে। সূর্যের UVA লাইট আমাদের ত্বকের বয়স বাড়িয়ে দেয়ার অন্যতম কারণ যা গাড়ির সামনে ও দু’পাশের জানালা দিয়েও আপনার ত্বকে লেগে থাকে। তাই গাড়ি চালানর সময়ও এমন সানগ্লাস ব্যবহার করুন জাতে আপনার গাড়ি চালাতে সমস্যা না হয়। এবং খোলা অংশে বিশেষ করে হাতে ভাল করে সানস্ক্রিন লাগিয়ে নেয়া ভাল।
পর্যাপ্ত পরিমানে পানি খেতে ভুলে যাওয়া
পানি কম খাওয়া মানেই ত্বক শুষ্ক ও প্রাণহীন হয়ে যাওয়া। যা খুব দ্রুতই ত্বকের উজ্জলতা কমিয়ে দেয়। তাই সুন্দর ত্বকের জন্য প্রতিদিন ৮ গ্লাস পানি খেতে ভুলবেন না।
খুব বেশি পরিমানে সোডিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া:
লবনে আছে প্রচুর পরিমানে সোডিয়াম। কিন্তু আপনি হয়তো লবন খাওয়া বেদ দিতে পারবেন না কিন্তু লবন জাতীয় যাই খান না কেন খুব কম পরিমানে খান। কারণ সোডিয়ামযুক্ত খাবার আমাদের ত্বককে আদ্র রাখার উপাদান গুলো শুষে নেয় এবং এই কারণে ত্বক রুক্ষ দেখায়। তাই প্রচুর পরিমানে পানি খাওয়া উচিত।
মুখের ত্বকের ওপরে ভার দিয়ে ঘুমানো:
আমরা অনেকেই বাম ও ডান পাশ হয়ে এমনভাবে ঘুমাই তখন মুখের ত্বকের একপাশ পুরো ঢেকে থাকে তখন ত্বকের লোমকূপ গুলো নিঃশ্বাস নিতে পারেন না ত্বকে দেখা দেয় বলিরেখা।
কফি পান করা:
কফি খেতে অনেকেই ভালোবাসেন। কারণ কফি যেমন আমাদের সতেজ রাখে তেমনি আমাদের দেহে নানা ভাবে উপকারও করে থাকে কিন্তু প্রতিদিন ২ কাপের বেশি কফি পান করলে আপনার ত্বকে দেখা দিতে পারে বলিরেখা ও ত্বকও শুষ্ক হয়ে যায়। তাই কফি খাওয়ার কিছুক্ষণ পরে পানি খেয়ে নিন এক গ্লাস।
সূত্র: প্রিয় লাইফ